যে কারণে বেত্রাঘাতের শাস্তি নিষিদ্ধ করছে সৌদি আরব!
সৌদি আরবে সাজা হিসেবে বেত্রাঘাতের বিধান নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এনিয়ে দেশটির আদালত বিশেষ রায় দিয়েছে। শুক্রবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের এ সংক্রান্ত একটি নথি দেখার কথা জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম দেশটির সর্বোচ্চ আদালত বেত্রাঘাতের বদলে অপরাধীকে কারাদণ্ড কিংবা জরিমানার সাজা দিতে বলেছে।
যে কারণে নিষিদ্ধ
সৌদি বাদশা সালমান ও তার ছেলে মোহাম্মদের আনা মানবাধিকার সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত, বলেছে তারা। সালমানপুত্র ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ সৌদি আরবের ‘ডি ফ্যাক্টো’ শাসক; দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি নারীদের গাড়ি চালানো, মাঠে গিয়ে খেলা দেখা, অভিভাবকের অনুমোদন ছাড়া পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছেন। তার হাত ধরে সাড়ে তিন দশক পর দেশটির সিনেমা হলগুলোও সচল হয়েছে।
তবে এত কিছুর পরও ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন-পীড়ন আর তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে হত্যার ঘটনা সালমানের ভাবমূর্তিতে কালি লাগিয়ে দিয়েছে, বলছে বিবিসি। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সৌদি আরবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই জায়গা হয় কারাগারে। দেশটিতে অপরাধীদের বেত্রাঘাতের সাজা দেওয়ার ঘটনাও নিয়মিতই দেখা যায়।
সাইবার ক্রাইম ও ইসলাম অবমাননার শাস্তি হিসেবে ২০১৫ সালে সৌদি আরব ব্লগার রাইফ বাদাউয়িকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাতের সাজা দিলে তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে স্থান পায়। বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং বেত্রাঘাতে রাইফের মৃতপ্রায় হয়ে পড়ার খবর জানাজানি হলে ওই সাজা রহিত হয়। পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, বমূর্তি ঠিক করতে সৌদি আরব বেত্রাঘাতের সাজা তুলে নেওয়ার কথা ভাবলেও ভিন্নমতাবলম্বী এবং নারী অধিকারের জন্য আন্দোলনকারীদের ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও নির্যাতন কমেনি।
শুক্রবারও দেশটির কারাগারে খ্যাতনামা এক শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হলেও সহকর্মীরা বলছেন,ওই বিশিষ্ট ব্যক্তি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় অবহেলার কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুর দায় সৌদি শাসকদের।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.