শের-ই বাংলা হলের আরও তিনটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ (ভিডিও)
রুমে ডেকে নেয়ার ৬ ঘণ্টা পর চাদরে পেঁচিয়ে নামানো হয় আবরারের লাশ। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজে আবরারকে দোতলায় ডেকে নেয়া থেকে শুরু করে মারধরের পর সিঁড়িতে ফেলে রাখার ছবি স্পষ্ট দেখা গেছে। ঘটনার দিন রাত আটটা থেকে রাত চারটা পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিভিন্ন কার্যকলাপ দেখা যায় ফুটেজে। এমনকি হত্যার পর হলের বারান্দায় আবরারের লাশের পাশে প্রভোস্টের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলো আসামিরা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সিসি ক্যামেরার একটি ফুটেজ দেখে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে শের-ই-বাংলা হলের আরও সিসি ক্যামেরার আরও তিনটি ফুটেজ প্রকাশ হয়েছে। যদিও এতে দেখা যাওয়া সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিসিটিভির ওই ফুটেজগুলো অনুযায়ী, ৬ অক্টোবর রাত ৮.১৩ মিনিট। আবরার ফাহাদকে ডেকে নিয়ে যায় সাদাত, তামিম, সাইফুল, বিল্লাহ ও অভি। মূলত তাকে ডেকে নেয়া হয় টর্চার সেলখ্যাত হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে।
১১টা ৪ মিনিটে ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন জেমি ও তামিম নামে দু'জন। এর ৬ মিনিট পরে বের হন তোহা; এরপর একে একে রাফা, মোরশেদ, বিল্লাহ, মনির ও মাজেদ বাইরে আসেন।
১১টা ২০ এর পর ওই কক্ষে যান ছাত্রলীগ নেতা অনিকসহ আরও কয়েকজন। এরপর রাত ১২টা ৮ এর দিকে বের হয়ে নিচে যান অনিক। কিছুক্ষণ পর বিটু নামে আরেকজন ঢোকার পর আরেক দফায় বের হয় বিল্লাহ, সঙ্গে গালিব।
রাত ১২টা ২৭ এ সেখানে যায় মোয়াজ নামে আরেকজন। কিছুক্ষণ পর কয়েকবার আসা যাওয়া করতে দেখা যায় জেমি, সকাল, রাফাত, মোরশদ, ইসমাইল ও বিল্লাহসহ কয়েকজনকে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাত ১টা ১৩ মিনিটের দিকে, আবরারকে ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে বাইরে নিয়ে আসে জেমি, মোয়াজ ও তামিম। সঙ্গে ছিলেন মাজেদ, মোরশেদ, মুজাহিদ ও সকাল আরও কয়েকজন। দোতলার আরেকটি কক্ষে রাখা হয় আবরারকে।
এরপর রাত ২টা ৩৪ মিনিটে কাপড় পেঁচিয়ে আবরারকে নেয়া হয় সিঁড়িতে। এসময় জেমি, মোয়াজ ও রবিনসহ উপরে উল্লেখিত অধিকাংশরাই উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন আকাশ নামে আরও একজন।
রাত তখন ৩টা ৫ মিনিট। শের-ই-বাংলা হলে ডেকে নেয়া হয় এক চিকিৎসককে। নেয়া হয় ট্রলিও। এসময় তাকে মৃত ঘোষণা করে হল প্রভোস্টের অপেক্ষায় থাকেন চিকিৎসক। হল প্রভোস্ট পৌঁছে আবরারের মরদেহ পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় লাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ বাকি আসামিদের যারা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
রাত ৮টার সময় ফাহাদ আবরার পায়ে হেটে ২০১১ নম্বর কক্ষে গেলেও রাত তিনটার পর হলের বারান্দায় পড়ে থাকে তার নিহত দেহ। টর্চাল সেলখ্যাত ওই কক্ষে নির্মম নির্যাতনেই ঝরে যায় একটি মেধাবী প্রাণ।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.