নিবন্ধন ছাড়া মাছের খামার নয়!
মাছের খামারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৯-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।আইনে বিভিন্ন অপরাধের জন্য শাস্তিও বাড়ানো হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।বৈঠকে বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সটিটিউট আইন-২০১৯ ও বাংলাদেশ বাতিঘর আইন-২০১৯-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৮৩ সালের একটি অধ্যাদেশ দিয়ে চলছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সামরিক শাসনামলে প্রণীত আইনগুলোকে নতুন করে বাংলায় করা হচ্ছে। মাছ রফতানিতে নানারকম সমস্যা হয় কোয়ালিটি নিয়ে। এ জন্য আইনকে হালনাগাদ করা হয়েছে। মৎস্য খামার চালাতে স্থানীয় উপযুক্ত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে।খামার পর্যায়ে ব্যবহার নিষিদ্ধ ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। মৎস্য ও মৎস্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় পচা, দূষিত, ভেজাল ও অপদ্রব্য মিশ্রিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বাজারজাত করা যাবে না। এসব পণ্য বাজারজাত করলে দুই বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আগে এই অপরাধের জন্য তিন মাস জেল, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হতো।
শফিউল আলম বলেন, আইন অমান্য করলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরিদর্শক বা পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা কোনো ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানা করতে পারবেন। দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধ করলে সাজা দ্বিগুণ হবে। তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স না নিয়ে মানুষের খাদ্য হিসেবে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করা যাবে না। তবে সরকার প্রয়োজনে গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে নির্ধারিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করার এক বা একাধিক শর্ত থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মৎস্য ও মৎস্যপণ্যে ভেজাল, অপদ্রব্যের মিশ্রণ ও অনুপ্রবেশ করানো এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বাতিঘরের মাশুল না দিলে আটকে যাবে জাহাজ : মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের একটা পুরনো আইন আছে, দ্য লাইট হাউস অ্যাক্ট, ১৯২৭। এর প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নতুন সংযোজন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বন্দর বাতিঘর কর্তৃপক্ষ যুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের যে কোনো আগমন ও প্রত্যাগমনের সময় জাহাজের মালিক অথবা এজেন্ট অথবা মাস্টারকে বাতিঘর মাশুল পরিশোধ করতে হবে।শর্ত আছে, সরকার কর্তৃপক্ষ সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনের দ্বারা বাতিঘরের মাশুল নির্ধারণের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পুনরায় বাতিঘর মাশুল আরোপ বাতিল অথবা তারতম্য করার ক্ষেত্রে রেয়াত দেয়া হয়েছে। মাশুল কালেকশনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কমিশনকে।
সুগারক্রপের সংজ্ঞায় তাল খেজুর ও গোলপাতা : সুগারক্রপের সংজ্ঞায় ইক্ষু, সুগার বিট, তাল, খেজুর, গোলপাতা ও অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় ফসল বা বৃক্ষ যেগুলো থেকে চিনি হয় তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ‘বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইন্সটিটিউট আইন, ২০১৯’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ বিষয়ে ১৯৯৬ সালের পুরনো একটি আইন আছে, সেটি বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউট আইন। এ আইনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞানীরা পর্যালোচনা করে দেখেছেন, চিনি শুধু আখ থেকে হয় না। আরও অনেকগুলো ক্রপ আছে। তিনি বলেন, নতুন আইনে সুগারক্রপের সংজ্ঞায় ইক্ষু, সুগার বিট, তাল, খেজুর, গোলপাতা ও অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় ফসল বা বৃক্ষ যেগুলো থেকে চিনি হয়, তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাড়তি হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিএসআইআর) একজন প্রতিনিধি সেখানে যুক্ত হবেন।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.