পাকিস্তানের জন্য ‘আত্মঘাতী ড্রোন’ বানাচ্ছে ভারত
পাকিস্তানের বালাকোটে হামলার মডেল অনুসরণ করে দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘আত্মঘাতী ড্রোন’ বানাচ্ছে ভারত। আগামী দশ বছরের মধ্যে এগুলো ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হবে। ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় এই ড্রোনের নাম আলফা-এস। ড্রোনগুলো শত্রুপক্ষের আকাশসীমায় প্রবেশ করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে হিন্দুস্তান অ্যারোনেটিকস লিমিটেড এবং নিউস্পেস রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজিস।
ড্রোনগুলোর বিশেষত্ব হলো, এগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড়ে পৌঁছে যাবে কাঙ্ক্ষিত স্থানে। সেখানে গিয়েই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই ড্রোনগুলো উন্নত কৃত্রিম গোয়েন্দা অ্যালগরিদম ব্যবহার করতে পারে। বালাকোটে লক্ষ্য করে চালানো ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলার মতো এটিও হামলা করবে। তবে এতে কোনো চালক বা পাইলটের প্রয়োজন পড়বে না।
এনডিটিভি বলছে, হিন্দুস্তান অ্যারোনেটিকস লিমিটেড এবং নিউস্পেস রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজিসের ইঞ্জিনিয়ার এবং সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞদের একটি দল, অত্যাধুনিক বিমান প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে গত দুই বছর ধরে প্রথমবার দেশীয় প্রযুক্তিতে এই সোয়ার্ম ড্রোন তৈরি করেছে। ড্রোনগুলির নাম রাখা হয়েছে এয়ার-লঞ্চ ফ্লেক্সিবেল অ্যাসেট (সোয়ার্ম) বা আলফা-এস।
প্রকল্পটির এক ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, আকাশযুদ্ধে ভারতের ভবিষ্যৎ অস্ত্র হতে চলেছে আলফা-এস। এতে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বিভিন্ন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বিপজ্জনক অভিযানে এসব ড্রোন ব্যবহার করা হবে। ফলে আর পাইলটদের ঝুঁকির মুখে পাঠাতে হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রকৌশলী বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আমরা এই অত্যাধুনিক ড্রোনগুলো তৈরি করেছি। আমরা চেষ্টা করছি বিপজ্জনক সামরিক অভিযানে যাতে পাইলট ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় ভাবে এই ড্রোনগুলি শত্রুপক্ষের উপর হামলা চালাতে পারে তা নিশ্চিত করা। যার ফলে সামরিক অভিযানের সময় প্রাণহানির আশঙ্কা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হবে।’
আলফা-এস ড্রোনগুলোর ভাঁজ করতে সক্ষম দুটি পাখা আছে। পাখা দুটি এক থেকে দুই মিটার দীর্ঘ। এই ড্রোনগুলো ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমানের পাখার নিচে থাকা গর্তের ভেতরে সজ্জিত থাকবে। পাইলটরা প্রথমে একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত উড়ে যাবেন যেখান থেকে তারা শত্রুপক্ষের বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ওই ড্রোনগুলো ছাড়তে পারবেন।
বিমান থেকে ড্রোনগুলোকে অভিযানে পাঠানোর পর ড্রোনগুলো তাদের পাখায় ভর করে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। ড্রোনগুলোর পাখার মধ্যে যে ব্যাটারিগুলো দেয়া হয়েছে তা কয়েক ঘণ্টার জন্য স্থায়ীভাবে কাজ করতে সক্ষম। যার সাহায্যে ড্রোনগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সহজেই আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ এই প্রযুক্তির ড্রোন তৈরিতে কাজ করছে। ভারতও সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছে। তবে এই বিশেষ প্রযুক্তির ড্রোনগুলো তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে নির্মাতা দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক প্রতিযোগিতা রয়েছে। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায় না।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.