অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে লকডাউন খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা জানালেন ট্রাম্প
নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতিকে চালু রাখতে হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য একটা ছাড়া অন্যটার সুরক্ষা সম্ভব নয়। দীর্ঘদিনের লকডাউন অর্থনীতিতে মন্দা ডেকে আনবে। যা ব্যাপকভাবে জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এমনটা মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন , এক এক ধাপ করে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লকডাউন খুলে দেওয়ার জন্য ১৬ এপ্রিল একটি নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
নিজ নিজ বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে অঙ্গরাজ্য গভর্নরদের লকডাউন খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সবগুলো অঙ্গরাজ্যকে জরুরি অবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হয়। কার্যত পুরো আমেরিকার অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য বন্ধ হয়ে আছে। সীমিত পরিসরে সেবা খাত, গ্রোসারি স্টোর, খাবারের দোকানসহ জরুরি ব্যবসা-বাণিজ্য শুধু চালু আছে। হোয়াইট হাউসের নির্দেশনা অনুসরণ করে কোনো কোনো অঙ্গরাজ্য এক দিন পরই খুলে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি মন্টানা , ওয়াইমিং , নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, এসব অঙ্গরাজ্যের অবস্থা নিউইয়র্কের মতো নয়।
৫০টির মধ্যে ২৯টি অঙ্গরাজ্য পর্যায়ক্রমে লকডাউন তুলে দেওয়ার পর্যায়ে আছে বলে ট্রাম্প মনে করেন। আমেরিকার সংক্রমণ রোগের অন্যতম শীর্ষ চিকিৎসক ও টাস্ক ফোর্সের সদস্য ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন, লকডাউন উঠিয়ে দেওয়া হলেও খেল খতম মনে করার কোনো কারণ নেই। গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মতো পরিস্থিতিতে আমরা সহজে ফিরে যাচ্ছি না। একধরনের নতুন স্বাভাবিকতা নিয়ে নিজেদের সুরক্ষা করে যেতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের ২১ লাখ ৫৭ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় রেকর্ডসংখ্যক ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৩ হাজার ৩০০ জন।
করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজারের বেশি মানুষ নিউইয়র্কে মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২৬ হাজার। কানেকটিকাট থেকে নির্বাচিত প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ক্রিস মারফি বলেছেন, চীন নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও নয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই আমেরিকার আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী। সিএনএনের কাছে দেওয়া বক্তব্যে সিনেটর মারফি বলেছেন, ট্রাম্প আগে থেকে করোনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলে আমেরিকায় ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব হতো। বিশ্ব সভ্যতার চরম এই সঙ্কট রাষ্ট্র নেতাদের ভাবনায় পরিবর্তন আনতে বাধ্য করছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ করোনা মোকাবেলায় বিশ্ব শান্তির সন্ধি করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই শান্তির সন্ধিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সঙ্গে পাবেন বলে জানিয়েছেন।
এ নিয়ে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৫ এপ্রিল শিল্পোন্নত দেশের জোট জি-৭ নেতাদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, 'কেউ আমাদের বিষয়টি (করোনা) জানায়নি। তাঁরা জানেন এবং এ নিয়ে তাঁরা কথা বলেননি। কেন তাঁরা এসব বলেননি?' ট্রাম্প বলেছেন, 'আমরা এসব তলিয়ে দেখব।' চীনের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, সারা বিশ্বকে এ বিষয়টি জানানো উচিত ছিল।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.