যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে চরম হেনস্থার শিকার ৯ বছরের বালিকা
আমেরিকার নাগরিক সে। বৈধ পাসপোর্টও সঙ্গে ছিল তার। তবু সীমান্ত পেরোতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসারদের হাতে প্রায় ৩২ ঘণ্টা আটকে থেকে চরম হেনস্থার শিকার হল ৯ বছরের এক বালিকা।চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ফের হইচই শুরু হয়েছে আমেরিকা জুড়ে। সেই সঙ্গেই গোটা ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনের ‘কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রল’ (সিবিপি) দফতরের ভূমিকা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে।
মেক্সিকোর টিউয়ানায় থাকে বছর নয়ের জুলিয়া ইসাবেল আমপারো মেডিনা। দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ার একটি স্কুলে পড়ে সে আর তার ভাই চোদ্দো বছরের অস্কার। সান ইসিড্রো সীমান্ত পেরিয়ে নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করে তারা। গত সপ্তাহের প্রথমে কোনও এক দিন সে রকমভাবেই স্কুলে যাচ্ছিল জুলিয়ারা। তাদের এক প্রতিবেশীর গাড়িতে। কিন্তু চেক পয়েন্টে গাড়ির প্রবল চাপ থাকায় তারা ঠিক করে হেঁটেই সীমান্ত পেরোবে। সেই মতো মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করে জুলিয়া আর তার ভাই। কিন্তু সিবিপি দফতরের অফিসারদের কাছে কাগজপত্র দেখাতে গিয়েই বিপত্তি বাধে।
জুলিয়ার মা থেলমা গ্যালাক্সিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অফিসারদের তার মেয়ে পাসপোর্ট দেখালে তারা জানান পাসপোর্টের ছবি আর জুলিয়ার মুখের মিল নেই। তারা দাবি করেন, পাসপোর্টের মেয়েটি জুলিয়া নয়, তার কোনও সম্পর্কিত বোনের ছবি। এমনকি জুলিয়ার ভাই অস্কারকে দিয়ে লিখিয়েও নেওয়া হয় যে জুলিয়া তার নিজের বোন নয়। প্রায় ৩২ ঘণ্টা জুলিয়াকে আটকে রাখার পর অফিসারেরা নিশ্চিন্ত হন যে সে মার্কিন নাগরিক। তার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তবে ছাড়া পেয়েও আতঙ্ক কাটেনি মেয়েটির। মাকে দেখার পর হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে সে। বলে, “আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মা-ভাই কেউ আমার সঙ্গে ছিল না। ওরা কিছুতেই বিশ্বাস করছিল না যে পাসপোর্টের ছবিটা আমারই।”
সিবিপির এক মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় জুলিয়া প্রথমে তাদের কিছু ভুল তথ্য দিয়েছিল। সে জন্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারেরা তাকে আটকে রাখে। সেই তথ্যটা ঠিক কী, তা খোলসা করেননি ওই মুখপাত্র। শুধু জানিয়েছেন, কেউ বৈধ মার্কিন নাগরিক কি না, তা জানার জন্য তাদের কিছু নির্দিষ্ট প্রশ্ন ও প্রক্রিয়া থাকে। যার জবাব জুলিয়া ঠিকমতো দেয়নি বলেই অভিযোগ তার।‘আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন’ নামে এক সংগঠন অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সিবিপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.