দৌলতদিয়ায় যেভাবে বাধ্য করা হয় যৌন পেশায়!
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে মাত্র সাত বছর বয়সী শিশুদেরও যৌন ব্যবসার জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে। বিবিসির সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে এ দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিটি লাইসেন্সধারী যৌনপল্লির মধ্যে একটি।
সমাজসেবা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সের কোনো নারী স্বেচ্ছায় যৌন ব্যবসা করতে চাইলে তাকে স্থানীয় বা আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে অনুমোদন নিতে হয়।
আদালতের হলফনামায় উল্লেখ করতে হয় যে তিনি এ পেশায় স্বেচ্ছায় এসেছেন, কারও চাপের মুখে পড়ে আসেননি। কিন্তু দৌলতদিয়ার এ যৌনপল্লির অনেক নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে তাদের শিশু বয়সেই যৌন পেশায় বাধ্য করা হয়েছিল।
বিবিসির শিক্ষা ও পরিবার প্রতিবেদক ফ্রাঙ্কি ম্যাকক্যামলে সম্প্রতি দৌলতদিয়ার ওই যৌনপল্লিটি ঘুরে দেখতে পান, পল্লির এমন পরিবেশে হাজার হাজার শিশু বেড়ে উঠছে।
যাদের বেশিরভাগ এক পর্যায়ে এ পেশাকেই জীবিকার জন্য বেছে নিচ্ছে। আবার অনেককে বাইরে থেকে পাচার করে এনে এ ব্যবসায় সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যৌনকর্মীকে কয়েক বছর আগে পাচার করে আনা হয়েছিল দৌলদিয়ায়। এখন বলতে গেলে এটাই তার স্থায়ী ঠিকানা।
তিনি বলেন, এখানে যখন আমাকে আনা হয় তখন আমার বয়স ১৯ বছর ছিল। আমার এলাকার একজন আমাকে কাজের কথা বলে এখানে রেখে যায়। আমার পুরো ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারা এখানে থাকতে বাধ্য করে।
কৈশোরে পা দেয়ার আগেই যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন আরেক নারী। এ যৌনপল্লিতেই তার জন্ম এবং নিজের মাকে তিনি পতিতাবৃত্তি করতে দেখে বড় হয়েছেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে এ পেশায় যুক্ত হন তিনি এবং তার ঘরে প্রথম গ্রাহক ছিলেন মাত্র ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর।
চাইলেই এ পল্লি থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে থাকতে কি আর ভালো লাগে? এখান থেকে বের হয়ে যেতে পারলেই তো ভালো। আমি মাঝে মাঝে বাইরে যাই। কিন্তু ফিরে আসতে হয়। কারণ আমার টাকার প্রয়োজন।
সূত্র : বিবিসি
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.