রেলে নিরাপত্তা জোরদারে চালু হচ্ছে বিশেষ প’স ডিভাইস
রেলে বিনা টিকিটে যাত্রীভ্রমণ বাড়ছে। বিনা টিকিটের যাত্রীদের আটক, জরিমানা আদায় করেও এ প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না। টিকিট চেক করতে গিয়ে অবৈধ যাত্রীদের হাতে কখনও কখনও মারধরের শিকার হচ্ছেন চেকাররা। বিনা টিকিটে ভ্রমণ রোধ এবং ট্রেনে নিরাপত্তা জোরদারে চালু হচ্ছে প’স ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে চালু হচ্ছে ‘ই-প্রসিকিউশন’।এই পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয় ই-সার্ভারের মাধ্যমে যাত্রীসেবা ট্রেনগুলোর টিকিট চেকিংসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ‘লাইভ অভিযান’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলে যাবে। এতে বিনা টিকিটে ভ্রমণপ্রবণতা কমবে বলে মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ে অপারেশন বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানে ৩৫০টি ট্রেন দৈনিক যাত্রীসেবায় নিয়োজিত। এসব ট্রেনে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ যাত্রী বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন। তাদের আটক-জরিমানা করার পরও থামছে না এই অসাধুতা। প্রতিদিন অর্ধেক যাত্রী বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন। তার ওপর আসনের সমান সংখ্যক যাত্রী দাঁড়িয়ে, দরজায় ঝুলে বা ছাদে উঠে গন্তব্যে যাচ্ছেন। রেলওয়ের বাণিজ্য বিভাগ প্রতিমাসে পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে শতাধিক অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিবার কমবেশি এক কোটি ২৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এই অসাধুতা রোধ করা গেলে রেলের আয় বহুগুণ বাড়ত।এদিকে লোকবলের অভাবে ‘টিকিট চেকিং অভিযান’ও ঠিকমতো পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। জরিমানা আদায়কালে অনেক সময় হামলার শিকার হতে হয়। ‘ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার’ না থাকায় হামলাকরীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া যায় না। ২০০৭ সালের ২৯ অক্টোম্বর সংস্থাপন মন্ত্রণালয় রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ‘ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার’ রহিত করে। এতে রেলওয়েতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাচ্ছে না। ফলে বিনা টিকিটের যাত্রীদের উৎপাত বাড়ছেই। রেলওয়ে কর্মকর্তারা তাদের ‘ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার’ ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন)মিয়াজাহান যুগান্তরকে জানান, রেলে অভিযানকালে শত শত বিনা টিকিটের যাত্রীকে জরিমানা করা হয়। কিন্তু লোকবলের অভাবে ৮০ শতাংশই পার পেয়ে যায়। এসব ঠেকাতেই বিশেষ প’স ডিভাইস চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। ডিভাইস কেনা হয়েছে। প’স ডিভাইসগুলো কেন্দ্রীয় সার্ভারে সংযুক্ত থাকবে।অপারেশন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বিশেষ ডিভাইসের মাধ্যমে শুধু যাত্রী নয়, টিকিট চেকারদের অনিয়মও চিহ্নিত করা যাবে। ভয়েজ রেকর্ডিংসহ অনিয়মের তথ্য পৌঁছে যাবে কেন্দ্রীয় সার্ভারে। ট্রেনে অবৈধ মালামাল উঠানো কিংবা সন্দেহজনক যাত্রীদের ছবিও উঠানো যাবে এ ডিভাইস দিয়ে। এমনকি ট্রেনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অনিয়ম হলে তা ওই ডিভাইসে ধারণ করা যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, পুরো রেলকে ডিজিটালাইজড করার বিকল্প নেই।
রেলপথ সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন যুগান্তরকে জানান, রেলওয়েতে ‘ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার’ থাকা জরুরি। প্রথম পর্যায়ে প’স ডিভাইস দিয়ে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করতে চায় রেল কর্তৃপক্ষ। সবকিছু ঠিক থাকলে, যথাযথভাবে সব কাজ সম্পন্ন করা গেলে তা সর্বত্র চালু করা হবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.