খুলনায় আফ্রিকান শিশুরা শিখছে বাংলা!
কেয়ারা (৬) ও কেশন (৫) ছোট্ট শিশু দুটি জন্মসূত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। তাদের বাবা বাঙালি আর মা আফ্রিকান। বাংলা ভাষা শিখতে শিশু দু’টি ভর্তি হয়েছে খুলনা শহরের মেহমানে আলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অন্য শিশুদের সাথেই তারা শিখছে-‘অ’ তে অজগর, ‘আ’ তে আম। আফ্রিকান ভাষার পাশাপাশি ছোট্ট ছোট্ট শব্দে ইংরেজি বলতে পারে শিশু দু’টি। আর এ কারণেই কেয়ারা ও কেশনকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিএম শফিউর রহমান জানান, এ মাসের শুরুতে শিশু দু’টিকে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তি করেছেন তাদের বাবা-মা। তারা শ্রেণিকক্ষে তেমন বাংলা বলতে পারে না, তবে দ্রুত শিখছে। অন্য শিশুদের সাথে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
স্কুলের অভিভাবকরা এটাকে নিয়েছেন ইতিবাচক হিসেবে। তারা আগ্রহের সাথে ইংরেজি ও বাংলায় শিশু দু’টি ও তাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলছেন। অভিভাবকরা জানান, শিশু দু’টিকে ঘিরে স্কুলে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বাঙালি শিশুরা যেমন ইংরেজি শিখছে, তেমনি বাঙালি শিশুদের কাছ থেকে তারা বাংলা শিখছে। শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনার পাশাপাশি আফ্রিকান শিশুরা বাঙালি শিশুদের সাথে খেলাধুলায় অংশ নিচ্ছে। শিশুদের মধ্যে চমৎকার পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরি করেছে।
অভিভাবকরা উৎসাহ নিয়েই শিশু দু’টির মায়ের সাথে এ দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি-পরিবেশ, খাদ্য ও জীবন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছেন। একই সাথে তারা আফ্রিকান জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইছেন। অভিভাবকরা জানান, আফ্রিকান পরিবারটি খুবই ভালো। তারা মাছ পছন্দ করে না, সবজি ও গরুর মাংশ পছন্দ করে।
জানা যায়, কেয়ারা ও কেশনের বাবা সাকিল হোসেন খুলনা মহানগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি আফ্রিকার একটি বড় সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় আফ্রিকান নাগরিক কেপটাউনের বাসিন্দা রোকাইয়ার সাথে। রোকাইয়া ভালো ইংরেজি বলতে পারেন। একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয় ও শিশু দু’টির জন্ম হয়।
বাংলা ও ইংরেজিতে মিশিয়ে রোকাইয়া জানান, গত নভেম্বরে তারা বাংলাদেশে এসেছেন। এখানে স্বামী ও তার পরিবারের সাথে থাকতে তাদের ভালো লাগছে। এদিকে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে এসে রোকাইয়া শ্বশুর-শাশুড়িকে অসুস্থ দেখে এখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এখানে থাকতেই তারা বাংলা ভাষা শিখতে চাইছেন।
মায়ের পাশাপাশি শিশু দু’টি স্কুলে আসতে তাদের ভালোলাগার কথা জানায়। সদর থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আফ্রিকান পরিবারটি বিভিন্ন স্কুলের লেখাপড়ার মান যাচাই করে তাদের সন্তানকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য উৎসাহজনক। একই সাথে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য এটা মাইলফলক।
সূত্র- ইন্টারনেট
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.