ডারউইনের ১০০০ বছর পূর্বেই বিবর্তনবাদের তত্ত্ব দেন যে মুসলিম দার্শনিক
বিবর্তনবাদ তত্ত্বের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন।
অন দ্য অরিজিন অব স্পেশিস নামে ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত বইতে চার্লস ডারউইন বলেছেন, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যাতে কোনো প্রাণী ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে আপন পরিবেশের জন্য বিশেষায়িত হতে হতে একসময় নতুন একটি প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়।কিন্তু চার্লস ডারউইনের আরও এক হাজার বছর পূর্বে বিবর্তনবাদ তত্ত্বের কথা বলেছিলেন ইরাকের মুসলিম দার্শনিক আবু উসমান আমর বাহার আলকানানি আল-বাসরি।
তবে ইতিহাসে তিনি আল-জাহিজ নামেই অধিক পরিচিত। প্রাকৃতিক নিয়মে প্রাণিকূলের মধ্যে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে তা তুলে ধরেছিলেন তার প্রজননসংক্রান্ত গ্রন্থ কিতাব আল-হায়ওয়ান বইতে।তার জন্ম হয়েছিল ৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে, দক্ষিণ ইরাকের বাসরা শহরে। তার জীবদ্দশাতেই তিনি ২০০টির মতো বই প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ এই আধুনিক কাল পর্যন্তও টিকে রয়েছে।তার বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে দ্য বুক অব অ্যানিমেলস বা প্রাণীবিষয়ক বইটি।
এটি একটি এনসাইক্লোপিডিয়ার মতো, যাতে সাড়ে তিনশ প্রাণীর পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।এই বইটিতে তিনি যেসব ধারণা তুলে ধরেছেন, যার সঙ্গে আধুনিককালের বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদে তত্ত্বের অনেক মিল পাওয়া যায়।আল-জাহিজ তার বইতে লিখেছেন, টিকে থাকার জন্য প্রাণীদের লড়াই করতে হয়। তারা তাদের খাদ্যের জন্য লড়াই করে। এ ছাড়া তারা নিজেরাই যাতে অপরের খাদ্য না হয়ে যায়, তার জন্যও লড়াই করতে হয়।
তিনি লিখেছেন, নিজেদের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে গিয়ে পরিবেশের নানা কারণে প্রাণীরা নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে এবং এভাবেই তারা নতুন নতুন প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়।তিনি আরও লিখেছেন, যেসব প্রাণী প্রজনন ঘটাতে টিকে থাকতে পারে, তারা তাদের সফল বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে পারে।
আল-জাহিজের এসব ধারণা তার পরবর্তী অন্যান্য মুসলিম চিন্তাবিদকেও প্রভাবিত করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আল-ফারাবি, আল-আরাবি, আল বিরুনী এবং ইবনে খালদুন।পাকিস্তানের 'আধ্যাত্মিক পিতা' মোহাম্মদ ইকবাল, যিনি আল্লামা ইকবাল নামেই অনেক বেশি পরিচিত, তিনিও আল জাহিজের এসব তত্ত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.