শর্ত থেকে একচুলও নড়বেন না কিম

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো বলেছেন, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে ওয়াশিংটনের দেয়া প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি পিয়ংইয়ং। কিন্তু শর্ত একটাই, সবটা না হলেও অন্তত ‘আংশিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা’ প্রত্যাহার করতে হবে ওয়াশিংটনকে।তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিনে যত আলোচনাই করুক না কেন, নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে পিয়ংইয়ংয়ের শর্ত ও প্রস্তাব একচুলও বদলাবে না। বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের ‘ব্যর্থ সম্মেলন’ শেষ হওয়ার একদিন পর শুক্রবার এ মন্তব্য করেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উ. কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের এ দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকেও কোনো চুক্তি না হওয়ায় হতাশ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে হাল ছাড়েননি দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন, দরকষাকষি চালিয়ে যাবেন ট্রাম্পও। বুধবার নৈশভোজের মধ্য দিয়ে আলোচনা শুরু হলেও মাঝপথেই থমকে যায়। এরপর আলোচনা সংক্ষিপ্ত করে বৈঠকের ইতি টানেন দুই নেতা। যৌথ বিবৃতিতেও অংশ নেননি তারা। পরে পৃথক বিবৃতি দেন। বাতিল করা হয় বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত বৈঠক ও মধ্যাহ্নভোজ। ট্রাম্প-কিমের মধ্যে তৃতীয় কোনো বৈঠক হবে কিনা সে ব্যাপারেও কোনো পরিকল্পনা হয়নি।আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর এক বিবৃতিতে ট্রাম্প দাবি করেছেন, উত্তর কোরিয়া তাদের ওপর আরোপিত ‘সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া’র শর্ত দেয়াতেই ২ দিনের সম্মেলনটি সমঝোতা ছাড়া শেষ হয়েছে। তবে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ দাবি অস্বীকার করেছেন রি।
তিনি বলেছেন, সব নয়, উত্তর কোরিয়া কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। পিয়ংইয়ং যুক্তরাষ্ট্রের পরিদর্শকদের উপস্থিতিতে ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ভেঙে ফেলাসহ বেশ কিছু ‘বাস্তবসম্মত’ প্রস্তাব হাজির করেছিল বলেও জানান এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার এখনকার আস্থা বিবেচনায় নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় নিরস্ত্রীকরণ প্রস্তাব।’ এর বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আংশিক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছিল, যা ‘বেসামরিক অর্থনীতি ও জনসাধারণের জীবনধারণকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে’, বলেন রি। পিয়ংইয়ং পারমাণবিক পরীক্ষা ও দীর্ঘ পাল্লার রকেট উৎক্ষেপণ স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল বলেও জানান তিনি।কোরীয় উপদ্বীপের নিরস্ত্রীকরণে হ্যানয় সম্মেলনের মতো আর কোনো সুযোগ শিগগিরই পাওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য উত্তরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। রি বলেন, ‘ভবিষ্যতের আলোচনাতেও যুক্তরাষ্ট্র যতই প্রস্তাব দিক না কেন, আমাদের মূল অবস্থান সামনের দিনেও অপরিবর্তনীয় থাকবে, আমাদের প্রস্তাবও বদলাবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পথে ট্রাম্প জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জা ইনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলমান থাকবে বলে তাদের আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প।চুক্তিতে পৌঁছাতে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবেন বলে জানিয়েছেন মুন।
সূত্র- বিবিসি ও এএফপি
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.