চীনে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে আফ্রিকানদের!
করোনাভাইরাস বিস্তারের আশঙ্কায় চীনে আফ্রিকান শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। চীনে আফ্রিকান কূটনৈতিকরা এমন অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি, আফ্রিকানদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যেন আর না ঘটে সেজন্য কাজ করছে চীন সরকার। এমন এক সময় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে আফ্রিকান কূটনীতিকরা বলেন, তাদের নাগরিকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
এ বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধের দাবি করেছে বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশ। বিশেষ করে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াংজুতে আফ্রিকানদের প্রতি দুর্ব্যবহার ও তাদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি শহরটিতে বসবাস করা আফ্রিকান নাগরিকরা বলে আসছেন, অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বাড়িওয়ালারা তাদের উচ্ছেদ করে দিচ্ছে। বেশ কয়েকবার তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো ফল দেয়া হচ্ছে না।
আফ্রিকান শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি প্রকাশ্যেই তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যম ও সামাজিকমাধ্যমে এসব অভিযোগ উঠে এসেছে। করোনাভাইরাসের মূল মহামারী নিয়ন্ত্রণের পর বিদেশ থেকে আসা রোগীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন চীন। দেশটির সীমান্তে কঠোরতা আরোপ ও বিদেশিদের প্রতি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
তবে আফ্রিকানদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের কথা অস্বীকার করেছে চীন। হংকং থেকে আল-জাজিরার সারাহ ক্লার্ক বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের জন্য গুয়াংজুতে আফ্রিকান সম্প্রদায় দায়ী বলে একটা উদ্বেগ ছড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, আফ্রিকানদের ওপর কড়া নজরদারি চলছে। তারা আফ্রিকান ও আফ্রিকান-আমেরিকান সম্প্রদায়কে বেশি লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শহরটিতে ১১৪ জন নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬ জন আফ্রিকান নাগরিক।
এই সাংবাদিক আরও বলেন, সামাজিকমাধ্যমে আফ্রিকান সম্প্রদায়ের বহু সদস্যকে অভিযোগ করতে দেখা গেছে যে তাদের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উচ্ছেদ ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। অহরহ দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া হোটেল রেস্তোরাঁয়ও তাদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। কয়েকজন শিক্ষার্থীর দাবি, তারা রাস্তায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এমনকি তাদের খাবারও দেয়া হচ্ছে না। এসব ঘটনার কথা তুলে ধরে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই-কে চিঠি দিয়েছেন আফ্রিকান কূটনীতিকরা। এতে বলা হয়, মাঝরাতে হোটেল থেকে আফ্রিকানদের বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেন, আফ্রিকানদের ভিসা জব্দ, বাতিল, গ্রেফতার ও চীন থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। আফ্রিকানরা করোনার বিস্তার ঘটাচ্ছেন, এমন মিথ্যা অনুভূতি থেকেই তাদের প্রতি বৈষম্য ও অপবাদ দেয়া হচ্ছে।
রোববার গুয়াংজুতে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র বিষয়ক কর্মকর্তা লিউ বায়োচুন বলেন, সীমান্ত দিয়ে যারা শহরে প্রবেশ করছেন, তারা যে বর্ণ, লিঙ্গ কিংবা দেশের নাগরিক হোন না কেন, তাদের ওপর ভাইরাস প্রতিরোধী পদক্ষেপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.