আরও পাঁচ লাখ আক্রান্ত হবে উহানে!
চীনে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে উহানের আরও পাঁচ লাখ মানুষ। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।বিবিসি। গবেষকরা উহানের ভাইরাস সংক্রমণের হার নির্ধারণে একটি গাণিতিক মডেল দাঁড় করিয়েছেন। মডেল অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শেষ নাগাদ ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ হতে পারে।
মানবদেহে ভাইরাসটির কার্যক্ষম হতে প্রায় পাঁচদিন লাগে। সেই হিসাবে সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে উহানের প্রায় এক কোটি বাসিন্দা।গবেষণা কেন্দ্রের সংক্রমণ ব্যাধিবিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক অ্যাডাম কুচারস্কি জানিয়েছেন, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উহানের ৫ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ শহরটির প্রতি ২০ জনে একজন অথবা প্রায় পাঁচ লাখ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারেন।
সর্বশেষ সোমবার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ৬৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১৬ জনে পৌঁছেছে। এদের অধিকাংশই উহানের বাসিন্দা।ভাইরাসের সংক্রমণ অন্যান্য অঞ্চলে ঠেকাতে চীনা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে উহানসহ ১৬টি শহরকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এর ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রায় ছয় কোটি মানুষ। এর পরও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ২০০৩ সালের সার্স ভাইরাসে মৃতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
সে তুলনায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরাদের সংখ্যা অনেক কম। মঙ্গলবার চীনা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত তিন হাজার ৯৯৬ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন।তিন শহরে জ্বর-কাশির ওষুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা : বড় তিন শহরে জ্বর ও কাশির ওষুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন। অসুস্থরা যাতে বাড়িতে ওষুধ না সেবন করে হাসপাতালে ভর্তি হন তাই এ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার।
কেননা হাসপাতালে ভর্তি হলে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করা যাবে, যে ভাইরাস ইতিমধ্যে দেশটির সহস্রাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরভিত্তিক দৈনিক স্ট্রেইট টাইমসের অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৭ ফেব্রুয়ারি চীনের ঝেঝিয়াং প্রদেশের রাজধানী শহর হাংঝুর খুচরা বিক্রেতা ও ফার্মেসি মালিকদের ১০৬ ধরনের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়, যেসব ওষুধ মূলত জ্বর-কাশিসহ এ জাতীয় রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
হংকংয়ে টয়লেটের পাইপ দিয়ে ছড়াচ্ছে করোনা : করোনাভাইরাস মহামারীতে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। অত্যন্ত সংক্রামক হওয়ায় মানুষ থেকে মানুষে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস।ধারণা করা হচ্ছে, আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশি বা নিঃশ্বাস থেকে বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ২০১৯-এনসিওভি। সেভাবে টয়লেটের পাইপের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে- এমন আশঙ্কায় হংকংয়ের একটি আবাসিক ভবন খালি করা হচ্ছে।
সিং ই এলাকার হং মেই হাউস নামে ওই ভবনটির দু’জন বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়ার পর এ নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে হংকংয়ের খ্যাতিমান চিকিৎসক প্রফেসর কে ওয়াই ইউয়েন বলেন, মল অপসারণের পাইপলাইন এয়ার পাইপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এটা খুবই সম্ভব যে, মলের সঙ্গে থাকা ভাইরাস টয়লেটের ফ্যানের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে।
এ কারণে অতিরিক্ত সতর্কতাস্বরূপ ভবনটির কিছু অংশ খালি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা জায়গাটি পরীক্ষা করছেন।শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করেছে চীন।এদের মধ্যে হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনে কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি এবং কমিশনের প্রধান রয়েছেন। মঙ্গলবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
অনুদান ব্যবস্থাপনায় অবহেলার অভিযোগে স্থানীয় রেডক্রসের উপ-পরিচালককেও তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। হুবেইয়ের কমিউনিস্ট পার্টির দুই শীর্ষ কর্মকর্তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপ-পরিচালক ওয়াং হেশেংকে।
সূত্র- সিএনএন
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.