যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় গেল ২৫৩৫ জনের প্রাণ
বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র আজ এক অণুজীবের তাণ্ডবে নাস্তানাবুদ। টানা তিনদিন করোনাভাইরাসে মৃত্যুর রেকর্ড গড়েছে দেশটি। গত ২৪ ঘণ্টায় তার আগের দিনের ২ হাজার ২৮২ জনের মৃত্যুর রেকর্ড ভেঙেছে। এক দিনের ব্যবধানে দেশটিতে মারা গেছে আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ। একদিনে করোনাভাইরাসে যে কোন দেশে মৃত্যুর রেকর্ড এটি। গত তিনদিন ধরেই রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যু হচ্ছে দেশটিতে। এর একদি আগে ছিল ২২৮২ জন, দুই দিন আগে ছিল ২৪০৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু নিউইয়র্কেই মারা গেছে ১০২৫ জন।
চীনের উহান থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। তারপর তিন মাস পার হয়েছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সারাবিশ্ব। এর মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বস্ত অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। দিনদিন অবস্থা আরও অবনতি হচ্ছে। ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২ হাজার ৫৩৫ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ১৫৮ জন। এর মধ্যে শুধু নিউইয়র্কে মারা গেছে ১৭ হাজার ১৩১ জন। এদিকে আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে গেছে সবাইকে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৯ হাজার ৭৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৩২ হাজার ১৬৫ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৬০ হাজার ৫১০ জন।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ৬ লাখ ১২ হাজার ৭১ জন শনাক্ত রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫৬২ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। বাকি ১৩ হাজার ৫০৯ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিইউতে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা নিউইয়র্কে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২৫ জনসহ এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৭ হাজার ১৩১ জন। এবং গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৭৫৩ জনসহ আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৯৫১ জন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করোনা ভাইরাস টাস্কফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও আমেরিকার শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্টনি ফাউসি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, করোনা ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা লাখ ছাড়াবে। গত মার্চে অবশ্য এক থেকে দুই লাখ মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানায় হোয়াইট হাউস। বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২২ লাখ ৫০ হাজার ১১৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৪৯৭ জন।
এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৭ জন। সবমিলিয়ে, বর্তমানে ১৫ লাখ ২৪ হাজার ৩০১ জন শনাক্ত রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৮ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। আর ৫৬ হাজার ৯৬৩ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিইউতে রয়েছে। ভাইরাসটি চীন থেকে ছড়ালেও বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৭ লাখ ৯ হাজার ৭৩৫, মারা গেছে ৩৭ হাজার ১৫৪ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া স্পেনে আক্রান্ত ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৩৯, মারা গেছে ২০ হাজার ২ জন। ইতালিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৭২ হাজার ৪৩৪, মারা গেছে ২২ হাজার ৭৪৫ জন। ফ্রান্সে আক্রান্ত ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬৯, মারা গেছে ১৮ হাজার ৬৮১ জন।
জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৯৭, মারা গেছে ৪ হাজার ৩৫২ জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ১ লাখ ৮ হাজার ৬৯২, মারা গেছে ১৪ হাজার ৫৭৬ জন। চীনে আক্রান্ত ৮২ হাজার ৭১৯, মারা গেছে ৪ হাজার ৬৩২ জন। ইরানে আক্রান্ত ৭৯ হাজার ৪৯৪, মারা গেছে ৪ হাজার ৯৫৮ জন। তুরস্কে আক্রান্ত ৭৮ হাজার ৫৪৬, মারা গেছে ১ হাজার ৭৬৯ জন। বেলজিয়ামে আক্রান্ত ৩৬ হাজার ১৩৮, মারা গেছে ৫ হাজার ১৬৩ জন। ব্রাজিলে আক্রান্ত ৩৪ হাজার ২২১, মারা গেছে ২ হাজার ১৭১ জন। কানাডাতে আক্রান্ত ৩১ হাজার ৯২৭, মারা গেছে ১ হাজার ৩১০ জন। নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ৩০ হাজার ৪৪৯, মারা গেছে ৩ হাজার ৪৫৯ জন।
সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ২৭ হাজার ৭৮, মারা গেছে ১ হাজার ৩২৭ জন। সুইডেনে আক্রান্ত ১৩ হাজার ২১৬, মারা গেছে ১ হাজার ৪০০ জন। এছাড়া ভারতে মোট আক্রান্ত ১৪ হাজার ৪২৫ জন এবং মারা গেছে ৪৮৮ জন। পাকিস্তানে আক্রান্ত ৭ হাজার ২৫, মারা গেছে ১৩৫ জন। বাংলাদেশে আক্রান্ত ১ হাজার ৮৩৮, মারা গেছে ৭৫ জন। এ রোগের কোনো উপসর্গ যেমন জ্বর, গলা ব্যথা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি, এর কারণে স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতিও কাজ না করতে পারে তাই এগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.