সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    ঘরে, ছাদে মাশরুম চাষ : ঘরে বসে আয়

    Image result for মাশরুম চাষ
    যেকোনো সমান জায়গায় কম আলোয় মাশরুম চাষ করা যায়। বীজ বোনার পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই ফলন। আট থেকে দশ হাজার বীজ থেকে দৈনিক ১৫-১৮ কেজি মাশরুম পাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম কাঁচা মাশরুম ২০-২৬ টাকা, শুকনা ১৭০-১৮৫ টাকা এবং গুঁড়া ১৭০-১৮৫ টাকা বিক্রি করা যায়। তাই বাড়তি আয়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে পারেন মাশরুম চাষ। বিস্তারিত জানাচ্ছেন ফরহাদ হোসেন একসময় মাশরুমকে ব্যাঙের ছাতা বলে কত হাসাহাসিই না করেছি আমরা। সেই মাশরুম আজ হয়ে গেছে অর্থকরী সবজি। মাশরুম হলো একধরনের ছত্রাক। পৃথিবীর সর্বত্র এই ছত্রাক সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। গ্রিক, রোমান ও চীনারা মাশরুমকে দেবতার খাবার হিসেবে মনে করেন। প্রাচীন দেব-দেবীদের এটি দিয়ে পুজো দেওয়া হতো। এমনকি রাজা-মহারাজাদেরও মাশরুম উপহার হিসেবে পাঠানো হতো। যেকোনো সবজির চেয়ে এর খাদ্যগুণ বেশি। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। সুস্বাদু এই খাবারের স্বাদ অনেকটা মাংসের মতো। মাশরুম দাঁত ও হাড়ের গঠনে বিশেষ উপযোগী। রক্তহীনতা, বেরিবেরি ও হূদরোগ প্রতিরোধে এবং বহুমূত্র রোগে বিশেষ কার্যকরী। প্রায় তিন লাখ ছত্রাকের মধ্য থেকে মাত্র ১০ প্রজাতির ছত্রাক খাওয়ার উপযোগী।
    মাশরুম চাষ কিভাবে করা যায়, চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কিনা, এক বিঘা জমির উৎপাদন খরচ, এর পুষ্টিমান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কিভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
    ‘‘মাশরুম” ব্যাঙের ছাতার মতো এক ধরণের ছত্রাক জাতীয় গাছ। মাশরুম ও ব্যাঙের ছাতা দেখতে একই রকম হলেও এদের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া কোন কোন মাশরুম বিষাক্ত হয় এবং সেগুলো খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোয় প্রাকৃতিকভাবে খুব বেশি মাশরুম জন্মাতে পারে না তাই প্রাকৃতিক উপায়ে খাবারের জন্য বেশি করে মাশরুম পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে অনেক স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষকরা মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে ঢাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মধুপুর প্রভৃতি স্থানে এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাশরুম চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে। মাশরুম চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। মাশরুম চাষ করতে আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না।
    বাজার সম্ভাবনা
    আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। মাশরুম শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিদেশে সবজি ও কাঁচামাল পাঠায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
    প্রয়োজনীয় মূলধন
    মাশরুম চাষ করার জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পূঁজি না থাকে তাহলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকট আত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।
    আয়-ব্যয় ও লাভের হিসাব
    অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাশরুমের দাম প্রায় ১২০ টাকা।
    ৪০ কেজির দাম
    ৪৮০০ টাকা।
    কাঁচামাল ও অন্যান্য খরচ প্রায়
    ২৫০০ টাকা।
    সুতরাং ৪০ কেজি মাশরুম বিক্রয় করে লাভ প্রায় ২৩০০ টাকা।
    প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান
    স্থায়ী উপকরণ
    উপকরণপরিমাণআনুমানিক মূল্য (টাকাপ্রাপ্তিস্থান
    গামলা১টা৬০-৮০থালা-বাটির দোকান
    ছোট চা-চামচ১টা১০-১৫থালা-বাটির দোকান
    ব্লেড১টা২-৫মুদি দোকান
    ছুরি১টা২০-৩০থালা-বাটির দোকান
    পলিপ্রোপাইল ব্যাগ১০টা২০-৩০মুদি দোকান
    মোট খরচ=১১২১৬০ টাকা
    কাঁচামাল
    উপকরণপরিমাণআনুমানিক মূল্য (টাকাপ্রাপ্তিস্থান
    মাশরুম বীজ বা স্পন২০০ টা বা ১০০ কেজি২০০০ঢাকা জেলার সাভার
    যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ৫০০
    মোট খরচ=২৫০০ টাকা
    Image result for মাশরুম চাষ
     মাশরুমের উপকারিতা
    মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর। এর উপকারিতাসমূহ হল-
    • রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
    • মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।
    • রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
    • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
    খাবারের উপযোগী মাশরুম
    আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় –
    • স্ট্র মাশরুম : ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।
    • ইয়ার মাশরুম: সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।
    • অয়েস্টার মাশরুম: আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।
    মাশরুম উৎপাদন কৌশল
    চাষের উপযোগী স্থান
    মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।
    অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
    অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।
    ১ম পদ্ধতি
    • মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
    • মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
    • অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
    • সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
    • খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
    • বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
    • একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।
    ২য় পদ্ধতি
    • মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
    • দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
    • পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
    • খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
    • পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
    • খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
    • পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
    • ১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
    • প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
    • ৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
    • এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।
    সাবধানতা
    • বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
    • মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
    • কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
    প্রশিক্ষণ
    সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ঢাকা জেলার সাভারে অবস্থিত ‘মাশরুম চাষ কেন্দ্র’ আছে। এছাড়া বাংলাদেশের নানা স্থানে “মাশরুম চাষ কেন্দ্রের” ১৬টি শাখা আছে। মাশরুম চাষ করে ব্যবসা করার জন্য এসব মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে নেওয়া যাবে। এছাড়া মাশরুম চাষ সম্পর্কে বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ার মাধ্যমেও মাশরুম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে মাশরুম চাষের বিস্তারিত জেনে নিলে চাষ করতে সুবিধা হবে এবং উন্নতমানের মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে।
    প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা:
    ব্রাকঃ http://www.brac.net/
    যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরঃ www.dyd.gov.bd
    বিসিকঃ http://www.bscic.gov.bd/
    মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরঃ http://www.dwa.gov.bd/
    মাশরুম মূল্যবান সবজি। বিদেশে এর যথেষ্ট চাহিদা আছে। মাশরুমের পুষ্টি ও ঔষধি গুণের কথা বলে সাধারণ মানুষকে মাশরুম খাওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। তাহলে সাধারণ বাজারেও এর চাহিদা বাড়বে। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য ঘাটতি আছে, মাশরুম কিছুটা হলেও তা পূরণ করতে পারে।
    কিছু উল্লেখযোগ্য কেস স্টাডি
    নারীদের কর্মসংস্থান হতে পারে মাশরুম
    http://www.public-post.com/wp-content/uploads/2011/06/women-cultivating-mushroom-Bangladesh.jpg
    এবার শিরোনাম প্রসঙ্গে আসা যাক। মানে কিভাবে নারীরা মাশরুম চাষ করে আয় করতে পারে এবং সাবলম্বি হতে পারে সে প্রসঙ্গ। উপরের আলোচনা থেকেই জানা গেছে যে মাশরুম চাষ খুবই সহজ একটি পদ্ধতিতে করা যায়। জায়গা কম লাগে এবং মাত্র আনুমানিক ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই মাশরুম চাষ শুরু করা যেতে পারে। তবে ব্যবসা শুরুর আগে এ women-cultivating-mushroom-Bangladesh বিষয়ে অবশ্যয় প্রতিক্ষন নিতে হবে। নারীদের জন্য সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে প্রশিক্ষন প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। গ্রামের বেশিরভাগ নারীই গ্রিহিনী কেউ কেউ হয়ত হস্তশিল্প বা এ জাতীয় কিছু কাজের সাথে জড়িত। এসব বেকার নারীরা খুব সহজেই মাত্র কিছু দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে মাশরুম চাষের ব্যবসা শুরু করতে পারে।
    পুঁজি যখন এক লাখ
    সাধারণত ১৬ ফুট বাই ৩২ ফুট এবং ১০ ফুট উচ্চতার ঘরে সমতলে ছয়টি মাচা বা তাক (১ ফুট অন্তর অন্তর) তৈরি করত হবে। ৪ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩ ফুট প্রস্থের একটি তাকে ৮০০-১০০০ বীজ চাষ করা যায়। চাষের জন্য বীজ পাওয়া যাবে পুরনো চাষিদের কাছে এবং সাভারে সোবহানবাগের মাশরুম উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পে। বিভিন্ন জাতের মাশরুমের জন্য বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার প্রয়োজন। বাংলাদেশে গ্রীষ্ম এবং বর্ষায় ‘স্ট্র মাশরুম’ এবং শীতকালে ‘ওয়েস্টার’ জাতের মাশরুম চাষ উপযোগী। তা ছাড়া মিল্কী মাশরুমও চাষ করা যায়। মাশরুম চাষের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ২০-৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে ছনের চালা বা টিনের ঘরে সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ঘরটি গাছের নিচে হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। আর তাক তৈরির সময় যাতায়াত, পরিচর্যা ও সংরক্ষণের জন্য নূ্যনতম জায়গা রাখতে হবে। বীজের পরিচর্যা, ফলন তোলা ও সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রকারের উপকরণের প্রয়োজন হবে।
    কম সময়ে দ্রুত ফলন
    প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক সব ঠিক করে বীজ আনার পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে প্রথম ফলন পাওয়া যাবে। একটি বীজ থেকে তিন-চার দিন অন্তর অন্তর ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি বীজ থেকে দু-তিন মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এভাবে প্রাথমিক অবস্থায় আট থেকে দশ হাজার বীজ থেকে দৈনিক ১৫-১৮ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। তবে বীজ পুরনো হলে ধীরে ধীরে ফলন কমতে থাকে। তখন নতুন বীজ সংযোজন করলে আবার ফলন বেড়ে যায়।
    যেখানে বিক্রি করবেন
    বিভিন্ন চেইন শপে (যেমন আগোরা, নন্দন, স্বপ্ন, মিনাবাজার) মাশরুম সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। উত্পাদনকারীরা প্যাকেটজাত করে সরাসরি চেইন শপগুলোতে পাইকারি দরে সরবরাহ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন চায়নিজ রেস্তোরা, ফাস্টফুড খাবারের দোকান এবং রাস্তার ধারে মুখরোচক বিভিন্ন খাবারের দোকানে মাশরুম বিক্রি করা যায়। অনেক ক্রেতা সরাসরি খামারে এসেও মাশরুম কেনেন। তিনভাবে মাশরুম বিক্রি হয়- ফ্রেশ বা কাঁচা মাশরুম, শুকনা মাশরুম এবং পাউডার মাশরুম। কাঁচা মাশরুম ১০০ গ্রাম প্যাকেট হিসেবে ২০-২৬ টাকা, শুকনা ১০০ গ্রাম ১৭০-১৮৫ টাকা এবং পাউডার ১০০ গ্রাম হিসেবে ১৭০-১৮৫ টাকায় বিক্রি হয়।
    ঝুঁকি
    সঠিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করতে না পারলে ঝুঁকির পরিমাণ বেড়ে যায়। সঠিক তাপমাত্রার অভাব ছাড়াও বিভিন্ন পোকামাকড় যেমন- তেলাপোকা, মাছি, ইঁদুর, মাকড়সা ইত্যাদি আক্রমণের শঙ্কা আছে। এসব ক্ষতিকর পোকামাকড়কে সঠিক পদ্ধতিতে প্রতিকার করতে হবে।প্রশিক্ষণ সরকারিভাবে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাশরুম চাষের জন্য বিভিন্ন কারিগরি সহায়তা করে থাকে। আর প্রশিক্ষণের জন্য বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এবং খামার তো রয়েছেই। যোগাযোগ মাশরুম উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্প জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয় সোবহানবাগ, সাভার, ঢাকা। ফোন-০২-৭৭৪২৪৯৬, ০২-৭৭১০৬৪৬
    বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়
    সালেহ আহম্মদ
    প্রকল্প পরিচালক, মাশরুম উন্নয়ন জোরদার প্রকল্প জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র মাশরুম চাষের ওপর আমরা নিয়মিতই তিন থেকে পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা করছি। পুরনো উদ্যোক্তা, নতুন উদ্যোক্তা, খামারিদের এসব প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আর সবগুলো প্রশিক্ষণই বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। আগ্রহী যে কেউ এসব প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেন। সাভার ছাড়াও বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে আমাদের আরো ১৬টি প্রশিক্ষণকেন্দ্র রয়েছে। সারা বছরের মধ্যে শীতকালে মাশরুমের ভালো ফলন হয়। ১০০ গ্রাম মাশরুমের উত্পাদন খরচ যেখানে মাত্র ২০ টাকা, সেখানে বিক্রয় মূল্য ১১০ টাকা। তাই বাড়তি আয়ের জন্য যে কেউ এ পেশায় আসতে পারেন।
    মাশরুম চাষিরা বলেন, অল্প পুঁজি ও কম বিনিয়োগ করে মাশরুম চাষে বেশি লাভ করা যায়। বাড়ির আশপাশে সামান্য জায়গা ব্যবহার করে মাশরুম চাষ করা যায়। এটা চাষের জন্য আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য। ঘরের তাক বা যেকোনো সমান জায়গায় কম আলোয় মাশরুম চাষ করা যায়। বীজ বোনার পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়। আট থেকে দশ হাজার বীজ থেকে দৈনিক ১৫-১৮ কেজি মাশরুম পাওয়া যায়।
    ১০০ গ্রাম কাঁচা মাশরুম ২০-২৬ টাকা, শুকনা ১৭০-১৮৫ টাকা এবং গুঁড়া ১৭০-১৮৫ টাকা বিক্রি করা যায়। তাই বাড়তি আয়ের মাধ্যম হিসেবে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে মাশরুম চাষ। অন্যান্য সবজির তুলনায় বাজারে এর দাম অনেক বেশি।
    আমাদের দেশে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে ‘স্ট্র মাশরুম’ এবং শীতকালে ‘ওয়েস্টার’ জাতের মাশরুম চাষ উপযোগী।
    মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোখলেছুর রহমান জানান, মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি। বিদেশে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মাগুরা থেকে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি হবে এটা অত্যন্ত আশার কথা।

    মাশরুম চাষ, মাশরুম চাষ,ছাদে ঘরে মাশরুম চাষ,মাশরুম চাষ পদ্ধতি, সহজে মাশরুম চাষ, সহজে মাশরুম চাষ পদ্ধতি,ছাদে ঘরে মাশরুম চাষ পদ্ধতি, কম খরচে মাশরুম চাষ, দ্রুত মাশরুম চাষ, মাশরুম চাষ পদ্ধতির রহস্য, মাশরুম চাষ ইতিহাস, ছদে বা ঘরে মাশরুম চাষ পদ্ধতি, রক মেলন,রক মেলন ফল, রক মেলন ফল চাষ,রক মেলন ফল চাষ পদ্ধতি, রক মেলন বীজ, rockmelon, rockmelon fruit, rockmelon fruit cultivation, Earn bitcoin, bitcoin, dollar, earn bit coin with browse, bit coin earning, free bitcoin, get free bit coin, online bit con, bit coin earning, bit coin, bit coin, bit coin,money tree, money, online money, get online money, online get free money, online free, online money free, online fee money, money free, free online money, online free dollar, online free dollar, online dollar free, free online dollar, dollar earning, PTC, GTC, PTC Earning, online pct site, online gtc, online ptc site, rock melon,rock melon fruit, rock melon fruit cultivation,rockmelon bd,rockmelon fruit bd, rockmelon fruit cultivation bd, rockmelon Seed, rock melon Seed, rock melon Seed bd

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !