পাখি পালন, শখের পাখি থেকে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন
অাসুন জানি এক সফল পাখি পালকের গল্প-
এক সময় শখের বশে বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানোরও একটা কারণ ছিল তার। কারণটি হলো পাখি শিকার করা।
গাছে গাছে বাগানে বাগানে ঘুরে ঘুরে পাখি ও পাখির বাচ্চা ধরে এনে পালন করা ছিল তার নেশা। এই নেশা থেকেই বর্তমানে পাখি পালন করা এখন তার পেশায় পরিণত হয়েছে।
বলা হচ্ছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের আংদিয়া গ্রামের টুটুল সেনের কথা। তার বাবার নাম ভোলানাথ সেন ও মায়ের নাম আল্পনা রানী সেন।
লেখাপড়ায় বেশিদূর এগুতে পারেননি টুটুল, সংসারের কাজ কর্মেও তেমন মন ছিলো না তার। পাখি পালনের নেশায় মাধ্যমিক পাশ করেই থমকে যায় তার লেখাপড়া। পরবর্তীতে তিনি ঠিক করেন পাখি পালনকেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেবেন।
তারপর দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাতের পাখি নিয়ে ছোট আকারে পাখি পালনের জন্য নিজের বাড়িতেই একটি খামার গড়ে তোলেন।
বর্তমানে সেই খামার বাণিজ্যিক খামারে পরিণত করেছেন টুটুল। এখন তার খামারে দেশি বিদেশি নানা জাতের পাখি রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টুটুল সেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শখের বশে পাখি পালন করা শুরু করি আমি। ২০১৩ সাল থেকে শখের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন শুরু করি। প্রথমে আমি পাঁচ জোড়া বাজরিকা এবং এক জোড়া পকাটেল পাখি নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করি। বর্তমানে আমার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির দুইশ এর অধিক পাখি রয়েছে। যার মূল্য তিন লাখ টাকার অধিক।’
তিনি জানান, বর্তমানে এই পাখি পালন করে তিনি সংসার চালাচ্ছেন। এখান থেকে তার প্রতি মাসে আনুমানিক ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা আয় হয়।
পাখি পালনের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাখি পালন একটি সৌখিন কাজ। পাখিকে ভালোমত যত্ন না করলে লাভবান হওয়া যায় না। পাখিদের দৈনিক ২-৩ ঘণ্টা পরিচর্যার দরকার হয়। পাখিদের একদিন পর পর খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় এবং প্রতিদিন পাখির বিষ্ঠা পরিষ্কার করতে হয়।
‘এসব পাখির খাবার এই অঞ্চলে পাওয়া যায় না। এজন্য দেশের ভিন্ন স্থান যেমন, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রভৃতি জেলা থেকে পাখির খাবার সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে এখান থেকে কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা পাখি কিনতে আসেন।
‘আমার এ খামারে বর্তমানে বাজরিকা, বাজিগার, লাভ বার্ড, প্রিন্স, পকাটেল, কাকাতুয়া, ডাইমন্ড ডাবসহ দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে।’
টুটুল সেনের স্ত্রী বীনা সেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘প্রথম প্রথম পাখি পালনকে আমি পছন্দ করতাম না। তারপরে আমি দেখলাম যে পাখি পালন বেশ লাভজনক। তাই আমি আমার স্বামীর সঙ্গে মিলে পাখি পালন করছি।’
দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আল মামুন রাইজিংবিডিকে জানান, সমাজে অনেক বেকার আছে। যারা বেকারত্বের দোহায় দিয়ে বাড়ি বসে থাকে। কিন্তু টুটুল পাখি পালন করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছে। সে সমাজের একটি বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
সূত্র- ajkerkrishi.com
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.