‘জবাবদিহিতাহীন বিটিআরসি দিয়ে ৫জির সুফল পাওয়া সম্ভব নয়’

১৭ মে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের সেমিনার হলে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার খুব দ্রুতই ৫জি মোবাইল ইন্টারনেট সেবা জনগণকে দিতে চায়।তিনি বলেন, মাননীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেছেন যে, ২০২০-২০২১ সালের মধ্যে ৫জি চালু করবে সরকার। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন ৫জি চালু করার জন্য আমরা কি প্রস্তুত? এমনকি অপারেটররা? কেউই না। তবে সরকার কিভাবে ৫জি আনতে চাচ্ছে, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়পরায়ণতা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে নির্দেশ দিলেও অন্যান্য মন্ত্রণালয় পালন করলেও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর বাইরে। এ খাতের নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কোন প্রকার জবাবদিহিতা নেই।এই কমিশন ২০১৬ সালে গ্রাহকদের অভিযোগ নিয়ে গণশুনানী করেও আজ পর্যন্ত তার ফলাফল ঘোষণা করেনি। ভয়েস কলরেট বৃদ্ধি করার জন্য গ্রাহকদের মতামত না নিয়েই ভয়েস কলরেট বৃদ্ধি করেছে। ইন্টারনেটের মূল্য ও ভয়েস কলরেটের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের মতামতের তোয়াক্কা করে না এই প্রতিষ্ঠান।এরই ধারাবাহিকতায় অপারেটররা যত্রতত্র অফার, কলরেট বৃদ্ধি, কলড্রপ, ইন্টারনেট প্যাকেজে প্রতারণা করেই যাচ্ছে। যখন যে প্রযুক্তি তারা প্রয়োজন মনে করছে সে প্রযুক্তি যাচাই-বাছাই না করেই বা গ্রাহকদের সামর্থ্যের কথা চিন্তা না করেই গ্রাহকদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে গ্রাহকদের ডিভাইস পরিবর্তনের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গ্রাহক কি অর্জন করলো? তা ভেবে দেখা দরকার।আবার অপারেটররাও তরঙ্গ ক্রয়, সিম রিপ্লেসমেন্ট ও নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে উঠতে না উঠতেই নতুন বিনিয়োগ আসার ফলে মানসম্পন্ন সেবার চাইতে প্রতারণামূলক সেবাই গ্রাহকরা বেশি পাচ্ছে।মধ্যস্বত্ত্বভোগী অপারেটর আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স, এনটিটিএন, এমএনপি ও নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির কোন প্রকার জবাবদিহিতা নেই। অথচ গ্রাহকদের প্রদেয় অর্থেই প্রতিষ্ঠানগুলি পরিচালিত হয়। গ্রাহকদের সুসংগঠিত না হওয়ার দুর্বলতাকেও এরা কাজে লাগাচ্ছে।
সবচেয়ে অবাক ব্যাপার মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশও কমিশন বা অপারেটররা পালন করছে না। গ্রাহকদের মনে প্রশ্ন যেখানে থ্রিজি পাওয়া যায় না সেখানে নামে মাত্র ফোরজি দিয়েছে সরকার। এমতাবস্থায় যদি ফাইভজি প্রযুক্তি আসে তাহলে এটি শুধু কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে। গ্রাহকরা এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।তথ্য সংঘ দিবস সম্পর্কে মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, গত ১ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকের সংবাদে দেখা যায় মন্ত্রী, ভিআইপিসহ গ্রাহকদের নাম্বার ও তথ্য বিক্রির সংবাদ। এমনকি গ্রাহকদের ভয়েস কলের গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড প্রকাশের মত ঘটনা ঘটছে অহরহ।
এসকল কর্মকাণ্ডের জন্য অপারেটরদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয় না। হয় শুধু গণমাধ্যম ও মুক্তমনা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রকৌশলী উৎপল চন্দ্র দাস, আইটি প্রকৌশলী তন্ময় মালাকার, আমিনুল ইসলাম বুলু, এড. আবু বকর সিদ্দিক, বাপ্পী সরদার, আমানুল্লাহ মাহফুজ, রাজু আহমেদ খান প্রমুখ।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.