ভুল স্বীকার করলেন ফেরদৌস
‘অভিনয়শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয়শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সবার মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভালো লাগে, আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। এখানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু। যাঁদের সঙ্গে আমি সব সময়ে হৃদ্যতা অনুভব করি। এ জন্য বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে আমি এখানে চলে আসি।’ কথাগুলো নিজের ফেসবুক পেজে গতকাল বুধবার লিখেছেন নায়ক ফেরদৌস।
ফেরদৌস আরো বলেন, ‘ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সকলের মতো আমারও আগ্রহের জায়াগায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবাগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করি। এটা পূর্বপরিকল্পনার কোনো অংশ ছিল না। শুধু আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোনো বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সব রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগেও বলেছি, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগতাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল।’
ফেরদৌস ঘটনাটি নিয়ে ক্ষমাও চেয়ে বলেন, ‘যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন। আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনোভাবেই উচিত নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’
ভারতের রায়গঞ্জের প্রার্থী কানাইয়ালালের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন ফেরদৌস। তবে এটিকে ভালোভাবে নেয়নি কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।ভারতের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কীভাবে বিদেশি নাগরিককে দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে—সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দেশটির নির্বাচন কমিশনের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেছে বিজেপি। একই সঙ্গে ভিসা আইনের শর্ত লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশি এই চিত্রনায়ককে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা।
তবে শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার না হলেও ভারত সরকারের কালো তালিকায় নাম উঠিয়ে দেশে ফেরেন ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ খ্যাত নায়ক ফেরদৌস গত ১৬ এপ্রিল।
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.