এবার যুক্তরাষ্ট্র জয় করলেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ডা. আরিফ
জাপানের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ডা. আরিফ হোসেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড সিম্পোজিয়ামে সারা পৃথিবী থেকে ১১ জনকে বাছাই করা হয়েছে সেরা তরুণ বিজ্ঞানী হিসেবে। এর মধ্যে দুইজন বৃটিশ, সাতজন আমেরিকান, একজন ডেনমার্ক এবং একজন জাপানিজ বিজ্ঞানী।
রোববার এ খবর প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ভিত্তিক গবেষণা বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডসিম্পোজিয়া।পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোচিত ওই জাপানিজ বিজ্ঞানী হলেন টোকিও’র জিকেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চার বাংলাদেশি ডা. মোহাম্মদ আরিফ হোসেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার কৃতী সন্তান। এর আগেও তিনি গবেষণার জন্য একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
ডা. আরিফের পরিবারে আরও যারা আলোচিত
ডা. আরিফ হোসেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১১ ভাইবোনের মধ্যে ডা. আরিফ হোসেন সবার ছোট। তিনি এসএসসি পর্যন্ত গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করেন। তারপর ঢাকার মিরপুর বাঙলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে প্রথমে এমবিবিএস পাস করে একই প্রতিষ্ঠান থেকে শিশু বিভাগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন করেছেন।
ডা. আরিফের বড় ভাই ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. সিদ্দিকুর রহমান গবাদি পশুর রোগের চিকিৎসার ভ্যাকসিন ব্রুসেলোসিস আবিষ্কার করেছেন, যা বিশ্বে প্রথম। কৃষি বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি তিনবার রাষ্ট্রপতি ও একবার প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারে ভূষিত হন।
এছাড়া ডা. আরিফের ভাতিজা মুবিন ইবনে মকবুল ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় এবছর জাতীয় মেধায় প্রথম হয়েছেন। তার সর্বমোট স্কোর ২৯২.৫। এটি ডেন্টালে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ স্কোর। একই সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষায় ঘ ইউনিটেও তিনি প্রথম হন। সেই সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে সারা দেশে আলোচিত হন।
যে গবেষণায় পুরস্কার পাচ্ছেন ডা. মোহাম্মদ আরিফ হোসেন
আলোচিত এই পুরস্কার জিতেছেন ফেব্রী রোগ নামক এক ধরনের জেনেটিক লাইসোসোমাল রোগের pathophysiology তে গবেষণাপত্র প্রকাশের জন্য।
ওয়ার্ল্ড সিম্পোজিয়া ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে চারদিন ব্যাপী বিজ্ঞানীদের এই বিশ্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় আমেরিকার ফ্লোরিডা অথবা ক্যালিফোর্নিয়াতে। এবছর সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে ফ্লোরিডা রাজ্যের ওরল্যান্ডের হায়াত রিজেন্সি হোটেলে ১০-১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০-এ।
প্রতিবছর প্রায় দুই থেকে তিন হাজার বিশ্ববিখ্যাত লাইসোসোমাল রোগ বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ৫০০-৬০০ গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমন সম্মাননা পাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সোমবার রাতে ই-মেইল বার্তায় যুগান্তরকে ডা. আরিফ হোসেন বলেন, কাজের স্বীকৃতি পেলে অবশ্যই অনেক ভাল লাগে। আমি এত বড় একটা সম্মেলনে এত বড় বড় বিজ্ঞানীদের সামনে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে আমার গবেষণা উপস্থাপন করতে পারব এটা ভেবেই আমি খুব শিহরিত। তবে সত্যি কথা বলতে কি আমি যদিও বাংলাদেশী, কিন্তু আমি উপস্থাপন করতে যাচ্ছি জাপানকে। যদি নিজের দেশকে উপস্থাপন করতে পারতাম তাহলে আরও ভাল লাগত’।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.