আবারো বাণিজ্য যুদ্ধের পথে যুক্তরাষ্ট্র-চীন
চীনা পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ২০ হাজার কোটি ডলারের চীনা রফতানি পণ্যে ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর কারণে খোদ মার্কিন বাণিজ্য ও ভোগ্যপণ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের কারণে ১০ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ হাজার কোটি ডলারের পণ্যে শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে চীন। বাণিজ্যিক ঘাটতি কমাতে রাশিয়ার সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে বেইজিংকে পরামর্শ গবেষকদের।
গেল শুক্রবার ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের চীনা রফতানি পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে দ্বিগুণেরও বেশি করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, আরো ৩২ হাজার ৫শ' কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্কারোপের পূর্বাভাসও দেন তিনি। আলোচনা আর সমঝোতার ঠিক আগ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে চীন।ওয়াশিংটনের এমন হঠকারি সিদ্ধন্তের পর শুল্কারোপের নেতিবাচক প্রভাব এবং দুই দেশের লাভ-ক্ষতির হিসেব কষতে শুরু করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, নিজেদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিলেও এতে হিতে বিপরীত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভোগ্যপণ্যে অস্থিরতা সৃষ্টির পাশাপাশি বিপাকে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।
চীন গবেষক গাও লিঙ্গুইন বলেন, চীনা পণ্যে শুল্কারোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে উপকৃত হলেও তিন থেকে ছয় মাস পর দেশটির বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে। যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা ও পাইকারি বাজারে ভোগ্য পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। শুল্ক বাড়ানোর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যে ৯০ শতাংশ হারে দাম বেড়ে যাবে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ভোক্তা পর্যায়ে।এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে চীন-রাশিয়াকে এক হয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। গবেষক ও কলামিস্ট পাভেল ফেলগেনয়ার বলেন, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কোন্নয়ন হলে আন্তর্জাতিক যেকোনো সমস্যা সহজেই সমাধান করা যাবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য রাশিয়া-চীন সম্পর্ক জোরদার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে একের পর এক সঙ্কট সৃষ্টি করছে তাতে চীন ও রাশিয়ার দর্শকের ভূমিকা করতে পারে না।
গেলো বছর ২৫ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্কারোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে, ১১ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপ করে চীন। আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চললেও ট্রাম্পের হঠাৎ সিদ্ধান্তে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.