এবার সৌদি থেকে পালিয়েছেন দুই বোন
সৌদি আরব থেকে পালিয়েছেন দেশটির আরও দুই তরুণী। সম্পর্কে তারা সহোদর। নিজ পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার ও সমাজের দমন-পীড়নের হাত থেকে ‘উজ্জ্বল ও সুন্দর’ জীবনের জন্য দেশ ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন দুই বোন রিম (২০) ও রাওয়ান (১৮)।
সেপ্টেম্বরে এক ছুটির দিনে বাড়ি থেকে বের হয়ে পালিয়ে যান তার। আশ্রয় নেন চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে। প্রায় ৬ মাস পর সোমবার তারা ‘নতুন আরেক দেশ’র উদ্দেশে হংকং ত্যাগ করেছেন।
নতুন দেশটি অস্ট্রেলিয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে পরিবার থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরেক সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুন। ওই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হওয়ার পর তিনি কানাডায় আশ্রয় পান। এ ঘটনার কয়েক মাস আগে দেশ ছাড়েন ওই দুই বোন। হংকংয়ে তাদের আইনি সহায়তা করেছেন আইনজীবী মাইকেল ভিডলার।
নারীরা দাসী, কয়েদি বাপ-ভাই কারারক্ষী : ‘সৌদিতে নারীরা দাসী ও কয়েদির মতো। আর বাপ-ভাইয়েরা কারারক্ষীর মতো।’ পালিয়ে আসার কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করেছেন দুই বোন রিম ও রাওয়ান। সোমবার নতুন দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে হংকংয়ের একটি বহুতল ভবনে তাদের সাক্ষাৎকার নেয় রয়টার্স। সেখানে এ দুই বোন বলেন, বাড়িতে থাকতে তাদের সঙ্গে রূঢ় ও কঠোর ব্যবহার করত তাদের বাবা ও ভাইয়েরা।
কখনও কখনও গায়ে হাত তুলত। ছোট বোন রাওয়ান বলেন, ‘তারা যেন আমার কারারক্ষী, আর আমি তাদের কয়েদি।’ এ সময় সৌদি সমাজের পুরুষ অভিভাবক ব্যবস্থা তথা পিতৃতন্ত্রেরও সমালোচনা করেন দুই বোন। তারা জানান, বাড়ির বাইরে যাওয়ার আগে বাবা কিংবা ভাইদের অনুমতি নিতে হয়।
এমনকি চাকরি করতে চাইলে কিংবা ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য হলেও অনুমতি নিতে হয়। বড় বোন রিম বলেন, ‘সমাজে নারীরা দাসের মতো। তাদের কোনো অধিকার নেই।’
রিম আরও বলেন, ‘আমি কোথাও নিজের মতো করে বাঁচতে চাই। চাই নিরাপত্তা বোধ। যেখানে আমার স্বাধীনতা থাকবে। আমি স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবন চাই। চাই নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে। কারণ এ জীবন একান্তই আমার।’
তিনি বলেন, একদিন বড় লেখক হতে চান তিনি। জর্জ অরওয়েলের ১৯৮৪-কে অন্যতম প্রিয় বই হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সৌদির প্রকৃত অবস্থা বইটির প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মিলে যায়।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.