এটা বলতে তারা শিখিয়ে দিয়েছিল: নাঈম, জয়ের অসস্বীকার
নাঈম একটি ছোট্ট শিশু। এই বয়সেই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সে। গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের সময় মুহূর্তেই খ্যাতির চূড়ায় উঠে আসে নাঈম।সে সময় আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত ফায়ার সার্ভিসের একটি পাইপের ছিদ্র অংশ পলিথিন পেঁচিয়ে দুই হাতে চেপে ধরে আলোচনায় আসে নাঈম। তার ওই মুহূর্তের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসায় ভাসতে থাকে সে। মুহূর্তের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় নাঈমের সেই অসাধারণ ভূমিকায় মুগ্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি তার পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার কথাও জানান ওমর ফারুক সামি নামের ওই ব্যক্তি।বিষয়টি আলোচনায় আসার পর টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় নাঈমের একান্ত সাক্ষাৎকার নেন। এ সময় নাঈমের সঙ্গে তার বাবা-মাও ছিলেন। নাঈম পুরস্কারের সেই টাকাগুলো নেবে কিনা? আর নিলেও সেই টাকা কিসে খরচ করবে? এমন প্রশ্ন করেন উপস্থাপক জয়।জবাবে নাঈম জানায়, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্য দান করে দিতে চায়। ছেলের এ জবাবে সায় দেন তার মা-বাবাও।এতিমখানায় কেন টাকা দিতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে নাইম জানায়, কয়েক বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছে। তাই এই টাকা সে এতিমদের দিতে চায়।তবে শিশু নাঈমকে জয়ের এ ধরনের প্রশ্ন করাটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ফেসবুকে সমালোচনা ঝড় বইতে থাকে।
নেটিজেনরা বলছেন, ওই শিশুটি নিজ থেকে এসব কথা বলেনি। উপস্থাপক জয় শিশু নাঈমকে কথাগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে শিশুটির কথা বলার ধরনেই তা স্পষ্ট।এরই মধ্যে গুঞ্জন শোনা যায় নাঈমকে সাহায্য দানের প্রতিশ্রুতি দেয়া সেই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীও তার কথা ফিরিয়ে নিয়েছেন। তিনি ৫ হাজার ডলার নাঈমকে দেবেন না।নাঈম রাজনীতির শিকার জানিয়ে ওমর ফারুক সামি ৫ হাজার ডলার দেবেন না এমন কথা সোমবার (১ এপ্রিল) ফেসবুকে ভাসতে থাকে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নাঈমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন গণমাধ্যমকর্মী ও কণ্ঠশিল্পী আমিরুল মোমিনিন মানিক।আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।সেই ভিডিওতে আমিরুল মোমিনিন মানিক শিশু নাঈমকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার মা কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছেন, তোমার পড়াশোনার খরচ বহন করছেন, তোমার নিজেরই টাকা দরকার, তাহলে তুমি কেন সে টাকা নিজে না রেখে এতিমদের দিয়ে দিতে চাও? এটা কী তোমার মনের কথা?’
নাঈমের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘না, এটা বলতে তারা শিখিয়ে দিয়েছিল।’ এরপর প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘যিনি তোমাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন তিনি এখন বলেছেন আর টাকা দেবেন না। তুমি কী টাকাটা চাও?’
নাঈমের জবাব, ‘আমি ওই কথা না বুঝে বলেছি, আমি টাকা চাই, আমার পড়াশোনার জন্য টাকা চাই।’ একই প্রশ্ন করা হয় নাঈমের মাকে। তিনি বলেন, ‘নাঈম ছোট মানুষ, তাই না বুঝে এসব বলেছে। আমি গরীব মানুষ, টাকাটা আমারই দরকার। সে টাকা অন্যদের দিয়ে দিলে আমার নাঈমকে আমি কীভাবে মানুষ করব!’
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.