সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    সোনালি আঁশে অস্থিরতা কেন?

    পাট

    রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে বিরাজ করছে অস্থিরতা। বিভিন্ন দাবিতে পাটকল শ্রমিকরা রাস্তায় নেমেছেন। মজুরি কমিশন-২০১৫ বাস্তবায়ন, বকেয়া পরিশোধ, বেতনভাতা পরিশোধ, গ্র্যাচুইটি, পিএফ ফান্ডের টাকা প্রাদন, বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, অবসর শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধসহ ৯ দফা দাবি তাদের।সুদিনে ফেরা পাটের গর্বিত পথচলায় শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি আবারও একটি বিবর্ণ বার্তা বয়ে এনেছে। পত্রিকান্তরে গেল কয়দিনের পাটকল সংক্রান্ত সংবাদ একসময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাটের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি করেছে।

    বিশ্বে আমাদের পাট ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর অব্যাহত লোকসান পাটকে ফের দুর্দিনের পথে নিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বেসরকারি পাটকলগুলো ভালো করলেও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো কেন লোকসানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে সেটাই বড় প্রশ্ন।এর আগে গত বছরের শুরুতে বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন গঠন, বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে সারা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোয় ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘট পালিত হয়েছিল। তখন ধর্মঘটে নামা শ্রমিকরা অভিযোগ করেছিলেন, ‘বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণেই মূলত রাষ্ট্রায়ত্ত মিলগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। রয়েছে দূরদর্শিতার অভাব ও গাফিলতি। এর দায় বর্তাচ্ছে শ্রমিকদের ওপর।

    লোকসানের অজুহাত তুলে পাটকল শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওনা দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে।’ এর বিপরীতে বিজেএমসির মহাব্যবস্থাপক গাজী শাহদাৎ হোসেন বলেছিলেন, ‘এখন পাট কিনে দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। কারণ, সবকিছুই প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। আর বিজেএমসি যেহেতু সরকারের প্রতিষ্ঠান, তাই যেভাবে প্রতিষ্ঠানটি ভালো চলবে সরকার সেভাবেই ব্যবস্থা নেবে।’ সেই ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস যেন আশ্বাসেই ব্র্যাকেটবন্দি থেকেছে।শ্রমিকদের কল্যাণে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বিধায় পাটকল শ্রমিকরা আবারও পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন। এ নিয়ে ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোয় কয়েক দফা ধর্মঘট হয়েছে। এভাবে বারবার ধর্মঘটের কারণে পাটশিল্প খাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

    পাটের উর্বর ভূমি বাংলাদেশ। তারপরও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো কেন বারবার লোকসানে পড়ছে? সরকার যদি পাট শিল্পের দিকে নজর দেয় তাহলে সত্যিই পাটের সুদিন ফিরে আসবে। পাট থেকে রেকর্ড পরিমাণ আয় করতে পারবে দেশ। সেই সম্ভাবনা অতি উজ্জ্বল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে, ২০১৯ সালের মধ্যে সদস্যভুক্ত সব দেশ পণ্যের মোড়কসহ সব ব্যাগে প্লাস্টিক ও কৃত্রিম আঁশজাত উপজাত দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ করবে।এক্ষেত্রে সুখবর দিয়েছেন বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তারা পাটের জন্ম রহস্যের (জেনোম) তথ্য দিয়ে উদ্ভাবন করেছেন নতুন জাতের পাটবীজ, যা থেকে প্রায় তুলার সুতার মতো স্বচ্ছ আঁশ উৎপাদন করা সম্ভব হবে অচিরেই।

    এই সুতা দিয়ে উন্নতমানের জামদানিসদৃশ কাপড় উৎপাদন করা সম্ভব হবে। পাট নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে নিয়োজিত শ্রমিক সমাজের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে পাটের সুদিন ফেরার বিপরীতে দুর্দিন চলতে থাকবে।

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !