নিজের কুৎসিত মুখ ঢাকতে হেবরন থেকে পর্যবেক্ষক সরাচ্ছে ইসরাইল
হেবরনে বসবাস করা ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ করে বলেছেন, পশ্চিমতীরের এই স্পর্শকাতর শহরটিতে নিজের কর্মকাণ্ডের কোনো সাক্ষী না রাখতে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের এখান থেকে বের করে দিতে চায় ইসরাইল।অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেন এ পর্যবেক্ষকরা।
সোমবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, হেবরনে অস্থায়ী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতির (টিআইপিএইচ) ম্যান্ডেন্ট নবায়ন করা হবে না। পর্যবেক্ষকদের বিরুদ্ধে তিনি ইসরাইলবিরোধী তৎপরতার অভিযোগ তুলেছেন।গত ২২ বছর ধরে হেবরনে বহু দেশীয় পর্যবেক্ষক মিশনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে নরওয়ে। দেশটি জানায়, ইসরাইলের একপাক্ষিক সিদ্ধান্তের অর্থ দাঁড়ায়, অসলো চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের বাস্তবায়ন রহিত হয়ে যাওয়া।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরিকসেন সোরেইড এক বিবৃতিতে বলেন, হেবরনের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। সংঘাত দিয়ে শহরটির উত্তপ্ত অবস্থা নির্ধারণ করা যায়। কাজেই এখান থেকে পর্যবেক্ষণ সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হতাশাজনক।ফিলিস্তিনের শহর হেবরনে দুই লাখ মানুষের বসবাস। এ ছাড়া এখানে হাজারখানেক অবৈধ ইহুদি বসতি রয়েছে। এসব দখলদারদের নিরাপত্তার জন্য শহরটিতে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি রয়েছে ইসরাইলের।১৯৯৪ সালে হেবরনের একটি ধর্মীয় পবিত্র স্থানে ২৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে এক ইহুদি দখলদার। এর পর থেকেই সেখানে টিআইপিএইচ মোতায়েন করা হয়েছে।
১৯৯৮ সালে স্বশাসিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির পর হেবরন থেকে নিজেদের আংশিক প্রত্যাহার করে নিয়ে যায় ইসরাইল। এর পর থেকে সেখানে চুক্তির কিংবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করছে টিআইপিএইচ।
হেবরনের এক ফিলিস্তিনি বাসিন্দা আরেফ জাবের বলেন, হেবরনে দখলদারদের হামলা বাড়ছে। স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক ছিল টিআইপিএইচ। তারা সকাল ও বিকালে শহরে টহল দিতেন। আর এ সময়টিতেই শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতেন ও ফিরতেন।ইসরাইলের এ সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করেছে জাতিসংঘ।
জাতসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, টিআইপিএইচ জাতিসংঘের কোনো সংস্থা না হলেও তারা অস্থিতিশীল শহরটিতে উত্তেজনা কমাতে ইতিবাচক অবদান রেখে আসছে। কারণ শহরটি স্পর্শকাতর বলে স্বীকৃত।তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ইতালি ও নরওয়ে থেকে কর্মী নিয়ে টিআইপিএইচ গঠিত হয়েছে। হেবরনে তাদের ৬৪ আন্তর্জাতিক কর্মী রয়েছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি তাদের অবস্থানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ইসরাইল।
হেবরনের ওল্ডসিটির সিরামিক ব্যবসায়ী বাদার দাওর বলেন, টিআইপিএইচ ছিল বিশ্বের কাছে আমাদের জানালা। এটি দিয়ে ইসরাইলি দখলদারদের কুৎসিত মুখ দেখা যেত। এ বাহিনীর উপস্থিতি ইসরাইলের জন্য বিরক্তিকর ছিল।তবে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অবৈধ দখলদার ইহুদিরা। টিআইপিএইচ তাদের হয়রানি করতো বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
সূত্র- রয়টার্স
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.