তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের!
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি-বিরোধী অভিযানের কারণে চাপ বাড়ছে তুরস্কের ওপর। দেশটির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বাণিজ্য চুক্তি বাতিলসহ নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। তবে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ সেখানকার প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে আঙ্কারা।
সোমবার তুর্কি সীমান্ত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় তেল আবাদ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর নিজেদের পতাকা টানিয়ে দেয় তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি। গেল কয়েকদিনের কুর্দি-বিরোধী অভিযানের কারণে জীবন বাঁচাতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় সেখানকার বাসিন্দারা।তবে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আবারো বাড়ি-ঘরে ফিরতে শুরু করেছে তারা। নিজেদের বাড়ি-ঘরে ফিরলেও নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সেখানকার সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, আমরা আর কিছুই চাই না। শুধু নিরাপদ আর শান্তিতে বসবাস করতে চাই। সৃষ্টি কর্তার কাছে শুধু এটাই প্রার্থনা আমাদের।কুর্দিবিদ্রোহী-বিরোধী অভিযানের শুরু থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার পর এবার বাস্তব পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। তুরস্কের দুটি মন্ত্রণালয় এবং তিন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।সিরিয়ায় অবিলম্বে অস্ত্রবিরতি কার্যকর না করলে দেশটির ওপর আরো কঠোর অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোকেও নিষেধাজ্ঞা জারির আহ্বান জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঐ অঞ্চল সফরের ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রেসিডেন্ট সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। কুর্দি বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানের পক্ষে আমরা। কোনো ধরনের সামরিক সংঘাত সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নও তুরস্কের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির সঙ্গে কোনো ধরনের দ্বন্দ্বে জড়াতে না চাইলেও অস্ত্র বিক্রি সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে আঞ্চলিক এ জোট।
লুক্সেমবার্গে সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোঘেরিনি বলেন, ন্যাটোভুক্ত দেশ হওয়ায় তুরস্কের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়া হলেও সামরিক অভিযানের ভয়াবহতা বিবেচনায় ভিন্ন চিন্তা করবে ইইউ।পশ্চিমা দেশগুলো এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও কুর্দি-বিরোধী অভিযানের বিষয়ে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। সন্ত্রাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সিরিয়ায় অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানান তিনি।
রিসেপ তাইপ এরদোয়ান বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো অস্তিত্ব আমরা রাখবো না। তাদের নির্মূলে তুরস্ক বদ্ধপরিকর। প্রকৃত মালিকদের কাছেই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয়া হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা আরব লিগ কি বললো, তা আমাদের বিবেচনার বিষয় না। তারা কি জানে না সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ী?
সামরিক অভিযানের বিষয়ে তুরস্ককে সর্বোচ্চ সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.