রাতের আধারে কয়েকজন নায়িকা কোটি টাকার মালিক হয়েছেন!
ক্যাসিনোকাণ্ডে চলচ্চিত্র জগতের অনেক মডেল-নায়িকার নাম উঠে আসছে। এতে কারো স্বার্থে আঘাত হানায় তেলে বেগুনে জ্বলছেন। এসব বিষয় নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক শামীমুল ইসলাম শামীম। স্ট্যাটাসটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো...
তিনি লিখেছেন, ‘সরাসরি আঙ্গুল তোলা একেবারেই অমূলক অনৈতিক এবং বেআইনী… আর এই গরম আগুনে আলু পোড়া দিয়ে খাওয়ার জন্য অনেকেই বেশ ক’বোতল ঘি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন।
আমি ক্যাসিনো বা রাজনৈতিক কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলবো না। এই যোগ্যতা বা দুঃসাহস কোনোটাই আমার নেই। বুঝিও না একদম। আমি দু’চারটি কথা বলতে চাই আমার ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে… আমার ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী, সাংবাদিক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী নিয়ে…
ক্যাসিনো তান্ডবের সাথে সাথে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির দু’চারজন সুন্দরী, শিক্ষিতা ও স্মার্ট নায়িকাদের জড়িয়ে বেশ রসিয়ে কষিয়ে কিছু নিউজও ইদানিং খুব লক্ষ্য করছি। এই নিয়ে বাদী-বিবাদীর মধ্যে যে এক ধরনের নোংড়া কাদা ছোঁড়াছুড়ি চলছে, তা আপামর মানুষ বেশ মজা করেই গিলছেন! ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে অনেকেই হুমকি, আল্লাহর বিচারসহ কোর্টের বারান্দায় যাওয়ার চিন্তা করে সংকল্পও করে ফেলেছেন।
পুলিশি তদন্ত, বিচারকের রায় আর সাংবাদিকতা কখনোই অনুমান নির্ভর হতে পারে না। শক্তপোক্ত স্বাক্ষী, প্রমাণ আর নথিপত্র নিয়েই বা দিয়েই তা করতে হয়!
খুব খেয়াল করেই দেখলাম- বেশ ক’জন সাংবাদিক আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অভিনেত্রীদের নিয়ে বেশ ইনিয়ে বিনিয়ে আরব্য রজনীর রূপকথার গল্পের আদলে তাদের নিউজ লিখে চলেছেন। যা আবছা। ধোঁয়াটে! একদম ক্লিয়ার কাট নয়। এটা কাম্য নয়! প্রমাণ থাকলে, বা কোনো তথ্যসূত্র পেয়ে থাকলে সরাসরি তা ইন্ডকেট করে বুক ফুলিয়ে লেখা সাংবাদিকের কর্ম হওয়া উচিৎ! ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বা রোষানল থেকে তা করা একদম উচিৎ নয়! কারো নাম উল্লেখ না করে যে ভাবে চৌদ্দ গুষ্ঠির কোষ্টি উল্লেখ করে লেখা হচ্ছে তা রীতিমতো ব্যক্তি কলহকে নির্দেশ করে। এটা পরিহার জরুরি।
দু’চার জন তথা কথিত নায়িকা বা মডেল রাতের আঁধারে শ’খানিক টাকা থেকে কী করে যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন- এটা কমবেশি সকলেই জানেন। অন্ধকারে ঘটনাগুলো ঘটেছে বলেই আমরা তার প্রমাণ পাই না। শুধু দেখে দেখে অনুমান করি। আর অনুমান নিয়ে কিছু বলতে পারি না। লিখতেও পারি না। সেটা উচিৎও নয়। আমরা যেমন দেখি, অনুমান করি- তা রাষ্ট্রও দেখে। দেখে দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। বিষয়টা তাদের ভাবতে দিন। একশন তাদের নিতে দিন। সাংবাদিকদের কাছে যদি কোনো যুক্তি, স্বাক্ষী, তথ্য বা প্রমাণ থাকে তাহলে সেটা উল্লেখ পূর্বক নিউজ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তথা জনগণের দৃষ্টিতে আনুন। মনগড়া বা কল্পনাপ্রসূত কোনো কল্পকাহিনীর সমন্বয়ে তা করবেন না প্লিজ।
ঢালাও ভাবে অনেককে চিহ্নিত না করে নির্দিষ্ট কাউকে প্রশ্ন করুন (রেকর্ডসহ)- অমুক জায়গা থেকে এসে অমুক বস্তিতে থাকতেন। মাত্র এই কয়টা কাজ করে রাতারাতি কি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন? গাড়ি, বাড়ি ফ্ল্যাট, হেলদি ব্যাংক একাউন্ত আর বিস্তর বাণিজ্যের উৎস কি? সাংবাদিক হিসেবে এ প্রশ্ন আপনি করতেই পারেন। এটা আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এ নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত করার অবকাশ নেই। চিহ্নিত মানুষটি আপনাকে যা বলে তাই লিখুন। কোনোকিছু এড়িয়ে যেতে চাইলে সেটাও লিখুন। তার বক্তব্যে আপনি সন্তুষ্ট না হলে আপনিও তদন্ত করুন। এই অধিকার আপনার আছে। কোথা থেকে এসেছে? কি কি করেছে? করছে? কিভাবে করছে? খোঁজ নিন। কাছের লোকেদের বক্তব্য নিন। তারপর লিখুন প্লিজ।
মনগড়া লেখায় যতোখানি না পাবলিক মজা নেয় তার চেয়ে অনেক বেশি হাসাহাসি করে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে। ক্ষতি অনেকবেশি আমাদের সমষ্টিগত। আমাদের মাথা এমনিতেই নুয়ে মাটিতে লেগে আছে। আর নামালে তো নিজেরাই মাটিতে ঢুকে যাবো। সেখানে আপনিও থাকবেন নিশ্চয়ই।
কেউ যে ধোয়া তুলসী নয়, তা কমবেশি সকলেই অবগত। কেউ অনেক উঁচু লেবেলের খারাপ, কেউ নিচু লেবেলের। খুব ভালো না আমরা কেউই। সরষের ভেতরে যে ভূত তা সৃষ্টির শুরু থেকেই। ঢালাওভাবে বিনা প্রমাণে দোষারোপ করলে অনেক ভালো মানুষও ফেঁসে যেতে পারে।
মনে রাখবেন- “এক’শ দোষী ক্ষমা পেয়ে যাক। তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। কিন্তু একজন নিরপরাধীরও যেন কষ্ট না হয়, শাস্তি না হয়।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.