না দেখেই বিয়ে: অতঃপর বাসর ঘরে যা দেখলেন যুবক!
যুবতীর গুণের প্রশংসা শুনে তার প্রতি মুগ্ধ হয়ে না দেখেই বিয়ে করেন এক যুবক। স্ত্রীকে বাসরঘরে গিয়েই প্রথম দেখেন। কিন্তু স্ত্রীর ঘোমটা খুলতেই তিনি মনোবেদনায় বিষণ্ণ হয়ে পড়েন। দেখেন, তার পরম কাঙ্খিত স্ত্রী রূপসী নয়, কালো। তাই তিনি স্ত্রীর কক্ষ ত্যাগ করেন। মনের দুঃখে স্ত্রীর কাছে আর ফিরে আসেন না। নাম তার আমের বিন আনাস। অবশেষে স্ত্রী নিজেই তার কাছে যান। প্রিয় স্বামীকে বলেন, ‘ওগো! তুমি যা অপছন্দ করছো, হয়তো তাতেই তোমার কল্যাণ নিহিত আছে, এসো।’ অতঃপর আমের স্ত্রীর কাছে যান এবং বাসর রাতযাপন করেন।
কিন্তু দিনের বেলা স্ত্রীর অসুন্দর চেহারার প্রতি তাকাতেই তার মন খারাপ হয়ে যায় আবার। মনের দুঃখে আমের এবার বাড়ি ছেড়ে দেন। চলে যান বহুদূরে, অন্য শহরে। এদিকে বাসর রাতেই যে তার স্ত্রী গর্ভধারণ করেছেন, এ খবর তিনি রাখেন না। আমের ভিনদেশে লাগাতার বিশটি বছর কাটান।
বিশ বছর পর তিনি নিজ শহরে ফেরেন। এসেই প্রথমে নিজ বাড়ির কাছের সেই প্রিয় মসজিদে ঢোকেন। ঢুকেই দেখেন এক সুদর্শন যুবক পবিত্র কোরআনের মর্মস্পর্শী দরস পেশ করছেন। আর বিশাল মসজিদ ভরা মানুষ পরম আকর্ষণে তা হৃদয়ে গেঁথে নিচ্ছে। তাঁর হৃদয়গ্রাহী দরস শুনে আমেরের অন্তর বিগলিত হয়ে যায়। আমের লোকদের কাছে এই গুণী মুফাসসিরের নাম জানতে চাইলে লোকেরা বলেন, ‘ইনি ইমাম মালেক।’
আমের আবার জানতে চান, ‘ইনি কার ছেলে?’ লোকেরা বললো, ‘এই এলাকারই আমের বিন আনাস নামের এক ব্যক্তির ছেলে। যিনি বিশ বছর আগে বাড়ি থেকে চলে গেছেন, আর ফিরে আসেননি।’ আবেগে উত্তাল আমের ইমাম মালেকের কাছে এসে বললেন, ‘আমাকে আপনার বাড়িতে নিয়ে চলুন। তবে আমি আপনার মায়ের অনুমতি ছাড়া আপনার ঘরে প্রবেশ করবো না। আমি আপনার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবো। আপনি ভেতরে গিয়ে আপনার মাকে বলবেন, দরজায় একজন লোক দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি আমায় বলেছিলেন, তুমি যা অপছন্দ করছো, হয়তো তাতেই তোমার কল্যাণ নিহিত আছে।’ এ কথা শুনেই ইমাম মালেকের মা বললেন, ‘হে মালেক! দৌঁড়ে যাও, সম্মানের সঙ্গে উনাকে ভেতরে নিয়ে আসো, উনিই তোমার বাবা। দীর্ঘদিন দূরদেশে থাকার পর উনি ফিরে এসেছেন।’ এই হলেন সেই গুণবতী মা, যিনি ইমাম মালেক (রহ.)-এর মতো সন্তান গড়ে তোলার কারিগর। তাই রূপবতী নারী দ্বারা নয়, গুণবতী নারীদের মাধ্যমেই পৃথিবী আলোকিত হয়।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.