ভুয়া ভার্সিটিতে ভুয়া শিক্ষার্থী সাজিয়ে অভিবাসন, শতাধিক ভারতীয় আটক
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ফারমিংটন বিশ্ববিদ্যালয়। যেটিকে সরকারি অনুমোদিত ব্যবসা ও স্টেম ইনস্টিটিউট হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে- সেটির উদ্ভাবনী পাঠ্যসূচি, ক্লাসের নমনীয় সময়সূচি ও বৈচিত্র্যময় শিক্ষার্থী সংগঠন আছে।
কিন্তু সত্যিকার অর্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পাঠ্যসূচি, কোনো ক্লাস ও সত্যিকার কোনো শিক্ষার্থী নেই। মার্কিন কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহে এমন তথ্যই জানিয়েছে।-খবর রয়টার্স ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের।
ডেট্রয়েটের উপকণ্ঠে এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি গোপন অভিযান চালিয়েছে। অভিবাসন জালিয়াত চক্রকে ধরতেই ছিল এ অভিযান।
কর্তৃপক্ষ এটিকে থাকার বিনিময়ে অর্থ পরিশোধ প্রকল্প হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এতে শিক্ষার্থী ভিসা মর্যাদা বহাল রাখতে বিদেশিদের ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হয়েছে। এসব প্রতারক এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০০ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করেছিল। এ ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদেরও আটক করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
তদন্তে প্রশাসনিক অভিবাসন নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ১৩০ জনকে আটকের কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ফারমিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক ও কর্মকর্তা হিসেবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনের এজেন্টদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি ভুয়া হলেও সেটির একটি সত্যিকারের ওয়েবসাইট আছে। সেখানে পড়াশোনা, পাঠ্যসূচি, টিউশন ফি ও যোগাযোগের তথ্যও দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এতে কোনো কর্মকর্তা কিংবা শিক্ষক ছিল না। সত্যিকার কোনো পাঠদানও হতো না। ভুয়া ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও এসব তথ্য জানতেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি দেখানো প্রতিটি বিদেশি জানতেন যে তারা কোনো সত্যিকার ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন না। তারা কোনো ডিগ্রি কিংবা সার্টিফিকেটও নিচ্ছেন না। কেবল যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করে কাজ করার সুযোগ চেয়েছিলেন তারা।
তবে এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতীয় সরকার।
মার্কিন অভিবাসন সংস্থা বলেছে, কর্তৃপক্ষকে ধোঁকা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতারণামূলকভাবে অভিবাসন নথি সংগ্রহ করতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছেন তারা। অথচ এসব বিদেশি শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার কোনো ইচ্ছাই নেই।
জালিয়াতিতে জড়িতরা কোন দেশের তা উল্লেখ করেনি মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তবে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, তাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আটক হয়েছেন।
দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে শতাধিক ভারতীয় শিক্ষার্থী আটক হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে যেসব শিক্ষার্থী প্রতারিত হয়েছেন, তাদের বিষয়ে আমরা জোর দিচ্ছি। ধোঁকাবাজদের চেয়ে প্রতারণার শিক্ষার্থীদের প্রতি ভিন্ন আচরণ করা উচিত।
নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের ফেরত না পাঠিয়ে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ভারত সরকার।
মার্কিন সংস্থা জানিয়েছে, প্রতারক চক্র এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আড়াই লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন।
চলতি সপ্তাহে মামলার স্পেশাল এজেন্ট স্টিভ ফ্রান্সিস বলেন, কয়েকশ বিদেশিকে শিক্ষার্থী সাজিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকতে সহায়তা করেছেন এ মামলার বিবাদীরা।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.