সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    কবুতরের রাণীক্ষেত রোগ এবং তার প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়!

    1186083_10201690742540813_1700068103_n

     আমি  ২০১৮ সালে আমার "Angry Bird" কবুতরের খামার শুরু করেছিলাম। কিছুদিন পর কয়েকটি কবুতর কিনে অানার পর সবুজ পায়খানা ও চুনা পায়খানা করতে শুরু করে দেয়। পরদিন ২টি কবুতর মারা যায়। এই হল শুরু তারপর থেকে প্রতিদিন ২টা চারটা করে মরতে থাকে। আর আমার পুরো দেশি কবুতরের লফট মরে শেষ। উন্নত জাতের দেশি-বিদেশী ১৫টা কবুতর মারা যায়। কিছু দেশী ও উন্নত জাতের কবুতর বেঁচে থাকলেও ওজন কমে টাল হয়ে যায়। এরপর অনলাইনে ভিডিও থেকে, ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ও নিজস্ব গবেষণার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করি। তাই আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা আপনাদের জন্য বলছি। 

    । রানীক্ষেত রোগঃ রানীক্ষেত কবুতরের ভাইরাস জনিত তীব্র ছোঁয়াচে রোগ । একবার আক্রন্ত হলে সহজে কবুতর বাঁচানো সম্ভব হয় না। মৃত্যুর হার ৯৮%। কপাল ভাল হলে খুব কমই কবুতরকে বাঁচানো সম্ভব হয়।টিকাই একমাত্র সমাধান। 

    রোগের লক্ষণঃ
    ক। প্রথমদিকে আক্রামত্ম পাখি দলছাড়া হয়ে ঝিমাতে থাকে। 
    খ। শরীরে কাপুনি হয় এবং ঘন  ঘন শ্বাস গ্রহন করে। 
    গ। সাদাটে সবুজ পাতলা পায়খানা করে ও দুর্বল হয়ে পড়ে। 
    ঘ। মুখ হা করে থাকে, কাশতে থাকে, নাক মুখ দিয়ে শেস্নষ্মা ঝরে। 
    ঙ। শরীর শুকিয়ে যায়। চ। মাথার ঝুটি ও গলার ফুল কালচে হয় এবং চোখ মুখ ফুলে যায়।ছ। ডিমপাড়া মুরগির ডিম উৎপাদন কমে যায়, ডিমের খোসা পাতলা ও খসখসে হয় এবং অপুষ্ট ডিম উৎপাদন হয়


    রোগ প্রতিরোধঃ প্রতিরোধই এ রোগ দূরীকরনের একমাত্র উপায়। তাই সময়মত পাখিদের টিকা প্রদান করতে হবে।কবুতরকে ০৪ মাস পরপর সুস্থ ও সবল কবুতরকে রাণীক্ষেতের টিকা প্রদান করতে হয়। ডিমে তা দিচ্ছে বা কৃমি অাক্রান্ত কবুতরকে টিকা না দেওয়াই ভাল। 

    বিসিআরডিবি টিকাঃ ১/৩ দিনের সুস্থ কবুতরের বাচ্চাকে। 
    আরডিবি টিকাঃ ৬ সপ্তাহের বা তার চেয়ে বেশি বয়স্ক কবুতরকে।


    টিকা কোথায় পারেনঃ কবুতরের বিসিআরডবি টিকা বা আরডিবি টিকা নাম মাত্র মূল্যে (১৫ টাকা) জেলা বা উপজেলা পশু হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। বিসিআরডবি  বা আরডিবি টিকা মুরগি ও কবুতরের জন্য একই টিকা। 

    রোগ প্রতিকারঃ যদি রানীক্ষেত হয়ে যায়, তবে বুঝা মাত্রই চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। 
    ক। লক্ষন দেখা দেওয়ার সাথে সাথে অসুস্থ কবুতরকে অালাদা করতে হবে।  
    খ। কবুতর নিজে খেতে না পারলে হাত দিয়ে খাওয়াতে হবে। 
    গ। Tylovet 10g  বা Doxy-A-Vet খাওয়াতে পারেন । দিনে এক বা দু বার ১গ্রাম পাউডার ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০গ্রাম পানি ১ টি কবুতরকে খাওয়াতে হবে। 

    টিকা প্রদানের পূর্বে সতর্কতাঃ
    * কবুতরকে ধরার সময় যত্ন সহকারে ধরতে হবে ।
    * কবুতরকে যে কোন ধরনের ধকল মুক্ত অবস্থায় টিকা প্রয়োগ করতে হবে ।
    * অসুস্থ কবুতরকে টিকা দেয়া যাবে না ।
    * টিকা প্রদান উপকরণ ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে ।
    * আবহাওয়া যখন ঠান্ডা সেসময়ে টিকা প্রদান করতে হবে।

    টিকা ব্যবহারের সাধারণ নিয়মাবলীঃ
    * প্রতিষেধক টিকা সবসময়ই সুস্থ কবুতরকে প্রয়োগ করতে হয় ।
    * সংক্রামক রোগ বা কৃমিতে আক্রান্ত পশু-পাখিকে টিকা প্রয়োগ করা যাবে না। তাতে কাঙ্খিত মাত্রায় প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয় না বরং পাখির আরও ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে ।
    * টিকা বীজ কোন অবস্থাতেই সূর্যালোকের সংস্পর্শে আনা যাবে না ।
    * ব্যবহারের সময় মিশ্রণ এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাত্র, সিরিঞ্জ-নিড্‌ল, ব্যবহৃত তরল পদার্থ, টিকা ব্যবহারকারীর হাত ইত্যাদি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও বীজাণুমুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
    * জীবাণুমুক্তকরণের জন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা যাবে না ।
    * প্রতিষেধক টিকা সকালে বা সন্ধ্যার সময় ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রয়োগ করা ভাল ।
    * ব্যবহারের জন্য গোলানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা ব্যবহার করে ফেলা উচিত। গোলানোর পর গরমের দিনে ১ ঘন্টা এবং শীতের দিনে ২ ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করে ফেলতে হবে ।
    * মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা টিকার সাধারণ রং পরিবর্তিত হয়ে গেলে সে টিকা আর ব্যবহার করা যাবে না ।
    * টিকা পরিবহনের ক্ষেত্রে ঠান্ডা অবস্থায় পরিবহন নিশ্চিত করা প্রয়োজন । তাপ প্রতিরোধক পাত্রের মধ্যে বরফ দিয়ে টিকা বীজ পরিবহন করতে হয়। বরফ গলে গেলে পুনরায় বরফ দিতে হয় ।
    * ব্যবহারের সময় টিকা মিশ্রণের পাত্র ছায়াযুক্ত স্থানে বরফ দেওয়া বড় পাত্রের মধ্যে রাখা যাবে না ।
    * ভাইরাস জনিত রোগ প্রতিরোধক টিকা প্রয়োগকালে টিকা প্রয়োগ স্থান পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে নিতে হবে এবং এই জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না ।
    * গোলানো অব্যবহৃত টিকা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য রাখা যাবে না।



    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !