স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হয় দলিল লেখক রিয়াজ
সম্পদের লোভ এবং স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে বরিশালের দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনের মধ্যে নিহতের স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজাকে (৩০) পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অপর দুই অভিযুক্ত দলিল লেখক রিয়াজের সহকারী মাছুম এবং হাইল্ল্যাকে (হালিম) গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। রবিবার দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।বেলা ১২টায় নগরীর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ-কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া বলেন, রিয়াজ হত্যায় গ্রেফতারকৃত স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজা হত্যার দায় স্বীকার করে গত শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।
জবানবন্দীতে লিজা বলেন, আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে ৪ বছর আগে তিনি রিয়াজকে বিয়ে করেন। ৪ বছরেও কোন সন্তান না হওয়ায় তাদের দাম্পত্য সুখের ছিল না। রিয়াজের কাছে দলিল লিখন কাজে প্রায়ই গ্রামের বাড়িতে যেত মাছুম। মাছুমের সাথে এক পর্যায়ে লিজার পরকীয়া সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। নগরীর পলাশপুরে রিয়াজের ১৭ শতাংশ জমি আত্মসাত এবং পরকীয়া সম্পর্ক বাঁধাহীন করতে দলিল লেখক রিয়াজকে হত্যার পরিকল্পনা করে লিজা ও তার সহযোগিরা।ঘটনার রাতে গত ১৯ এপ্রিল লিজা দুধের সাথে দুটি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে তার স্বামীকে খাওয়ায়। এতে রিয়াজ সজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে রাত আড়াইটার দিকে লিজা, মাসুম ও তাদের সহযোগী হাইল্ল্যা ধারালো দা এবং ছুরি দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর হত্যার দায় এড়াতে লিজা ঘরের মাটির ভিটেতে (পীড়া) একটি সিঁধ কাটে। কিন্তু ওই সুরঙ্গ থেকে কোন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারে না এবং সুরঙ্গ পথে মাকরসার জালও অক্ষত ছিলো। এ কারনে শুরু থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিলো লিজার দিকে। অবশেষে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে লিজা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের পরদিন গত ১৯ এপ্রিল নিহতের ভাই মনিরুল ইসলাম রিপন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতারকৃত লিজা গত শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। তার জবানবন্দিতে অপর দুই সহযোগী মাছুম ও হাইল্ল্যার নাম প্রকাশ পায়। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএমপি’র উপ-কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া।এটি রিয়াজের দ্বিতীয় এবং লিজার তৃতীয় বিয়ে ছিলো। আগের দুই স্বামীর কাছ থেকে জমি এবং অর্থ হাতিয়ে নিয়ে লিজা তাদের পরিত্যাগ করে বলে জানায় পুলিশ।
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.