সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    আওয়ামী লীগের ‘গর্ভগৃহ’ রোজ গার্ডেন নজর কাড়বে কলকাতা বইমেলায়



    বাড়িটার সর্বশেষ দাম ধার্য হয়েছিল সাড়ে তিনশ কোটি টাকা৷ আইনি জটিলতা কাটিয়ে সেই টাকা দিয়ে সেই বিখ্যাত বাড়ি কিনে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷ আর সেই চোখ ধাঁধানো ভবনই এবার কলকাতা বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের থিম৷ ঐহিত্যের সোপান বেয়ে বিখ্যাত ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেন কয়েকদিনের জন্য দর্শক-পাঠকদের নজরবন্দি হয়ে থাকবে৷ ঐতিহাসিক তথ্যে মিলছে, এই বাড়ি-ই আদতে এখনকার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সূতিকাগার৷

    প্রতিবারই কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ তার নিজস্বতা নিয়ে স্বমহিমায় হাজির থাকে৷ মেলা প্রাঙ্গণের সব থেকে নজরকাড়া প্যাভিলিয়নটি তৈরি করে প্রতিবেশী রাষ্ট্র৷ আর ভাষা এক হওয়ার সুবাদে পশ্চিমবঙ্গের পাঠকরা সেই প্যাভিলয়নে হামলে পড়েন৷ সংগ্রহ করেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত বই৷ ফলে বাংলাদেশ সরকারের তৈরি এই প্যাভিলয়ন থাকে আকর্ষণের কেন্দ্রে৷ এবার নজরকাড়া গঠনশৈলী নিয়ে অপেক্ষা করছে গোলাপ বাগানের বাড়ি বা রোজ গার্ডেন ভবন৷
    পাবলিশার্স অ্যান্ড গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশ দিবস অনুষ্ঠিত হবে বইমেলার শেষের আগের দিন অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি। সেদিন বাংলাদেশ থেকে চারজন বিশিষ্ট লেখক আসবেন। আমরা এবার অতিথি হিসেবে পেতে চলেছি ঢাকা ‘বাংলা একাডেমী’র মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীকে। রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে আসবেন বিখ্যাত গায়িকা রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

    ইতিহাসের খনি বিখ্যাত রোজ গার্ডেন


    শুরুর দিনের কথা: তখনও অবিভক্ত ভারত৷ ঢাকার নামজাদা ব্যবসায়ী ঋষিকেশ দাস পুরান ঢাকায় ২২ বিঘা জমির উপর একটি বাগানবাড়ি তৈরি করেন। বাগানে প্রচুর গোলাপ গাছ থাকায় এর নাম হয় ‘রোজ গার্ডেন’। ২২ একর জমিতে তৈরি এই ভবনটি এখনও সমান বিস্ময় তৈরি করে৷ এরপর ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হয়৷ আর পূর্ব পাকিস্তান হয় পাক রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্র৷
    রাজনীতির কেন্দ্র: পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দু’বছরের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই ভবনেই যাত্রা শুরু হয় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগের৷ ১৯৫৫ সালে দলটিকে ধর্মনিরপেক্ষ রূপ দিতে মুসলিম শব্দটি ছেঁটে ফেলে দেন মৌলানা ভাসানীর নেতৃত্বে বাকিরা৷ তৈরি হয় আওয়ামী লীগ। এবং এই দলটির নেতৃত্বেই পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার আন্দোলন সংঘটিত হয়৷ আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
    হাত বদলের রোজ গার্ডেন: বিলাসবহুল এই বাড়ি তৈরির পরে মালিক ঋষিকেশ দাশ দেউলিয়া হয়ে যান। ১৯৩৭ সালে রোজ গার্ডেন বিক্রি হয়ে যায় ঢাকার বিখ্যাত খান বাহাদুর আবদুর রশীদের কাছে। এর নতুন নামকরণ হয় ‘রশীদ মঞ্জিল’।১৯৬৬ সালে কাজী হুমায়ুন বসির ভবনটির মালিকানা লাভ করেন। ১৯৭০ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘বেঙ্গল স্টুডিও’কে ইজারা দেয়া হয়। এ সময়ে চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট হিসাবে এই ভবনটি ব্যবহৃত হয়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই ভবনের সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়৷
    অবশেষে সরকারি সম্পত্তি:
    পরে নানা আইনি বাধা কাটিয়ে বাংলাদেশ সরকার এই বাড়ি কিনে নিতে উদ্যোগী হয়৷ ততদিনে এর দাম ৩০০ কোটি পার করেছে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ইচ্ছায় ইতিহাসকে ধরে রাখতে অবশেষে সরকার বাড়িটি কিনে নিয়েছে৷ বিখ্যাত রোজ গার্ডেন এখন বাংলাদেশ সরকারের সম্পত্তি৷ বাড়ি কেনার সময় শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন, ‘এই ঐতিহাসিক ভবনটি যথাযথভাবে সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন স্থাপনা নষ্ট হতে দেয়া যায় না।’

    সূত্র- কলকাতা ২৪

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !