মৌমাছি চাষ পদ্ধতি
মৌমাছি চাষ
মৌমাছিকে তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে এনে মৌচাকের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পালন করাকেই বলা হয় মৌমাচি পালন। পালনের জন্য ভারতীয় জাতের মৌমাছি সবচেয়ে উপযোগী। ছোট সেনালি বর্ণের ও সাদা ডোরাকাটা এ মৌমাছিরা গাছের গর্তে বা অন্য কো গহবরে একাধিক সমান্তরাল চাক তৈরি করে বসবাস করে। গর্তে প্রবেশ পথের সঙ্গে চাকগুলো সমান্তরালভাবে সাজানো থাকে। মৌমাছিদের এরূপ বাসস্থানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয় কাঠের বাক্স। কাঠের মৌবাক্স মৌমাছি পালনই আধুনিক ব্যবস্থা। লোকালয় ও বিভিন্ন বনাঞ্চলের মৌচাক থেকেই তো এই মধু আর মোম সংগ্রহ করা সম্ভব । তবু কেন এই মৌমাছি পালন?
প্রয়োজনীয়তা
১. মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহের সময় সাধারণত চাকটিকে নষ্ট করে ফেলা হয়। এ কাজের সময় অনেক ক্ষেত্রে বিপুলসংখ্যক মৌমাছিও মারা পড়ে। এছাড়াও চাকে অবস্থিত ডিম ও বাচ্চা নষ্ট হয়। এর ফলে দিন দিন মৌমাছির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ইদানিং ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে লোকালয়ে আশঙ্কাজনকভাবে মৌমাছির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এতেফসলের ফলনও কমে যাচ্ছে। মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মৌমাছির সংখ্যাকে বাড়ানো সম্ভব।
২. মৌমাছির বঞ্চিত মধু আমরা খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে থাকি। মধুর পুষ্টিগুণ চাড়াও নানাবিধ রোঘ উপশমকারী ক্ষমতা রয়েছে। সাধারণ নিয়মে মৌচাক চেপে মধু বের করা হয়। এতে চাক থেকে মধু নিষ্কাশন যেমন সম্পূর্ণ হয় না তেমনি সেই মধুতে রয়ে যায় মোম, মৌমাছির ডিম ও বাচ্চা নিস্পোষিত রস এবং অন্যান্য আবর্জনা। পালন করা মৌমাছির চাক থেকে যান্ত্রিক উপায়ে নিষ্কাশিত মধু যেমন বিশুদ্ধ, তেমনি নিষ্কাশনও হয় পুরোপুরি।
৩. মৌচাক থেকে মোম পাওয়া যায়, কিন্তু পালন করা মৌমাচির চাক থেকে মোম সংগ্রহ করা হয় না। মোম সংগ্রহ করলে চাক ষ্ট হয়। নতুন চাক বানাতে মৌমাছির অনেক সময় লাগে। এতে মধু নিস্কাশনের পর চাক অক্ষত থাকে বলে মৌমাছিরা সাথে সাথেই আবার শুন্য কুঠুরিগুলোয় মধু মেন বিশুদ্ধ, তেমনি নিষ্কাশনও হয় পুরোপুরি।
৪. মৌচাক থেকে মোম পাওয়া যায়, কিন্তু পালন করা মৌমাছির চাক থেকে মোম সংগ্রহ করা হয় না। মোম সংগ্রহ করলে চাক নষ্ট হয়। নতুন চাক বানাতে মৌমাছির অনেক সময় লাগে। এতে মধু নিষ্কাশনের পর চাক অক্ষত থাকে বলে মৌমাছিরা সাথে সাথেই আবার শুন্য কুঠুরিগুলোরয় মধু জমাতে থাকে। এছাড়া মৌ-বাক্সে ভেতরে যে কাঠের ফ্রেম থাকে তাতে মোমের তৈরি ছাঁচ বা 'কম্ব ফাউন্ডেশন সিট' দিলে মৌমাছিরা তাড়াতাড়ি চাক তৈরি করতে পারে। এজন্য মৌমাছি পালনের মাধ্যমে অল্প সময়ে অনেক বেশী মধু পাওয়া সম্ভব।
৫. ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানোর সময় মৌমাছিরা তাদের পা এবং বুকের লোমের ফুলের অসংখ্য পরাগরেণু বয়ে বেড়ায়। এক ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে পড়লে পরাগায়ন ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে উৎপন্ন হয় ফল। এভাবে মৌমাছিরা পরাগায়নের মাধ্যমে হিসাবে কাজ করে ফল ও ফসলের উৎপাদন বাড়ায়। বিশেষ মৌসুমে যখন কোনো বাগান বা ফসলের ক্ষেতে প্রচুর ফুল ফোনে তখন মৌমাছিসহ বাঙ্টিকে সেখানে স্থানান্তর করলে একদিকে প্রচুর মদু সঙ্গৃহীত হবে, অন্যদিকে ফল বা ফসলের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
৬. মৌমাছি পালনকে কুটির শিল্প হিসাবে গ্রহণ করলে অনেক বেকারের কর্মসংস্থার হবে। গ্রামের স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোতে মৌমাছি পালন একটি বাড়তি আয়ের সুযোগ দেবে।
উপযুক্ত পরিবেশ : মৌ-বাক্স রাখার জন্য নির্বাচিত স্থানটি ছায়াযুক্ত, শুকনা ও আশপাশে মৌমাছির খাদ্য সরবরাহের উপযোগী গাছ-গাছড়া দ্বারা পরিবেষ্টিত হওয়া আবশ্যক। প্রয়োজনে কিছু কিছু ঋতুভিত্তিক গাছ জরুরি ভিত্তিতে লাগানো যেতে পারে। নির্বাচিত স্থানের আশপাশে যেন বিকট শব্দ সৃষ্টিকারী এবং ধোঁয়া উত্পাদনকারী কোনো কিছু না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
পালন
যে কাঠের বাক্স মৌমাছি পালন করা হয় সেটি বিভিন্ন অংশের সমন্বয়ে তৈরী। তলার কাঠ, বাচ্চাঘর, মধুঘর, ঢাকনা, ও ছাদ হচ্ছে একটি মৌবাঙ্রে বিভিন্ন অংশ। মধুঘর ও বাচ্চাঘরে সারি সারি কাঠের ফ্রেম সাজিয়ে দেয়া হয়। এ ফ্রেমেই মৌমাছিরা চক তৈরি করে। কোনো গাছের গর্ত থেকে মৌমাছি ও তাদের চাক সংগ্রহ করার পর বাক্স দেয়া হয়। একটি মৌমাছি পরিবারে থাকে মাত্র একটি রানী মৌমাছি, কিছু পুরুষ এবং অধিকাংশ শ্রমিক মৌমাছি। চাক তৈরি, বাচ্চাদের লালনপালন, মধু এবং ফুলের পরাগ সংগ্রহ ইইত্যাদি সব কাজ শ্রমিক মৌমাছিরাই সম্পাদন করে। কিন্তু মৌমাছি পালন করে চাক থেকে মধু পেতে হলে একজন মৌমাছি পালককে মৌমাছিদের যত্ন নিতে হবে। বছরের বিভিন্ন ঋতুতে নানা প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এদের রোগ প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়া মৌমাছি পালন তথ্য পরিচর্যার অন্তভূর্ক্ত । এখানে সংক্ষেপে এ নিয়ে কিছু আলোচনা করা হল-
ক) মৌসুমী ব্যবস্থাপনা
বিভিন্ন ঋতুতে মৌমাছির পরিচর্যাকে তিনটি ভগে ভাগ করা যায়। যেমন-মৌমাছির বংশ বৃদ্ধির সময়ে, যখন প্রকৃতিতে প্রচুর খাদ্য পাওয়া যায় তখন এবং খাদ্যসঙ্কট চলাকালে।
১. বংশ বৃদ্ধিকালে-রানী মৌমাছি যখন প্রচুর ডিম পেড়ে একটি মৌবাঙ্রে মৌমাছির সংখ্যা বাড়তে থাকে সে সময়টাই হল বদ্ধিকাল। এ সময় প্রকৃতিতে ফুলের সমারোহ দেখা যায় এবং মৌমাছিরা প্রচুর পরিমানে পরাগরেণু এবং ফুলের রস সংগ্রহ করে। বংশ বৃদ্ধিকালে বাচ্চাঘরে নতুন ফ্রেম দিতে হবে। বাঙ্ কোনো পুরনো ও ত্রুটিপূর্ণ রাণীকে সরিয়ে নতুন রানীর সংযোজন করতে হবে। সাধারণত বৃদিধকালের শেষ দিকে মৌমাছিরা ঝাঁক বাঁধে। ঝাঁক বেঁধে মৌমাছিরা যাতে অন্য কোথাও উড়ে চলে না যায় এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। চাকে নবনির্মিত পুরুষ, রাণী মৌমাছিরা বাঁক বেঁধে অন্য কোথাও উড়ে যাবে না। মৌমাছির সংখ্যা যদি অনেক বেশী হয় তবে তাদের একাধিক বাক্স ভাগ করে দেয়া উচিত মৌমাছির বংশ বৃদ্ধিকালে মাঝে মাঝে কলোনী পরীক্ষা করে তাদের অন্যান্য সমস্যার প্রতিও দৃস্টি রাখতে হবে।
২. খাদ্য সঞ্চয়কালে-এ সময়ে প্রকৃতিতে প্রচুর ফুল পাওয়া যায়। মৌমাছিদের সংগ্রহীত পরাগরেণু বাচ্চা মৌমাছিদের খাওয়ানো হয়। ফুলের রস দিয়ে মৌমাছিরা মধু তৈরি করে মধুঘরের চাকে জমা করে। মধু রাখার স্থানের যাতে অভাব না হয় এজন্য মধু ঘরে আরও নতুন চাক দিতে হবে। চাকের শতকরা ৭৫টি কঠুরি যখন ঘন মধুতে ভরে মৌমাছিরা ঢাকনা দিয়ে ফেলবে, তখন সে চাক থেকে মদু নিষ্কাশন করে নিতে হবে। প্রয়োজনবোধে মৌমাছি পালনক্ষেত্র তেকে কিছু মৌবাক্স সরিয়ে অন্য স্থানে নিতে হবে যাতে বিশেষ কোনো এলাকা থেকে মৌমাছিরা আরও বেশী মধু সঞ্চয় করতে পারে। শীতের প্রচন্ড প্রকোপে মৌমাছিদের যেন কষ্ট না হয় এজন্য শীতের রাতে মৌবাঙ্টি চট বা ছালা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
৩. খাদ্য সঙ্কটকালৈ এ সময়ে প্রকৃতিতে খাদ্য সংগ্রহ করার মতো ফুল খুব কম থাকে, ফলে মৌমাছিরা খাদ্য সঙ্কটে পড়ে। খাবারের অভাব মিটাতে এ সময় চিনির সিরাপ মিশিয়ে এই সিরাপ তৈরি করা হয়। যে পাত্রে সিরাপ পরিবেশন করা হবে সেটি বাঙ্রে ভেতরে রেখে সিরাপের পরে একটি কাঠি বা পাতা দিতে হবে, যাতে মৌমাছিরা তার ওপরে বসে রস খেতে পারে। সিরাপ রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে (সন্ধ্যা) পরিবেশন করা উচিত, যাতে অন্য বাঙ্রে মৌমাছিরা এসে খাবারের জন্য মারামারি না বধায়। ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে মৌবাঙ্টির প্রবেশ পথ বাতাস ও বৃদ্ধির বিপরীতমুখী করে নিরাপদ, শুল্ক স্থানে রাখতে হবে। অন্যথায় বাক্সে ছাদের উপর আবরণ দিয়ে প্রবল বৃষ্টি হাত থেকে মৌমাছিদের রক্ষা করতে হবে। খাদ্য সঙ্কটকালে কলোনী দূর্বল হয়ে পড়তে পারে। বাক্স চারটি চাকের কম সংখ্যাকে চাকে মৌমাছি একত্র করে একটি মৌবাক্স স্থান করে দেয়া উচিত। খাদ্য সঙ্কট সব এলাকায় একই সময়ে দেখা দেয় না। এ জন্য মৌবাক্স এমন এলাকায় স্থানান্তর করা যায়, যেখানে প্রচুর ফুল পাওয়া যাবে। খাদ্য সঙ্কটকালে মৌমাছিদের রোগ-জীবানূ বেশী হয় বলে এ সময় কলোনীর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
খ) শত্রু এবং রোগ
বিভিন্ন প্রকার শত্রু ও রোগের আক্রমনে মৌমাছি কলোনী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দু'একটি প্রধান শত্রু ও রোগের বিষয়ে এখানে আলোচনা করা হলে। মোমপোকা-ভিজে, স্যাতসেঁতে আবহাওয়ায় মোমপোকার আক্রমণ সবচেয়ে বেশী হয়। চাকের কুঠুরির উপরে মাকড়সার জালের ন্যায় আবরণ দেখেই বোঝা যায়। একটি মোপোকারয় আক্রান্ত ঢাকনাযুক্ত পিউপার কুঠুরির মুখ খোলা এবং ভেতরে মৃত পিউপা পাওয়া যায়। এ সমস্যার প্রতিকার হল মৌবাক্স পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পুরনো ও ময়লা চাক সরিয়ে ফেলা এবং পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে বাঙ্রে মেঝে পরিস্কার করা। মোমপোকার আক্রমণ দেখা দিলে প্যারাডাইক্লোরো বেনজিন নামক ওষুধ সামান্য পরিমানে বাক্স কোণায় রেখে দিলে এই পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এ ময়ে রাতে বাক্সের গেইট বন্ধ করে রাখতে হবে এবং সকালে খুলে দিতে হবে। অ্যাকারাইন এ রোগ সাধারণত পূর্ণবস্ক মৌমাছিদের হয়ে থাকে। রুগ্ন মৌমাছির ডানাগুলো বিভক্ত হয়ে ইংরেজি অক্ষর 'ক' এর মতো হয়ে যায় এবং অনেক মৌমাছিকে বাক্সে সামনে বুকে হাঁটতে দেখা যায়। বাক্সে সামনে আমাশয় এর মতো হলুদ পায়খানা পড়ে থাকে। মৌমাছিরা কলোনীর মধ্যে বিশৃংখলাভাবে ঝাঁক বেঁধে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে প্যারালাইসিস হতে দেখা যায়। আক্রান্ত রানী ডিম দেয়া বন্ধ করে দেয়। এ্যাকারাইন হতে দেখা যায়। এ্যাকরাইন রোগের প্রতিকার হল-মৌবাঙ্রে ভেতরে মিথাইল স্যালিসাইলেটের বাষ্প দেয়া। এজন্য ছোট একটি বোতলে মিথাইল স্যালিসাইলেট নিয়ে রবার কর্ক দিয়ে মুখ বন্ধ করতে হবে।
মৌমাছি চাষ ও প্রশিক্ষনের জন্য বিসিকের যে কোনো কার্যালয়ে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
আয়-ব্যয়ের হিসাব মৌমাছি পালন প্রকল্প স্থাপনের জন্য আলাদাভাবে কোনো জায়গার প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আনাচে-কানাচে, ঘরের বারান্দায়, ছাদে কিংবা বাগানেও মৌ-বাক্স রাখা যায়। অ্যাপিস সেরানা প্রজাতির ৫টি মৌ-কলোনি সম্বলিত মৌ-খামার স্থাপনের জন্য মোট বিনিয়োগ হবে ১৫-১৬ হাজার টাকা। প্রতিবছর গড়ে প্রতি বাক্স থেকে ১০ কেজি মধু পাওয়া যাবে, যার বাজারমূল্য ২৫০ টাকা হিসেবে ২৫০০ টাকা। এ হিসেবে ৫টি বাক্স থেকে উত্পাদিত মধুর মূল্য দাঁড়াবে ৫–১০ কেজি – ২৫০ টাকা (প্রতি কেজি)= ১২,৫০০ টাকা। এই আয় ১০-১৫ বছর অব্যাহত থাকবে অর্থাৎ প্রথমে মাত্র একবার ১৫-১৬ হাজার টাকা ব্যয় করে প্রকল্প স্থাপন করলে মৌ-বাক্স এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি ১০-১৫ বছর ব্যবহার করা যাবে। আর কোনো বিনিয়োগ বা খরচ নেই বললেই চলে।
অন্যদিকে অ্যাপিস মেলিফেরা প্রজাতির ৫টি মৌ-কলোনি সম্বলিত মৌ-খামার স্থাপনের জন্য মোট ব্যয় হবে ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা। এক্ষেত্রেও ১০-১৫ বছর পর্যন্ত মৌ-বাক্স ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা যাবে। আর কোনো অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে না। মেলিফেরা প্রজাতির প্রতিটি মৌ-বাক্স থেকে বছরে ৫০ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা সম্ভব, যার বাজারমূল্য ৫০ কেজি –২৫০ টাকা (প্রতিকেজি) – ৫টি বাক্স= ৬২,৫০০ টাকা। প্রকল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে মাত্র ২৫-২৭ হাজার টাকা এককালীন বিনিয়োগ করে প্রতিবছর ৬০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে আয় করা সম্ভব। মৌ-বাক্সের সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধির মাধ্যমে এ আয় অনেকগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। স্বল্প পরিশ্রমে এ ধরনের প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে একদিকে যেমন আর্থিক দিক থেকে লাভবান হওয়া যায়, তেমনি পরাগায়ন প্রক্রিয়ায় সহায়তা দানের মাধ্যমে দেশের ফল ও ফসলের উত্পাদনে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা দান করা যায়।
চিকিৎসা:মধু ও মৌমাছির বিষে বাত নিরাময়
মৌমাছি বা ভীমরম্নলের হুল ফুটানো বিষ খুবই যন্ত্রণাদায়ক। যে ব্যক্তি হুল দংশ্বনের শিকার হয়েছেন কেবল তিনিই তার জ্বালা অনুভব করতে পারেন। মানুষ এমনকি অন্যান্য প্রাণীও তাই মৌমাছি বা ভীমরম্নল চাক এড়িয়ে চলে, কিন্তু মৌমাছি ও ভীমরম্নলের হুল থেকে সংগৃহীত বিষ যে রোগ নিরাময়ের উপাদান হিসাবে কাজ করতে পারে তা অনেকেরই অজানা। নিউজিল্যান্ডের একটি কোম্পানি সে আমার বাণীই শুনিয়েছে। শুধু তাই নয়-মৌমাছির বিষ বাজারজাতকরণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে অনুমোদন চেয়েছে।
নেলসন হানি এন্ড মার্কেটিং নামে একটি কোম্পানি জানিয়েছে গেঁটে বাত জনিত ব্যথা নিরাময়ে প্রদাহ নিরোধক হিসাবে কাজ করে মৌমাছির বিষ। প্রতিদিন দুই চা চামচ পরিমাণ মধুর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ মৌমাছির বিষ দুধ (ভেনম মিল্ক) মিশিয়ে সেবন করলে বাত রোগে উপসম হয়। তাদের মতে মৌমাছির বিষ প্রয়োগে বাতের চিকিৎসা নতুন ধারণা নয়। কোন কোন ক্লিনিকে মৌমাছির হুল ফুটিয়ে বাতের চিকিৎসা করা হয়। যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সি জানিয়েছে আগামী মাসে নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানিটির আবেদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে-নিউজিল্যান্ডের একটি অঞ্চলে গত ১৩ বছর যাবৎ এক প্রকার মৌমাছির চাষ করা হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে সংগৃহীত মধু ও ভেনম মিল্ক সম্পর্ণ নিরাপদ। তবে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের এসব সেবন নিষিদ্ধ।
একই সঙ্গে আরো একটি বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, মধু অথবা মৌমাছির বিষ যাদের শরীরে অ্যালার্জির উদ্রেক করে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। অবশ্য এ ধরনের চিকিৎসার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন যুক্তরাজ্যের আথ্রাইটিস রিসার্চ ক্যাম্পেইনের কর্ণধার প্রফেসর অ্যালান সিলমান। তার মতে, মধু ও মৌমাছির বিষবাত নিরাময়ে ফলপ্রসূ এমন প্রমাণ এখনও মেলেনি।
এগ্রোবাংলা ডটকম
নেলসন হানি এন্ড মার্কেটিং নামে একটি কোম্পানি জানিয়েছে গেঁটে বাত জনিত ব্যথা নিরাময়ে প্রদাহ নিরোধক হিসাবে কাজ করে মৌমাছির বিষ। প্রতিদিন দুই চা চামচ পরিমাণ মধুর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ মৌমাছির বিষ দুধ (ভেনম মিল্ক) মিশিয়ে সেবন করলে বাত রোগে উপসম হয়। তাদের মতে মৌমাছির বিষ প্রয়োগে বাতের চিকিৎসা নতুন ধারণা নয়। কোন কোন ক্লিনিকে মৌমাছির হুল ফুটিয়ে বাতের চিকিৎসা করা হয়। যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সি জানিয়েছে আগামী মাসে নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানিটির আবেদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে-নিউজিল্যান্ডের একটি অঞ্চলে গত ১৩ বছর যাবৎ এক প্রকার মৌমাছির চাষ করা হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে সংগৃহীত মধু ও ভেনম মিল্ক সম্পর্ণ নিরাপদ। তবে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের এসব সেবন নিষিদ্ধ।
একই সঙ্গে আরো একটি বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, মধু অথবা মৌমাছির বিষ যাদের শরীরে অ্যালার্জির উদ্রেক করে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। অবশ্য এ ধরনের চিকিৎসার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন যুক্তরাজ্যের আথ্রাইটিস রিসার্চ ক্যাম্পেইনের কর্ণধার প্রফেসর অ্যালান সিলমান। তার মতে, মধু ও মৌমাছির বিষবাত নিরাময়ে ফলপ্রসূ এমন প্রমাণ এখনও মেলেনি।
এগ্রোবাংলা ডটকম
মৌ কলোনির পরিচর্যা
আমাদের দেশে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাস থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত মধু সংগ্রহের উত্তম সময়। এছাড়াও কোনো কোনো এলাকায় ব্যতিক্রম হিসেবে অনুকূল পরিবেশে উল্লিখিত সময় ছাড়াও মধু সংগ্রহ করা যায়।
নিচে মধুঋতু পরিচর্যার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো :
» এলাকার বি-প্লান্টসের পরিচর্যা করা।
» অধিক মধু সংগ্রহের জন্য কলোনি পর্যাপ্ত বি-প্লান্টস পরিবেষ্টিত এলাকায় সাময়িকভাবে স্থানান্তর করা।
» নির্ধারিত ফুল ফোটার সময়ে মধু পাওয়ার জন্য প্রয়োজনবোধে কলোনি একত্রীকরণের ব্যবস্থা করা।
» চলাচল দরজার সম্পূর্ণ অংশ দিনের বেলায় খুলে দেয়া। তবে ঝাঁক ছাড়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই কুইনগেট লাগাতে হবে।
» কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্রুড ও সুপার চেম্বারের মাঝে কুইন এক্সক্লুডার স্থাপন আবশ্যক।
» রানী মৌমাছির অধিক ডিম দেয়ার সুবিধার্থে ব্রুড চেম্বারে ভিত্তিচাক এবং পুরনো ভালো চাক পর্যায়ক্রমে দুটি ফ্রেমের মাঝখানে স্থাপন করা দরকার।
» একইভাবে সুপার চেম্বারেও অধিক মধু জমানোর জোগান দেয়াসাপেক্ষে ভিত্তিচাক এবং পুরনো ভালো চাক স্থাপন করা যায়।
» সুপার চেম্বারে শতকরা ৭০ ভাগ মধু জমানো কোষে ঢাকনা দিলে মধু নিষ্কাশন যন্ত্রের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করতে হবে।
» মধুঋতু শেষে সর্বশেষ মধু সংগ্রহের সময় মধুসহ কমপক্ষে একটি চাক কলোনিতে রেখে দিতে হবে।
» কোনো কারণে যথাসময়ে মধু সংগ্রহ করা সম্ভব না হলে সাময়িকভাবে আরও একটি সুপার চেম্বার স্থাপন করা শ্রেয়।
» বিনা প্রয়োজনে পুরুষ ও রানী কোষ তৈরি করে থাকলে তা কেটে বাদ দিতে হবে।
» সংগৃহীত মধু আধুনিক পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করে পরিষ্কার এয়ারটাইট পাত্রে রাখতে হবে।
» মধুঋতু শেষে সুপার চেম্বারের সব চাক এবং ব্রুড চেম্বারের অতিরিক্ত চাকগুলো রৌদ্রে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
» কোনো কোনো সময় কলোনিতে পর্যাপ্ত মৌমাছি থাকা সত্ত্বেও শ্রমিক মৌমাছির দ্বারা সুপার চেম্বারে চাক তৈরি করতে অনীহা প্রকাশ পায় কিংবা চাক দিলেও তাতে মধু জমা করে না। এসব ক্ষেত্রে ব্রুড চেম্বার থেকে ২/১টি চাকের উপরের অংশ মধুসহ (আংশিক/সম্পূর্ণ) কেটে সুপার ফ্রেমের সঙ্গে লাগিয়ে সুপার চেম্বারে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া অন্য কোনো কলোনি থেকেও মধুসহ চাক সুপার ফ্রেমে এনে এধরনের কলোনির সুপার চেম্বারে স্থাপন করা যেতে পারে।
» মধুঋতুর শেষ পর্যায়ে কিছু কিছু মৌ কলোনি বিভাজন করে কলোনির সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে।
» এতদ্ব্যতীত প্রয়োজন সাপেক্ষে রুটিনমাফিক পরিচর্যাও অব্যাহত রাখতে হবে। বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে ফোন করা যেতে পারে।
নিচে মধুঋতু পরিচর্যার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো :
» এলাকার বি-প্লান্টসের পরিচর্যা করা।
» অধিক মধু সংগ্রহের জন্য কলোনি পর্যাপ্ত বি-প্লান্টস পরিবেষ্টিত এলাকায় সাময়িকভাবে স্থানান্তর করা।
» নির্ধারিত ফুল ফোটার সময়ে মধু পাওয়ার জন্য প্রয়োজনবোধে কলোনি একত্রীকরণের ব্যবস্থা করা।
» চলাচল দরজার সম্পূর্ণ অংশ দিনের বেলায় খুলে দেয়া। তবে ঝাঁক ছাড়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই কুইনগেট লাগাতে হবে।
» কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্রুড ও সুপার চেম্বারের মাঝে কুইন এক্সক্লুডার স্থাপন আবশ্যক।
» রানী মৌমাছির অধিক ডিম দেয়ার সুবিধার্থে ব্রুড চেম্বারে ভিত্তিচাক এবং পুরনো ভালো চাক পর্যায়ক্রমে দুটি ফ্রেমের মাঝখানে স্থাপন করা দরকার।
» একইভাবে সুপার চেম্বারেও অধিক মধু জমানোর জোগান দেয়াসাপেক্ষে ভিত্তিচাক এবং পুরনো ভালো চাক স্থাপন করা যায়।
» সুপার চেম্বারে শতকরা ৭০ ভাগ মধু জমানো কোষে ঢাকনা দিলে মধু নিষ্কাশন যন্ত্রের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করতে হবে।
» মধুঋতু শেষে সর্বশেষ মধু সংগ্রহের সময় মধুসহ কমপক্ষে একটি চাক কলোনিতে রেখে দিতে হবে।
» কোনো কারণে যথাসময়ে মধু সংগ্রহ করা সম্ভব না হলে সাময়িকভাবে আরও একটি সুপার চেম্বার স্থাপন করা শ্রেয়।
» বিনা প্রয়োজনে পুরুষ ও রানী কোষ তৈরি করে থাকলে তা কেটে বাদ দিতে হবে।
» সংগৃহীত মধু আধুনিক পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করে পরিষ্কার এয়ারটাইট পাত্রে রাখতে হবে।
» মধুঋতু শেষে সুপার চেম্বারের সব চাক এবং ব্রুড চেম্বারের অতিরিক্ত চাকগুলো রৌদ্রে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
» কোনো কোনো সময় কলোনিতে পর্যাপ্ত মৌমাছি থাকা সত্ত্বেও শ্রমিক মৌমাছির দ্বারা সুপার চেম্বারে চাক তৈরি করতে অনীহা প্রকাশ পায় কিংবা চাক দিলেও তাতে মধু জমা করে না। এসব ক্ষেত্রে ব্রুড চেম্বার থেকে ২/১টি চাকের উপরের অংশ মধুসহ (আংশিক/সম্পূর্ণ) কেটে সুপার ফ্রেমের সঙ্গে লাগিয়ে সুপার চেম্বারে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া অন্য কোনো কলোনি থেকেও মধুসহ চাক সুপার ফ্রেমে এনে এধরনের কলোনির সুপার চেম্বারে স্থাপন করা যেতে পারে।
» মধুঋতুর শেষ পর্যায়ে কিছু কিছু মৌ কলোনি বিভাজন করে কলোনির সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে।
» এতদ্ব্যতীত প্রয়োজন সাপেক্ষে রুটিনমাফিক পরিচর্যাও অব্যাহত রাখতে হবে। বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে ফোন করা যেতে পারে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.