মানুষের উপর কি বদ নজর লাগে? লাগলে তার চিকিৎসা কি? বদ নজর থেকে বেঁচে থাকা কি আল্লাহর উপর ভরসার পরিপন্থী?
বদ নজরের প্রভাব সত্য অর্থাৎ মানুষের উপর বদ বা কু-নজর লাগে।
আল্লাহ বলেন,
وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ
অর্থ:
কাফিরেরা তাদের দৃষ্টির মাধ্যমে আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিতে চায় এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল। [সূরা আল-কলম: ৫১]
অর্থ:
কাফিরেরা তাদের দৃষ্টির মাধ্যমে আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিতে চায় এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল। [সূরা আল-কলম: ৫১]
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন,
الْعَيْنُ حَقٌّ وَلَوْ كَانَ شَيْءٌ سَابَقَ الْقَدَرَ سَبَقَتْهُ الْعَيْنُ وَإِذَا اسْتُغْسِلْتُمْ فَاغْسِلُوا
অর্থ:
বদ নজরের প্রভাব সত্য। কোন জিনিস যদি তাকদীরকে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে বদ নজর তাকে অতিক্রম করত। তোমাদেরকে গোসল করতে বলা হলে তোমরা গোসল করবে এবং গোসলে ব্যবহৃত পানি দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করবে।
অর্থ:
বদ নজরের প্রভাব সত্য। কোন জিনিস যদি তাকদীরকে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে বদ নজর তাকে অতিক্রম করত। তোমাদেরকে গোসল করতে বলা হলে তোমরা গোসল করবে এবং গোসলে ব্যবহৃত পানি দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করবে।
#হাদীসঃ হযরত জাবের (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: বদ নজর মানুষকে কবর পর্যন্ত পৌঁছে দেয় এবং উটকে পাতিলে।
[সহীহ আল জামেঃ ১২৪৯; শাইখ আলবানী (রহঃ/রহিমাহুল্লাহ্) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
[সহীহ আল জামেঃ ১২৪৯; শাইখ আলবানী (রহঃ/রহিমাহুল্লাহ্) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
নাসায়ী এবং ইবনে মাজাহ বর্ণিত আছে যে,
একদা আমির ইবনে রাবীয়া সাহল ইবনে হুনাইফের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন।
সাহল ইবনে হুনাইফ (রাঃ) তখন গোসল করতে ছিলেন। আমির ইবনে রাবীয়া সাহলকে দেখে বলল, আমি আজকের মত লুকায়িত সুন্দর চামড়া আর কখনো দেখিনি। এ কথা বলার কিছুক্ষণ পর সাহল অসুস্থ হয়ে পড়ে গেল। তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে এসে বলা হল, সাহল বদ নজরের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বললেন, তোমরা কাকে সন্দেহ করছ? তারা বলল, আমির ইবনে রাবীয়াকে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, কেন তোমাদের কেউ তার ভাইকে হত্যা করতে চায়। কেউ যদি কারো মধ্যে ভাল কিছু দেখে, তাহলে সে যেন তার জন্য ভাইয়ের কল্যাণ কামনা করে এবং দু‘আ করে। অতঃপর তিনি পানি আনতে বললেন এবং আমিরকে অযূ করতে বললেন। অযূতে মুখমণ্ডল, কনুইসহ উভয় হাত এবং হাঁটু পর্যন্ত এমনকি লুঙ্গির নীচ পর্যন্ত ধৌত করে সাহলের শরীরে ঢালতে বললেন। এটি বাস্তব ঘটনা, যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
একদা আমির ইবনে রাবীয়া সাহল ইবনে হুনাইফের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন।
সাহল ইবনে হুনাইফ (রাঃ) তখন গোসল করতে ছিলেন। আমির ইবনে রাবীয়া সাহলকে দেখে বলল, আমি আজকের মত লুকায়িত সুন্দর চামড়া আর কখনো দেখিনি। এ কথা বলার কিছুক্ষণ পর সাহল অসুস্থ হয়ে পড়ে গেল। তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে এসে বলা হল, সাহল বদ নজরের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বললেন, তোমরা কাকে সন্দেহ করছ? তারা বলল, আমির ইবনে রাবীয়াকে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, কেন তোমাদের কেউ তার ভাইকে হত্যা করতে চায়। কেউ যদি কারো মধ্যে ভাল কিছু দেখে, তাহলে সে যেন তার জন্য ভাইয়ের কল্যাণ কামনা করে এবং দু‘আ করে। অতঃপর তিনি পানি আনতে বললেন এবং আমিরকে অযূ করতে বললেন। অযূতে মুখমণ্ডল, কনুইসহ উভয় হাত এবং হাঁটু পর্যন্ত এমনকি লুঙ্গির নীচ পর্যন্ত ধৌত করে সাহলের শরীরে ঢালতে বললেন। এটি বাস্তব ঘটনা, যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
কেউ বদ নজরে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা হলঃ
কোনো কিছুর উপর নিজের চোখ লাগার ভয় থাকলেও দো‘আ করতে হয়।
যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের, অথবা নিজের কোনো বিষয়ে, অথবা নিজের কোনো সম্পদে এমন কিছু দেখে যা তাকে চমৎকৃত করে, তখন সে যেন বলে,
بَارَكَ اللَّهُ لَك
উচ্চারণঃ বা-রাক আল্লা-হু লাকা!
অর্থঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন।
উচ্চারণঃ বা-রাক আল্লা-হু লাকা!
অর্থঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন।
মুসনাদে আহমাদ ৪/৪৪৭, নং ১৫৭০০; ইবন মাজাহ্, নং ৩৫০৮; মালেক ৩/১১৮-১১৯। আর শাইখুল আলবানী, সহীহুল জামে‘ গ্রন্থে সহীহ বলেছেন, ১/২১২; আরও দেখুন, আরনাঊতের এর যাদুল মা‘আদ এর তাহকীক ৪/১৭০।
এছাড়াও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
لَا رُقْيَةَ إِلَّا مِنْ عَيْنٍ أَوْ حُمَةٍ
"বদ নজর এবং বিচ্ছুর বিষ নামানোর ঝাঁড়-ফুঁক ব্যতীত কোন ঝাড়-ফুঁক নেই।”
[বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তিব্ব]
[বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তিব্ব]
জিবরীল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এই দু’আর মাধ্যমে ঝাড়তেন,
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
"আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রতিটি এমন জিনিষ হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক জীবের অমঙ্গল হতে ও হিংসুকের বদ নজর হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি।”
[মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সালাম]
[মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সালাম]
যার বদ নজর লাগছে বলে সন্দেহ করা হয়, তাকে গোসল করিয়ে গোসলের পানি রোগীর শরীরে ঢালতে হবে। যেমনভাবে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমের বিন রাবীয়াকে গোসল করতে বলেছিলেন।
সন্দেহ যুক্ত ব্যক্তির পেশাব-পায়খানা বা অন্য কোন কিছু দিয়ে চিকিৎসা করার কোন দলীল নেই। অনুরূপভাবে তার উচ্ছিষ্ট বা অযুর পানি ইত্যাদি ব্যবহার করাও ভিত্তিহীন। হাদীছে যা পাওয়া যায় তা হল তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং লুঙ্গির নিচের অংশ ধৌত করা এবং সম্ভবতঃ মাথার টুপি, পাগড়ী বা পরিধেয় কাপড়ের নিচের অংশ ধৌত করা এবং তা ব্যবহার করাও বৈধতার অন্তর্ভূক্ত হবে।
বদ নজর লাগার আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়াতে কোন দোষ নেই। এটা আল্লাহর উপর ভরসা করার পরিপন্থীও নয়। কারণ আল্লাহর উপর পরিপূর্ণভাবে ভরসার স্বরূপ হল বান্দা বৈধ উপকরণ অবলম্বন করে বদনজর ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে এবং সেই সাথে আল্লাহর উপর ভরসা করবে।
সন্দেহ যুক্ত ব্যক্তির পেশাব-পায়খানা বা অন্য কোন কিছু দিয়ে চিকিৎসা করার কোন দলীল নেই। অনুরূপভাবে তার উচ্ছিষ্ট বা অযুর পানি ইত্যাদি ব্যবহার করাও ভিত্তিহীন। হাদীছে যা পাওয়া যায় তা হল তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং লুঙ্গির নিচের অংশ ধৌত করা এবং সম্ভবতঃ মাথার টুপি, পাগড়ী বা পরিধেয় কাপড়ের নিচের অংশ ধৌত করা এবং তা ব্যবহার করাও বৈধতার অন্তর্ভূক্ত হবে।
বদ নজর লাগার আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়াতে কোন দোষ নেই। এটা আল্লাহর উপর ভরসা করার পরিপন্থীও নয়। কারণ আল্লাহর উপর পরিপূর্ণভাবে ভরসার স্বরূপ হল বান্দা বৈধ উপকরণ অবলম্বন করে বদনজর ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে এবং সেই সাথে আল্লাহর উপর ভরসা করবে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসান-হুসাইন (রাঃ)-কে এই বাক্যগুলো দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করতেনঃ
أُعِيْذُكُماَ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
"আমি আল্লাহর কাছে তাঁর পরিপূর্ণ বাক্যের মাধ্যমে প্রতিটি শয়তান এবং বিষধর বস্তু ও কষ্ট দায়ক নযর হতে তোমাদের জন্য আশ্রয় চাচ্ছি।”
[আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সুন্নাহ]
[আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সুন্নাহ]
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ইবরাহীম (আঃ) তাঁর পুত্র ইসহাক এবং ইসমাঈল (আঃ)-কে এই দু’আর মাধ্যমে ঝাড়-ফুক করতেন।
[বুখারী, অধ্যায়ঃ নবীদের হাদীছ]
[ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম - শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন] হাদিসে রাসুল [সা:] নং- ৯৮৮; জিন ও বদ নজর থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং সুরা আন-নাস ও আল-ফালাক।
[বুখারী, অধ্যায়ঃ নবীদের হাদীছ]
[ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম - শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন] হাদিসে রাসুল [সা:] নং- ৯৮৮; জিন ও বদ নজর থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং সুরা আন-নাস ও আল-ফালাক।
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সুরা ফালাক্ব ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَتَعَوَّذُ مِنَ الجَانِّ، وَعَيْنِ الإِنْسَانِ، حَتَّى نَزَلَتْ المُعَوِّذَتَانِ، فَلَمَّا نَزَلَتَا، أَخَذَ بِهِمَا وَتَرَكَ مَا سِوَاهُمَا. رواه الترمذي، وقال: ((حديث حسن))
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সুরা ফালাক্ব ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
পরিশেষে যখন উক্ত সুরা দু’টি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সুরা দু’টি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন।’
[তিরমিযি ২০৫৮, নাসায়ি ৫৪৯৪, ইবন মাজাহ ৩৫১১]
পরিশেষে যখন উক্ত সুরা দু’টি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সুরা দু’টি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন।’
[তিরমিযি ২০৫৮, নাসায়ি ৫৪৯৪, ইবন মাজাহ ৩৫১১]
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.