প্রথম দফায় ভারতের ৯১টি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে!
বৃহস্পতিবার ভারতে সপ্তদশ লোকসভার নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট শুরু হয়েছে। এই দফায় পশ্চিমবঙ্গ (২), অরুণাচল প্রদেশ (২), আসাম (৫), বিহার (৪), ছত্তিশগড় (১), জম্মু-কাশ্মীর (২), মহারাষ্ট্র (৭), মনিপুর (১), মেঘালয় (২), মিজোরাম (১), নাগাল্যান্ড (১), ওড়িষ্যা (৪), সিকিম (১), অন্ধ্রপ্রদেশ(২৫), তেলেঙ্গানা (১৭), ত্রিপুরা (১), উত্তরপ্রদেশ (৮), উত্তরাখন্ড(৫), লাক্ষাদ্বীপ (১), আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (১)-দেশের এই ২০ রাজ্যের ৯১ টি লোকসভার আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
লোকসভার ভোটের সাথেই অন্ধ্রপ্রদেশ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ এবং ওড়িষ্যা রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনও চলছে। সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে নির্বাচন, চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। যদিও নকসাল অধ্যুষিত এলাকা ও উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে নিরাপত্তার কারণেই কোথাও সকাল ৭টা-বিকাল ৫টা, সকাল ৭টা-বিকাল ৪টা, বা কোথাও ৭টা-বিকাল ৩টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হবে। দুপুরের গরম এড়াতে সকালেই ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন বহু ভোটার। ভোট নেওয়া হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিং (ইভিএম) যন্ত্রে। ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোটটি দিয়েছেন কি না তা জানতে ইভিএম-এর সাথেই যুক্ত থাকছে ভিভিপ্যাট ব্যাবস্থা। এদিন সকালেই নাগপুরের একটি কেন্দ্রে ভোট দেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। ভোট দিয়ে তিনি জানান, ‘ভোটাধিকার আমাদের কর্তব্য, তাই প্রত্যেকেরই ভোট দেওয়া উচিত।’
এদিকে ভোট শুরুর কয়েক মিনিট আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের আরও বেশি সংখ্যায় গণতন্ত্রের সবথেকে বড় উৎসবে সামিল দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। ট্যুইট করে তিনি জানান, ‘আজ থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে। যেসব কেন্দ্রে প্রথম দফার ভোট হচ্ছে আমি সেই সব কেন্দ্রের ভোটারদের কাছে আরও বেশি সংখ্যায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে যুবক ও প্রথম ভোটারদের কাছে আমার আহ্বান তারা যেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।’
প্রথম দফায় দেশজুড়ে মোট ভোটার ১৪.২১ কোটি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭.২২ কোটি, নারী ভোটার ৮.৯৯ কোটি। মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে প্রায় ১.৭০ লাখ। দেশজুড়ে ১২৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ দফায় হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে আছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি (নাগপুর), কিরেন রিজিজু (অরুণাচল পশ্চিম), জেনারেল ভি.কে.সিং (গাজিয়াবাদ), সত্যপাল সিং (ভাগপত), মহেশ শর্মা (গৌতম বুদ্ধ নগর), হংসরাজ আহির (চন্দ্রপুর)। এছাড়াও রয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ (কালিয়াবর), উত্তরাখন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত (নৈনিতাল), এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি, রাষ্ট্রীয় লোকদল প্রধান অজিত সিং এবং তার পুত্র জয়ন্ত চৌধুরীর মতো প্রার্থীরা।
ভোট অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু করতে দেশজুড়ে ১,৬৯,৪০০ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সশস্ত্র বহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও স্পর্শকাতর কেন্দ্রে অতিরিক্ত নজরদারি হিসাবে সিসিটিভি ক্যামেরা, ড্রোন, টহলদারি পুলিশ ভ্যানসহ সবধরনের ব্যবস্থা রাখছে।এদিকে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার-এই দুইটি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হচ্ছে। দুইটি কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৬ জন। দুইটি কেন্দ্রে ১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজ্যের দুইটি লোকসভা কেন্দ্রে ৩৮৪৪টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুইটি কেন্দ্রেই এবার চতুর্মুখী লড়াই হচ্ছে। কোচবিহারে প্রধান লড়াই হবে তৃণমূলের প্রার্থী পরেশচন্দ্র অধিকারী ও বিজেপির নিশীথ প্রামাণিকের মধ্যে। এছাড়াও বিপক্ষদের শক্ত লড়াই দিতে পারেন কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী ও বাম প্রার্থী গোবিন্দ রায়। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের টিকিটে লড়ছেন দশরথ তিরকে, বিজেপির প্রার্থী জন বার্লা, কংগ্রেসের মোহনলাল বসুমাতা, বামেদের প্রার্থী মিলি ওরাওঁ। তবে ভোট শুরু হতেই রাজ্যের কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে অশান্তির খবর পাওয়া গেছে। কোচবিহারে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ার অভিযোগ রয়েছে। আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতায় বুথ ভাঙচুড়ের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। কয়েকটি বুথে ইভিএম বিভ্রাটের খবরও পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, ভারতে এবার মোট ৭ দফায় (১১, ১৮, ২৩, ২৯ এপ্রিল এবং ৬, ১২, ১৯ মে) ৫৪৩ টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হবে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটির মতো। নতুন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১.৬০ কোটি। গণনা আগামী ২৩ মে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.