‘সম্রাটদের লালনকারী রাজা-বাদশাহ-আমির-ওমরাদেরও ধরতে হবে’
চুনোপুঁটিদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দুর্নীতির রাঘববোয়ালদের সরকার বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহসচিব রুহুল কবির রিজভী।রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এই মুখপাত্র বলেন, জনমনে প্রশ্ন- এই সম্রাটদের (ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ) কারা তৈরি করেছিল? এইসব সম্রাট তো একদিনে তৈরি হয়নি। যেসব রাজা-বাদশাহ-সম্রাজ্ঞীরা এসব ক্যাসিনো সম্রাটদের তৈরি করেছিল, তারা এখন নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা করলেও জনগণ জানে, সরকারের উচ্চমহলের আনুকুল্য না পেলে রাষ্ট্রের এত লাখ কোটি টাকা লোপাট সম্ভব নয়। ব্যাংকগুলোকে খালি করে দেয়া সম্ভব নয়। লাখো কোটি টাকা ঋণখেলাপি হওয়া সম্ভব নয়। উচ্চপর্যায়ের আনুকুল্য না থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১০ কোটি টাকা লোপাট হওয়ার পরও জনগণকে ২৪ দিন পর্যন্ত জানতে না দেয়ার ধৃষ্টতা সম্ভব ছিল না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এখন বিপদ টের পেয়ে দু-একটা সম্রাট ধরে নিজেদের দুর্নীতির কালিমালিপ্ত চেহারা ঢাকা সম্ভব নয়। কারণ শীর্ষ নেতাদের আনুকুল্য থাকার কারণেই রাজধানীতে ৬০টি অবৈধ ক্যাসিনো তৈরি হতে পেরেছিল, খালেদ-শামীম-সম্রাট তৈরি হয়েছিল। দেশের আনাচে-কানাচে আরও যে কত খালেদ-শামীম-সম্রাট রয়েছে, সেগুলো কিন্তু অধরাই থেকে গেল। উচ্চপর্যায়ের আনুকুল্য থাকার কারণেই এসব ক্যাসিনো হোতাদের জন্ম হয়েছে। এদের মধ্য থেকেই অনেকেই এমপিসহ সরকারের পদও বাগিয়ে নিয়েছেন। এটি প্রমাণিত গত একদশকে গণভবনের উৎসাহ ও প্রণোদনায় চলেছে ‘শিষ্টের দমন দুষ্টের লালন’। সুতরাং বর্তমানে আসল সমস্যা গণভবনে। এখন দেশকে বাঁচাতে হলে, জনগণকে বাঁচাতে হলে দেশে দুর্নীতিবাজদের লালনকারী নেপথ্য রাজা-বাদশাহ-আমির-ওমরাদের পতন ঘটাতে হবে। গণভবনকে দুর্নীতিবাজদের দখলমুক্ত করে জনগণের গণভবন জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া এখন সময়ের দাবি।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, এখন যারা গণভবন দখলে রেখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চটুল কথাবার্তা বলছেন, ৯ লাখ কোটি টাকা পাচারের দায়দায়িত্ব তারা এড়াতে পারবেন না, যা মেনন সাহেব উল্লেখ করেছেন। খালেদ, শামীম কিংবা ক্যাসিনো সম্রাটদের কাঁধে টাকা পাচারের দায়দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে গণভবন দখলকারীরা নিজেদের দায়মুক্তির যেই কূটকৌশল অবলম্বন করছেন, তাদের চালাকি জনগণের কাছে স্পষ্ট। দেশ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেল, গণভবন দখলকারীরা জানেন না- এটা জনগণ বিশ্বাস করে না। গত একদশকে লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সরকার প্রমাণ করেছে, এই লুটপাটের সঙ্গে তারা আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িত। এখন দু-একটা ইমিটেশন সম্রাটদের ধরে ৯ লাখ কোটি টাকা পাচারের সম্পূর্ণ হিসাব তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার কূটকৌশল জনগণ ঠিকই বুঝতে পারে।
দেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, যারা অপরাধী রাজদণ্ড তাদের হাতে। আর নিরপরাধ থাকেন কারাগারে। গণতন্ত্র ও দেশের পক্ষে কথা বলার কারণেই আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। শেখ হাসিনার পলিটিক্যাল মনোপলি নীতির কারণেই নিহত সংবিধান, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও স্বচ্ছ নির্বাচন।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.