২০ বছর ধরে সাঁতার কেটে স্কুলে যান শিক্ষক!

পরিবহন ব্যবস্থা ভাল নয়, তাই বাসে চড়ে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। কিন্তু কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। আর সেই কথারই বাস্তবিক প্রয়োগ ঘটালেন ভারতের কেরালার এক শিক্ষক। সময়মতো স্কুলে পৌঁছানোর জন্য তিনি যা করেন, তা জানার পর আপনার চোখ কপালে ওঠাই স্বাভাবিক। এভাবেও যে সময়ানুবর্তিতার পরিচয় দেওয়া সম্ভব, তা হয়ত ভাবতেই পারবেন না আপনি।
কেরলের মালাপ্পুরমের বাসিন্দা আবদুল মালিক। চল্লিশ বছর বয়সী এই ব্যক্তি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাড়ি থেকে তার স্কুলের দূরত্ব মাত্র ১২ কিলোমিটার। বাসে বা ট্রেনে ১২ কিলোমিটার রাস্তা যেতে কতক্ষণই বা সময় লাগতে পারে? কিন্তু আবদুল মালিকের সেই রাস্তা যেতে প্রায় দু-তিনঘণ্টা সময় লেগে যায়। কারণ রাজ্যের দুর্বল পরিবহণ ব্যবস্থা। শুধু সময় নষ্ট হয়, তা কিন্তু নয়। উপরি পাওনা হিসাবে সময়মতো স্কুলেও পৌঁছাতে পারতেন না ওই শিক্ষক। একজন শিক্ষক হয়েই যদি নিয়ম না মানেন, তবে শিক্ষার্থীদের কী শিক্ষা দেবেন তিনি? আপাত সৎ একটা মানুষ বিবেকের দংশনে ভুগছিলেন৷
তাই অন্য রাস্তার ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। অনেক ভেবে নদী পেরিয়ে স্কুলে যাতায়াতের সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষক। নৌকায় চড়ে তিনি স্কুলে পৌঁছে যাবেন বলে ভাবছেন নিশ্চয়ই? অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে, প্রতিদিন সাঁতার কেটে স্কুলে পৌঁছান ওই শিক্ষক। নিয়ম করে সকাল ৯টায় বাড়ি থেকে বের হন। নিজের পোশাক, জুতো, টিফিন বক্স প্লাস্টিকে জড়িয়ে কাঁধে তুলে নেন। একটি টায়ার টিউব কোমরে জড়িয়ে নেন। তারপর সাঁতার কেটে নদী পার হন। নদীর পাড়ে পোশাক পরিবর্তন করেন। তারপর ধীরে সুস্থে পাহাড়ের কোল ঘেঁষা রাস্তা দিয়ে পৌঁছে যান স্কুলে।
এক-দু’দিন নয়, টানা কুড়ি বছর ধরে এটাই করে আসছেন। তবে এভাবে স্কুলে পৌঁছাতে কোনও ক্লান্তি নেই তার। সময় এবং যাতায়াতের খরচ কমে যাওয়ায় খুশি ওই স্কুল শিক্ষক। সময়ানুবর্তিতা অবাক করেছে তার সহকর্মীদের। এমন শিক্ষকের কাছে পড়াশোনা শিখতে পেরে গর্বিত ছাত্রছাত্রীরাও।
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.