৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বাবা-মাকে পুলিশে দিল মেয়ে
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় কলেজছাত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখায় তার বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোরে উপজেলার দাপা শিহাচর শাহ জাহান রোলিং মিল এলাকার লোকমান মিয়ার ভাড়াটিয়া বাড়ির ৫ম তলার ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় শিকলে বাঁধা অবস্থায় সিদ্ধেশ্বরী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া আক্তারকে (১৯) উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানার দক্ষিণ ভাটামারা গ্রামের মৃত আ. রশিদ পাটোয়ারীর ছেলে বশির উদ্দিন (৫৫) ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪১)।
কলেজছাত্রী সাদিয়া আক্তার জানান, কলেজে আসা-যাওয়ার পথে হিন্দু ধর্মের সাগর নামে এক যুবক তাকে উত্ত্যক্ত করত। গত ৭ মাস যাবত সাগরকে সে চিনে। এর মধ্যে একাধিকবার সাগর তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। এতে সে বাধ্য হয়ে তার প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করে। ওই সময় সাগর কথা দিয়েছিল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তাকে বিয়ে করবে। কিন্তু সাগর তা না করে প্রেমের সম্পর্কে তার সঙ্গে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্ক গড়ে। বিষয়টি তার বাবা-মা জানতে পেরে তাকে বাধা দেয়। কিন্তু সে বাধা অমান্য করে ওই যুবকের কাছে চলে যায়।
আরও জানান, এ ঘটনায় কয়েক দিন ধরে তার বাবা-মা শিকল দিয়ে পা বেঁধে তাকে ঘরে আটকে রাখে। পরে চেষ্টা করে শিকল ছুটাতে ব্যর্থ হয়ে সাগরের কথা মতো জাতীয় জরুরি নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন করে বলেন, ফতুল্লার ওই বাসায় তাকে শিকল দিয়ে কিছু লোকজন বেঁধে রেখেছে। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, জাতীয় জরুরি নাম্বার ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ফতুল্লার দাপা শিহাচর শাহ জাহান রোলিং মিল এলাকায় পুলিশ পাঠাই। সেখানে গিয়ে একটি বাড়িতে তরুণীকে শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থা পুলিশ উদ্ধার করে। এঘটনায় ওই তরুণীর বাবা-মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এঘটনায় পুলিশের এএসআই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি আরো জানান, প্রাপ্তবয়স্ক কন্যাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা মানে আইনগত ভাবে দন্ডবিধি আইনের ৩৪২ ধারার অপরাধ। ওই মেয়েটা আমাকে জানিয়েছে- তাকে ১৪ এপ্রিল থেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল তার বাবা মা। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে পুলিশ তাকে চিকিৎসা দিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মুঈনুল ইসলাম জানান, এ মামলায় ওই মেয়ের বাবা-মাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.