চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর সন্তান প্রসব, নাম রাখা হলো করোনা!
ঢাকার ধামরাইয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী (১৩) কন্যা সন্তান প্রসব করেছে। রোববার বিকালে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ওই স্কুলছাত্রীর কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ওই কন্যা সন্তানের নাম রাখা হয়েছে ‘করোনা আক্তার’। তবে ওই স্কুলছাত্রীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ওই স্কুলছাত্রীর চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন ধামরাই উপজেলার কাওয়ালীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. রাসেল মোল্লা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের মুন্সিচর গ্রামে। পুলিশ ধর্ষককে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ৩০ জুলাই ওই স্কুলছাত্রী প্রতিবেশী চৌহাট ইউনিয়নের মুন্সীচর গ্রামের মোকছেদ আলী (৫৫) মাতব্বরের বাড়িতে টিভি দেখতে যায়।
এ সময় ওই বাড়িতে কোনো লোকজন না থাকায় সুযোগে মোকছেদ আলী মাতব্বর ওই স্কুলছাত্রীকে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর বিষয়টি গোপন রাখার জন্য তাকে হুমকি দেয়া হয়। এরপর ওই স্কুলছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ওই মাতব্বর। মাস তিনেক পরে ওই স্কুলছাত্রী বারবার বমি ও খাবারে অরুচি হলে ঘটনাটি পরিবারের লোকজনের কাছে ফাঁস হয়ে যায়। ওই স্কুলছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার ওপর পাশবিকতার ঘটনাটি বর্ণনা করে। এরপর এ ব্যাপারে গ্রাম হিতৈষীদের নিয়ে গ্রাম্য সালিশি বৈঠক বসা হয়।
এতে ধর্ষক ওই মাতব্বর গ্রাম্য সালিশি বৈঠক না মানায় গত বছরের ২৫ অক্টোবর ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ধামরাই থানায় এই ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, পরবর্তীতে ২১ মার্চ সকাল ১১টায় ধর্ষক ওই মাতব্বর মোকছেদ আলী আমতা ইউপি সদস্য মো. ফারুক হোসেনের সহায়তায় এক গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদানের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।
তবে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার এই বিষয়টিতে সম্মত হয়নি। রোববার সকালে ওই স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন বিষয়টি কাওয়ালীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. রাসেল মোল্লাকে অবহিত করে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এরপর তার সিজারের ব্যবস্থা করেন। বিকাল ৫টার দিকে তার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এ ব্যাপারে ওই স্কুলছাত্রীর পিতা বলেন, রাসেল স্যার না থাকলে আমার মেয়েকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। সোমবার দুপুরে এ ব্যাপারে পরিদর্শক রাসেল মোল্লা বলেন, যা করেছি মানবিক কারণে করেছি। কারণ ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার খুবই দরিদ্র। কাজেই তার যাবতীয় খরচ আমিই বহন করেছি। ধর্ষককে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.