‘বাঘাইছড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে’
পাহাড়ে কোনও সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে খুঁজে বের করা হবে। তাই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত আস্তানায় যৌথবাহিনর অভিযান চলছে। নতুন কোনও সূচি নির্ধারণ না করার পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
বুধবার বেলা ১টায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের এসব কথা বলেন তিনি।এ সময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সাজ্জাত মাহমুদ, পুলিশের ডিআইজি গোলাম ফারুক, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুন অর রশিদ, রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর কবির প্রমুখ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান আরও বলেন, সম্প্রতি বাঘাইছড়িতে যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল সেটা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পূর্ব পরিকল্পিত ছিল। কিছু নামধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের জন্য পাহাড়ে এমন অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।তিনি বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার জন্য পার্বত্যাঞ্চলে বিশেষ আইনশৃঙ্খলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সঠিক সময়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের জবাব দেওয়া হবে। আর যারা পাহাড়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, রক্ত ঝড়িয়েছে তাদের যেকোনও মূল্যে খুঁজে বের করা হবে।
এসময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আব্দুল মান্নান বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আর বরদাস্ত করা হবে না। সরকার এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছে।তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসের জায়গা কোথাও নেই। তাদের অবৈধ আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়া হবে। মানুষ হত্যাকারীদের শাস্তি কঠিন এবং কঠোর। তাই এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌবাহিনীর বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করি দ্রুত তাদেরকে আটক করা হবে।
তিনি বলেন, মূলতঃ পাহাড়ে বিভক্ত আঞ্চলিক দলগুলোর কারণে এ সশস্ত্র সন্ত্রাস জন্ম নিচ্ছে। তারাই বিভিন্ন খুন, গুম, চাঁদাবাজির মতো আইন বিরোধী কার্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। তারাই গত ১৮ মার্চ পরিকল্পিতভাবে বাঘাইছড়িতে সেভেন মাডার করেছে। একই সাথে ২০জনের প্রাণ হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাদের আর অস্ত্রবাজি করতে দেওয়া হবে না। এসব হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের দ্রুত আইনের আওয়তায় আনা হবে।
এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নয়মাইল এলাকায় হতাহতের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যদের সাথে কথা বলেন।
পরে বিজিবি‘র মারিশ্যা জোনে এক মতবিনিময় সভা ও সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাত পরিবারের সদস্যদের মাঝে নগদ ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ রাঙামাটি উপজেলা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে বাঘাইছড়ির নয়মাইল এলাকায় আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করেন। এসময় ঘটনাস্থলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়বসহ ৭ আনসার ভিডিপির সদস্য নিহত হন। আহত হন আরও ২০জন। তারা চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.