বিশ্বমানের হবে চিড়িয়াখানা
এবার বিশ্বমানের রূপ পাচ্ছে জাতীয় চিড়িয়াখানা। কয়েক মাস আগে মহাপরিকল্পনাটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাস হয়েছে। সিঙ্গাপুরের ‘জুরং বার্ড’ পার্কের আদলে ঢেলে সাজানো হবে সরকারি এই চিড়িয়াখানাটি। এ ছাড়া সেখানে সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের নানা খাবার। খোলা হয়েছে পর্যটনের হোটেল। সংশ্লিষ্টরা জানান, চিড়িয়াখানা নিয়ে মানুষের উৎসাহের কমতি নেই। সৃষ্টির রূপ খোঁজতেই প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চিড়িখানায় ভিড় জমায়। এই চিড়িয়াখানাটি আয়তনে বিশ্বের চতুর্থ। এবার দেশি-বিদেশি পর্যটকদের রাতযাপনের ব্যবস্থাসহ থাকবে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। বাড়ানো হবে সার্বিক নিরাপত্তা। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের দুই হাজারের বেশি প্রাণী রয়েছে। নতুন করে অবকাঠামোর উন্নয়ন, প্রাণী ও পাখি সংগ্রহে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। চলতি অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান করায় বিশ্বমানের রূপ দেওয়ার কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া গবেষণার কাজে লাগবে এমন ধরনের কিছু উপকরণ থাকছে এতে। শিগগিরই আসছে সিংহ, ভল্লুক, ক্যাঙ্গারু ও উটপাখি। জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, মহাপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ক্যাবল কার, লেজার শো, পানির নিচে ফিশ অ্যাকোরিয়াম, ডলফিন শো, নাইট সাফারি ট্যুর, লেক সাফারি, ফরেস্ট লজ, ওয়াচ টাওয়ার, সুসজ্জিত ফুলের বাগান ও প্রজাপতি পার্ক। পাশাপাশি আগত দর্শকদের জন্য রেস্ট হাউস ও উন্নতমানের রেস্টুরেন্ট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া দরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার থেকে দেড় শতাধিক প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে শিম্পাঞ্জি, আফ্রিকার সিংহ, সাদা সিংহ, চিতাবাঘ, চিত্রা হায়েনা, সাদা পেলিকান পাখি ও কেশোয়ারী পাখি সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। জু জাদুঘরের ওপরের সভাকক্ষটি জাপানের আর্থিক সহযোগিতায় আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখানে বিশ্বের অন্যান্য চিড়িয়াখানার চেয়ে প্রাণীর সংখ্যাও অনেক বেশি। কিন্তু ওয়ার্ল্ড জু অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য না হওয়ায় নতুন প্রাণীর সংযোজন, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় চিড়িয়াখানাকে বিশ্বের এক নম্বর আকর্ষণীয় চিড়িয়াখানা হিসেবে গড়ে তোলতে কাজ চলছে। এ ছাড়া জাতীয় চিড়িয়াখানার বর্তমান অবকাঠামো পরিবর্তন করে দর্শকদের জন্য একমুখী সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া চিড়িয়াখানার পশু-পাখির খাঁচা সম্পূর্ণভাবে বন্য আবহে তৈরি করতে একজন জাপানি জু-আর্কিটেকচার ও জু-কনসালটেন্টের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। চলিত পদ্ধতির প্রাণী খাঁচাকে বদলে আধা প্রাকৃতিক, প্রাণীবান্ধব ও তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়বিশিষ্ট খাঁচা তৈরি করা হবে। দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানার সার্বিক পরিবেশ উন্নত করা হয়েছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.