আজ চৈত্রসংক্রান্তি, কাল পহেলা বৈশাখ
জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি’ এই প্রণতির ভেতর রাত পোহালেই নতুন দিন। পূর্বদিগন্ত উদ্ভাসিত করে ভোরের নরম আলো রাঙিয়ে দেবে চরাচর, স্বপ্ন, প্রত্যাশা। নব সম্ভাবনায় সূচিত হবে নববর্ষ।চৈত্রসংক্রান্তি আজ। বাংলা সনের সবশেষ মাস চৈত্রের শেষ দিন। এক ক্রান্তি হতে উঠে আরেক ক্রান্তিতে সংক্রান্তি। বাংলা সনের সমাপনী মাস চৈত্রের এ শেষ দিনটি সনাতন বাঙালির লৌকিক আচারের ‘চৈত্র সংক্রান্তি’। হিন্দু সম্প্রদায় বাংলা মাসের শেষ দিনে শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস ক্রিয়াকর্মে কাটান।মূলত স্বামী, সংসার, কৃষি, ব্যবসার মঙ্গল কামনায় লোকাচারে বিশ্বাসী নারী ব্রত পালন করেন। আচার অনুযায়ী এ দিনে বিদায় উত্সব পালন করে ব্যবসায়ী সম্প্র্রদায়। দোকানপাট ধুয়ে-মুছে বিগত বছরের যত সব জঞ্জাল, অশুচিতাকে দূর করতে চায়। কারণ রাত পেরোলেই খোলা হবে ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশের নতুন খাতা। সে উত্সবের চিরচেনা নাম ‘হালখাতা’। ওই উত্সবে পরিচ্ছন্ন থাকে বিপণী প্রতিষ্ঠান, ধূপের সুগন্ধি ভারী করে রাখে ঘরের পরিবেশ। রেওয়াজ অনুযায়ী এই দিনটিই সারা বছরের খরিদ্দারদের কাছে বকেয়া টাকা তোলার শুভদিন ভাবা হয়।
চৈত্রসংক্রান্তির সবচেয়ে বড় আয়োজন চড়ক পূজা। চৈত্র মাসজুড়ে সন্ন্যাসীরা উপবাস, ভিক্ষান্নভোজন প্রভৃতি নিয়ম পালন করেন। সংক্রান্তির দিন তারা শূলফোঁড়া, বাণফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছে ঝোলে। আগুনের ওপর দিয়ে হাঁটে। শারীরিক কসরত দেখতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসে জড়ো হয় চড়কমেলা-গাজনের মেলায়। মেলার সঙ্গে বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক ও লৌকিক দেবতার নাম সম্পৃক্ত। যেমন- শিবের গাজন, ধর্মের গাজন, নীলের গাজন ইত্যাদি। তবে চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনে এখন নতুন নতুন উপাদান অনুষঙ্গ যুক্ত হচ্ছে।
এদিকে আদিবাসী সম্প্র্রদায় এ দিনে পালন করে বৈসাবি উত্সব। নানা আয়োজনে চৈত্রসংক্রান্তির পার্বণ আবার ঠিক একই সঙ্গে দুয়ারে কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। রাত শেষ হলেই নতুন দিন, তবে এটা শুধু নতুন দিনই নয়, নতুন বছরও বটে। নতুন বর্ষ। বৈশাখকে বরণ করতে সবখানেই এখন চলছে সাজসাজ রব।
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.