খাদ্যের অভাবে ঝুঁকিতে ৬ কোটি টাকার মা-মাছ
লহ্মীপুরের রায়পুরে এশিয়ার বৃহত্তম মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রে অর্থ বরাদ্ধ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাছের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মা-মাছগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য না পেয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ১২ মেট্রিকটন মা-মাছের বর্তমান বাজারমূল্য ৬ কোটি টাকার বেশি। প্রতি বছর লাভের মুখ দেখলেও এবার খাদ্য সংকটের কারণে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি।
মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (ফিশ হ্যাচারী) সূত্রে জানা যায়, মাছের খাদ্যের জন্য বছরে দু'বার মৎস্য অধিদপ্তর হতে অর্থ বরাদ্ধ দেওয়া হয়। ঐ অর্থ দিয়ে খৈল ও ভূসিসহ বিভিন্ন প্রকার মাছের খাদ্য কেনা হয়। ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে অধিদফতর থেকে সর্বশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয় পাঁচ লক্ষ টাকা। বরাদ্দ পাওয়ার আগেই ঐ টাকা খরচ হয়ে যায়। কারণ অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে খরচ, পরে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ৯ মাসেও কোনো বরাদ্দ মেলেনি। কর্তৃপক্ষ স্থানীয় দোকান থেকে ধার-দেনা করে খাদ্য কিনে পুকুরে সরবরাহ করেছে। এতে দোকানগুলোতে প্রায় আট লক্ষ টাকা বকেয়া পড়েছে, তারা আর এখন খাদ্য দিতে চাচ্ছে না। এতে চার সপ্তাহ ধরে ৬৯টি পুকুরে পর্যাপ্ত খাদ্য দেওয়া যাচ্ছে না।
রায়পুর মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র জানায়, মা-মাছগুলো থেকে রেণু উৎপাদন করা হয়। দেশের মৎস্যচাষীদের কাছে রায়পুর হ্যাচারী রেণুর বেশ চাহিদা রয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসে এ চাহিদা বেশি থাকে। সরকার গত অর্থবছরে এ কেন্দ্রে রেণুপোনা বিক্রির লক্ষমাত্র নির্ধারণ করে ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ১ লাখ ১৪ হাজার টাকার রেণুপোনা বিক্রি করা ঐ সময়।
রায়পুর কেন্দ্রের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহিদুর রহমান বলেন, গত ৬ মাস থেকে মাছের খাদ্যের অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। বরাদ্দের জন্য একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুকুরে পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকার কারণে রুই, কাতলা, মৃগেল ও সিলভার কার্পজাতীয় মা-মাছগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এখানে ৬৯টি পুকুরে বর্তমানে ১২ মেট্রিকটন মা-মাছ রয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৬ কোটি টাকার বেশি। খাদ্য বরাদ্দ না পেলে তা হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছি।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.