মধ্যপ্রাচ্যে হরমুজ প্রণালী কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

পারস্য উপসাগরে সৌদির দুই তেলের ট্যাঙ্কারে হামলা চালানোর ঘটনায় বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেল সরবরাহের নিরাপত্তাকে দুর্বল করার চেষ্টা হিসাবে এ ঘটনাকে নিন্দা জানানো হয়েছে।সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাত বলছে, হুরমুজ প্রণালী থেকে বের হওয়ার পরই ফুজাইরা বন্দরের কাছে চারটি জাহাজে হামলা চালানো হয়। তবে এ হামলার পেছনে কে রয়েছে তা জানানো হয়নি। তবে ওই এলাকাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে ‘ভয়াবহ এবং চিন্তিত হওয়ার মতো’ ঘটনা অভিহিত করে এর পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।হরমুজ প্রণালী মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং এর বাইরে তেল সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই অঞ্চলের প্রাণ হরমুজ প্রণালী কয়েক দশক ধরে আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে।

হরমুজ প্রণালী কী?
হরমুজ প্রণালীর জলাধারের প্রবাহ ইরান ও ওমানকে পৃথক করেছে, এটি উপসাগরীয় অঞ্চল ওমান ও আরব সাগরের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করেছে।এ প্রণালী সংকীর্ণ বিন্দুতে ২১ মাইল (৩৩ কিলোমিটার) প্রশস্ত, তবে উভয় দিক থেকে জাহাজ চলাচলের রাস্তা শুধুমাত্র দুই মাইল (৩ কিলোমিটার) প্রশস্ত।
কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক তথ্য মতে, প্রতিদিন ১৮.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এই প্রণালী দিয়ে সরবরাহ হয়। এটি ২০১৬ সালের হিসাব। ওই হিসাবে বলা হয়েছে, এই তেল সরবরাহের মধ্যে ৩০ শতাংশ অপরিশোধিত ও বাকি অংশ বিভিন্ন তরল তেল।

তেল বিশ্লেষণ সংস্থা ভরটেক্সা তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালে এই প্রণালী দিলে ১৭.২ মিলিয়ন ব্যারেল (বিপিডি) অপরিশোধিত তেল সরবরাহ হয়েছে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি (বিপিডি) তেলের সরবরাহ ছিল ১৭.৪ মিলিয়ন ব্যারেল।
বিশ্বে ১০০ মিলিয়ন বিপিডি তেলে চাহিদা রয়েছে এর এক পঞ্চামাংশ এ প্রণালী দিয়ে সরবরাহ হয়।অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে উল্লেযোগ্য হলো সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ইরাক। এসব দেশগুলো পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক সংগঠনের সদস্য। যারা জাহাজে পানিপথে তেল সরবরাহ করে।

এই প্রণালীটি প্রাকৃতিক তরল গ্যাস (এরএনজি) সরবরাহেরর জন্য বিশ্বের সরচেয়ে বড় রফতানিকারক দেশ কাতার ব্যবহার করে আসছে।১৯৮০-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরান-ইরাকের যুদ্ধে দুই পাশ থেকে তেল রফতানিকারকদের হয়রানি করা হয়। যেটি ট্যাঙ্কার যুদ্ধ নামে পরিচিত।বাহরাইনে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম ফ্লিট এসব এলাকার বাণিজ্যিক জাহাজগুলো রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.