প্রেমের টানে এবার ব্রাজিলের তরুণী জকিগঞ্জে
ভালোবাসার টানে ঘর ছাড়ার ঘটনা সমাজে অহরহ দেখা গেলেও দেশ ছাড়ার ঘটনা আধুনিক যুগেও কিছুটা বিরল। ভাষা-সংস্কৃতি, ধর্ম-বর্ণসহ নানা সংস্কার ও ভেদাভেদ ভুলে শুধু প্রেমের টানে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন ব্রাজিলের লুসি ক্যলেন (২৯) নামের এক তরুণী। তার বাবার নাম সিডনি।ব্রাজিলের বাখজিয়াং এলাকায় তার বাড়ি। লুসি ক্যালেন একটি হাসপাতালের হেল্প লাইনে কর্মরত ছিলেন। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রায় ১৮ মাস আগে সিলেটের জকিগঞ্জের সাহেদ আহমদের তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। জকিগঞ্জের বিলপার গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে পেশায় একজন আনসার সদস্য। লুসি ক্যালেন দীর্ঘদিন সাহেদের প্রেমে হাবুডাবু খেয়ে বিয়ের পিড়িতে বসতে অবশেষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি। হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সিলেট বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান ওই তরুণী। এরপর সেখান থেকে সাহেদ তাকে গ্রহণ করেন।
২১ ফেব্রুয়ারি সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে লুসি ক্যালেন সিলেট আদালতে উপস্থিত হয়ে মুসলিম ধর্মগ্রহণ করে নতুন নাম রাখেন খাদিজা বেগম। এরপর সাহেদ ও খাদিজা ভৌগোলিক দূরত্ব ঘুচিয়ে, প্রেমের সাগরে ডুবে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেন মোহর ধার্য করে মুসলিম রীতি অনুযায়ী যুগলবন্দী হন।বিলপার গ্রামের ছেলের প্রেমে পড়ে ব্রাজিল থেকে তরুণী এসেছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। প্রতিদিন শত শত মানুষ সাহেদের বাড়িতে লুসি ক্যালেনকে দেখতে ভিড় করেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গেও হাসিমুখে কথা বলেন লুসি ক্যালেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নবদম্পতি লুসি ক্যালেন ও সাহেদ আহমদের দেখা হলে লুসি ক্যালেন জানান, বাবা-মায়ের ইচ্ছে মতই বঙিালি ছেলেকে বিয়ে করতে বাংলাদেশ এসেছি। আমি আগে কোন ধর্মালম্বী ছিলাম না। মুসলিম ধর্ম গ্রহণের প্রবল ইচ্ছা ছিল।বাংলাদেশের আবহাওয়া অনেক ভালো লাগে জানিয়ে তিনি গণমাধ্যমে আরও বলেন, সত্য ভালোবাসা সীমানা মানে না। ভালোবাসার জন্য মরণও আনন্দের। প্রেম মানুষকে মহান করে তোলে। বিবাহ সম্পন্ন করতে ১৫ দিনের জন্য কর্মস্থল থেকে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। তার সঙ্গে বাবা ও মা বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে আসতে পারেননি।
লুসি বলেন, গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তাকে আকৃষ্ট করেছে। স্বামীর বাড়িতে বেশি সময় কাটাতে ছুটি নিয়ে আবারও বাংলাদেশে আসবেন।সাহেদ জানান, ব্রাজিলের নাগরিক লুসি ক্যালেন প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসার পর উভয় পরিবারের সম্মতিতে মুসলিম নিয়ম মেনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছি। ফেসবুকে চ্যাট করেই লুসি ক্যালেনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমি ইংরেজি তেমন না বুঝলেও গুগল ট্রান্সলেটের সাহায্য নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলি। কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে আমিও ইংরেজিতে অনেকটা দক্ষ হয়ে যায়।
'লুসি ১৫ দিনের জন্য বাংলাদেশে এসেছেন। এই সপ্তাহের মধ্যে ব্রাজিলে চলে যাবেন। তিনি সেখানে গিয়ে আমাকেও ব্রাজিল নেয়ার ব্যবস্থা করবেন।'
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.