আমিরাত উপকূলে তেল ট্যাংকারে হামলায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি
মধ্যপ্রাচ্যে নোঙর করা চারটি তেল ট্যাংকারে নাশকতামূলক হামলায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেসের উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার আরব নিউজের খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।আরব আমিরাত জানিয়েছে, দুটি সৌদি, একটি নরওয়েজিয়ান ও একটি আমিরাতের জাহাজে নাশকতামূলক হামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
এ হামলায় কারা দায়ী, তাও প্রকাশ করেনি আরব আমিরাত। এদিকে দেশটির উপকূলে তেল ট্যাংকারে হামলার নেপথ্যে করা তা নিশ্চিত হওয়ার পর যুদ্ধ ছাড়া যৌক্তিক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত।যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িত এক মার্কিন কর্মকর্তা সোমবার বলেন, গত রোববারের এ হামলার নেপথ্যশক্তি হিসেবে ইরানকে সন্দেহ করা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নেই।
যদিও ইরান সব অভিযোগ অস্বীকার করে যাচ্ছে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে রাষ্ট্রদূত জন আবি জায়েদ বলেন, কী ঘটেছে, তা জানতে আমাদের একটি সম্পূর্ণ তদন্ত চালাতে হবে। কেন এটা ঘটেছে, তা জানার পর যুদ্ধ ছাড়া ভিন্ন কোনো যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে।তিনি বলেন, একটি সংঘাতে জড়ানোর মধ্যে ইরানের স্বার্থ নেই, আমাদের স্বার্থ নেই কিংবা সৌদি আরবেরও কোনো স্বার্থ নেই।এদিকে আরব আমিরাতের উপকূলে চারটি তেল ট্যাংকারে নাশকতামূলক হামলাকে ইসরাইলি দুষ্কৃতি বলে আখ্যায়িত করেছেন ইরানের পার্লামেন্টারি মুখপাত্র বাহরুজ নেমাতি।
মঙ্গলবার তিনি এ মন্তব্য করেন বলে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র সংবাদ সংস্থার(আইআরএনএ) বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে।বাহরুজ বলেন, আমিরাতের জাহাজে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তা ইসরাইলি দুষ্কৃতি। তবে হামলার ক্ষেত্রে ইসরাইল কী ধরনের ভূমিকা রেখেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ দেননি তিনি।সোমবার সৌদি আরব বলেছে, আরব আমিরাতের উপকূলে যে জাহাজে হামলা হয়েছে, তার মধ্যে দুটি তাদের। ইরানের সঙ্গে মার্কিন উত্তেজনার মধ্যে অপরিশোধিত তেল সরবরাহের নিরাপত্তাকে খর্ব করার চেষ্টার অংশ হিসেবেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
এর আগে আরব আমিরাতের জলসীমার কাছে চারটি বাণিজ্যিক জাহাজ নাশকতামূলক হামলা হয়েছে। যার দুটির স্বত্বাধিকারী সৌদি আরব।রোববার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বিবৃতিতে জানা গেছে।এমন একসময় এ ঘটনা ঘটেছে যখন ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনার পারদ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। তবে কী ধরনের নাশকতা ঘটেছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি।আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইরান থেকে একশ ১৫ কিলোমিটার দূরে ফুজাইরার কাছে এই চারটি জাহাজে নাশকতা চালানো হয়েছে। এসব বাণিজ্যিক জাহাজে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা ছিলেন। আরব আমিরাত আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে ঘটনার তদন্ত করছে।
তবে ফুজাইরা বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। আরব আমিরাত জানিয়েছে, বাণিজ্যিক জাহাজকে নাশকতার লক্ষ্যবস্তু বানানো এবং ক্রু সদস্যদের জীবন হুমকিতে পড়ার এই ঘটনা ভয়ঙ্কর।এক্ষেত্রে এ ঘটনাকে সামুদ্রিক জলসীমায় নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করবে আরব আমিরাত।তবে সমুদ্রে বাণিজ্যিক জাহাজকে ইরান হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাবে বলে গত সপ্তাহে হুশিয়ারি জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন উপকূল প্রশাসন বলেছে, মে মাসের শুরু থেকে ইরান কিংবা তাদের আঞ্চলিক ছায়া বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে। এর আগে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ইরান।আরব উপসাগর ও ইরানকে আলাদা করে দেয়া এ প্রণালীটি বৈশ্বিক তেল ও গ্যাস পরিবহনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, লোহিত সাগর, বাব এল মানদেব ও আরব উপসাগরে মার্কিন সামরিক নৌযান, তেলট্যাংকারসহ বাণিজ্যিক জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে ইরান ও তার ছায়া বাহিনী।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.