করোনায় নারীর চেয়ে পুরুষের মৃত্যু বেশি
করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট রোগ কোভিড–১৯ এ নারীর চেয়ে পুরুষের মৃত্যুর হার বেশি। দেশ ভেদে এ হার দ্বিগুণ–আড়াইগুণ বেশি। করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হানার শিকার দেশগুলোর মৃত্যুর হার পরিসংখ্যান করে এ তথ্য প্রকাশ করেছে জার্মান অনলাইন পোর্টাল স্ট্যাটিস্টা।
ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ও স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ডেটা, প্রাতিষ্ঠানিক ও অর্থনৈতিক খাতের ডেটা সংগ্রহ করে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে স্ট্যাটিস্টা। স্ট্যাটিস্টার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে নারীর চেয়ে পুরুষেরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে বিভিন্ন ডেটায় দেখা যাচ্ছে।নারীর চেয়ে পুরুষেরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ইউরোপের দুটি দেশ ইতালি ও স্পেন। এ দুটি দেশে নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ইতালিতে কোভিড–১৯ এ মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৯ শতাংশ নারী। স্পেনে মৃতদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৫ শতাংশ নারী। স্ট্যাটিস্টার প্রতিবেদনে আরও কয়েকটি দেশের মৃত্যুর হারে নারী–পুরুষের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, মৃতদের মধ্যে ফ্রান্সে পুরুষের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ ও নারীর সংখ্যা ৪২ শতাংশ, ইরানে ৫৯ শতাংশ পুরুষ ও ৪১ শতাংশ নারী মারা গেছে। ভাইরাসটির উৎসস্থল চীন৬৪ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ শতাংশ নারী মারা গেছে, পর্তুগালেও চীনের মতো একই সংখ্যক নারী–পুরুষের মৃত্যু হয়েছে।
জামার্নিতে মৃত্যুর হারে ৬৬ শতাংশ পুরুষ ও নারী ৩৪ শতাংশ।ইতালির মতো ডেনমার্কেও নারী–পুরুষের মৃত্যুর হারে পার্থক্য অনেক, হারও এক। সেখানে মৃতদের মধ্যে ৭১ শতাংশ পুুরুষ, ২৯ শতাংশ নারী।তবে নারীর চেয়ে পুরুষের মৃত্যুর হার বেশি কেন— এর জবাব দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, নারীদের সুস্থ, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে তাঁরা পুরুষের চেয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্ত লড়াই করতে পারছে। যদিও এসব মতামত নিয়ে যথেষ্ট বির্তক রয়েছে। জিনগত আচরণ ও হরমোন পার্থক্যও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ব্যাপারে পরিবেশগত বিষয়ও থাকতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে,যদিও নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী, এরপরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে ফেলে এমন অটোইমিউন রোগের ৮০ শতাংশের বেশি নারীদেরই হয়ে থাকে। এটার কারণ হখন একটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়,তখন অন্যান্য রোগ দেহের অন্য অঙ্গকে লক্ষ্যবস্তু করে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে ১৮৩টি দেশ ও অঞ্চলের ১২ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬৯ হাজার ৪৭৯ জনের। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে।

Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.