ভয়ংকর রাক্ষুসে মাছ স্নেকহেড: দেখামাত্রই হত্যার নির্দেশ, যুক্তরাষ্ট্রে সতর্কতা

"যদি দেখেন যে একটি উত্তরাঞ্চলীয় 'স্নেকহেড' মাছ আপনার জালে ধরা পড়েছে, এটিকে ছাড়বেন না। পাওয়ামাত্রই এটিকে হত্যা করুন। মনে রাখবেন, এটি ডাঙাতেও বেঁচে থাকতে পারে।"
ঠিক এরকম নির্দেশনাই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ন্যাচারাল রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট বা প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগ।উত্তরাঞ্চলীয় 'স্নেকহেড' মাছ দেখতে লম্বাটে ও চিকন। এর মাথা দেখতে অদ্ভূত রকম চ্যাপ্টা।এটি উচুঁ মানের শিকারী প্রাণী এবং এর ক্ষুধা অফুরন্ত।
প্রতি বছর দশ হাজার ডিম
এই মাছ অন্যান্য জাতের মাছ থেকে শুরু করে ব্যাঙ, কাঁকড়া সবই সাবাড় করে ফেলে।জর্জিয়া ছাড়াও ফ্লোরিডা, নিউ ইয়র্ক, ভার্জিনিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, ম্যাসাচুসেট্স ও মেরিল্যান্ডে এই মাছ পাওয়া গেছে।মেরিল্যান্ডেই ২০০২ সালে প্রথমে এই মাছকে সনাক্ত করা হয়।
জনগণের সহায়তা
জর্জিয়াতে স্নেকহেড মাছকে সনাক্ত করার পর অক্টোবরের ৮ তারিখেই সেখানে জনসচেতনতা মূলক একটি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।পানি ছাড়াও যে এই মাছ বেঁচে থাকতে পারে সেই কথা উল্লেখ করে ডিপার্টমেন্ট অফ ন্যাচারাল রিসোর্স (ডিএনপি) জনগণের উদ্দেশে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। মৃত স্নেকহেড দেখলেও সেটির ছবি তুলতে এবং সেটিকে ঠিক কোথায় পাওয়া গিয়েছে সেই বিষয়ে নোট নিতে তাগিদ দেয়া হয়েছে সেই নির্দেশনায়।
এরকম পরিবেশে থাকার কারণে এই মাছগুলোকে বিভিন্ন ধরনের অভিযোজন কৌশল আয়ত্বে আনতে হয়। মূলত এসব পরিবেশে এই মাছগুলো তাদের অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণকে সর্বোচ্চ বাড়িয়ে নেয়।
বাড়তি বায়ু
জেনার আরো বলছিলেন, এই জাতের মাছের গিল বা ফুলকার পেছনে বাতাসের একটি চেম্বার থাকে। এটিকে বলা হয় সুপ্রাব্রাঞ্চিয়াল চেম্বার।সাধারণত, মাছেরা তাদের ফুলকার সাহায্যে দম নেয় এবং এর মাধ্যমেই অক্সিজেন আসা-যাওয়া করে।মাছ পানির উপরিতলে উঠে আসতে এবং যে কোনো দিকে যেতে সক্ষম। তারপর তারা পানির গভীরে চলে যায় এবং অক্সিজেন ব্যবহার করে।
"কিন্তু এই স্নেকহেড মাছগুলো পানির উপরিভাগে উঠে এসে কিছু বায়ু বুকে ভরে নেয় এবং তারা একেবারে জলের গভীর তলানিতে নেমে যেতে পারে। সেখানে প্রয়োজন হলে তারা তাদের চেম্বারের অক্সিজেন ব্যবহার করে," ব্যাখা করেন মি. জেনার।
ক্রলিংস্নেকহেড মাছগুলো ডাঙ্গাতেও দম নিতে পারে। যার কারণে তারা আসলে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করতে সক্ষম।
ট্রপিক্যাল বা গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে জলাভূমিগুলো প্রায়শই শুকিয়ে যায়। তাই, মাছগুলোকে তখন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে হয়।
"স্নেকহেড ডাঙায় চলাফেরা করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এই কাজটি স্নেকহেড খুব কৌশলে করে। মাছগুলো পাখনা ব্যাবহার করে বুকে ভর দিয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু পানির বাইরেও একটা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তারা বেঁচে থাকতে পারে কারণ তারা ঢোক গেলার মাধ্যমে বায়ু গ্রহণ করে সেটিকে শ্বাসের কাজে লাগাতে পারে।"
তবে, মি জেনার বলছেন, স্নেকহেডই ডাঙ্গাতে বেঁচে থাকা একমাত্র মাছ নয়। ক্যাটফিশের মতন অন্য এমন আরো কিছু প্রজাতির মাছ রয়েছে যারা স্থলেও অক্সিজেন ব্যবহারে সক্ষম।
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.