কিমের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাল চীন
কিম জং-উনকে পরামর্শ দিতে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞসহ একটি টিমকে উত্তর কোরিয়ায় পাঠিয়েছে চীন। বিষয়টি অবগত এমন লোকদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এই তথ্য জানা গেছে।
উত্তর কোরীয় নেতার স্বাস্থ্য নিয়ে পরস্পর-বিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশের পর চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের একটি দলকে পাঠাল চীন। তবে তাদের এই সফর কিমের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কিনা; তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স। প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক সংযোগ বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য।
উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশে বৃহস্পতিবার তার বেইজিং ছেড়েছেন। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় সূত্র নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে চায়নি। এ নিয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। খবরে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের হার্টে অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর নিজ বাড়িতেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কর্মকর্তাদের বরাতে মার্কিন গণমাধ্যমের দাবি, চিকিৎসাধীন থাকার পর উত্তর কোরীয় নেতার স্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। কিমের অস্ত্রোপচারের ঘটনা সত্যি হলে, ডেইলি এনকে ওয়েবসাইটের দাবি অনুসারে, তার দাদা ও দেশটির প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সুংয়ের জন্মবার্ষিকের অনুষ্ঠানে তার অনুপস্থিত থাকার একটি ব্যাখ্যাও সামনে চলে আসবে। গত ১২ এপ্রিল দেশটির পূর্ব উপকূলীয় হায়াংসান কাউন্টিতে একটি হাসপাতালে কিমের অস্ত্রোপচার হয়েছে।
সিউলভিত্তিক ডেইলি এনকে নামের যে ওয়েবসাইট এমন খবর দিয়েছে, সেটি উত্তর কোরিয়ার পক্ষত্যাগীরা চালাচ্ছে। খবরে বলা হয়, বর্তমানে মাউন্ট কুমগ্যাং রিসোর্টের একটি বাড়িতে ৩৬ বছর বয়সী এই রাষ্ট্রপ্রধান চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিবেদনে অজ্ঞাতনামা সূত্রের বরাত দেয়া হয়েছে। এছাড়া এতে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য নেই এতে। আন্তঃসীমান্ত বিষয়াদি নিয়ে কাজ করা দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
আর মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের খবরে এ বিষয়ে সরাসরি অবগত মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতের উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনও বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে। অস্ত্রোপচারের পর মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কিম জং-উন। কিন্তু সিএনএনের প্রতিবেদনকে উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার খবরাখবর রাখা দক্ষিণ কোরিয়ার এক কর্মকর্তা।
ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে কিমকে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। এতে তার স্বাস্থ্যহানির বিষয়ে কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ভবন ব্লু হাউস জানায়, উত্তর কোরিয়ায় কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা তাদের নজরে আসেনি। ডেইলি এনকের খবর বলছে, ব্যাপক ধূমপান, স্থূলতা ও অতিরিক্ত কাজের দরুন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কিমের স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
সেখানকার এক সূত্র জানায়, আমার মনে হচ্ছে, গত আগস্ট থেকে তিনি কার্ডিওভাসকুলার সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু পেকটু পাহাড়ে কয়েকবার ভ্রমণের পর তা আরও গুরুতর হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে পেকটু পাহাড়ের বন ও তুষারে ঢাকা মাঠে কিমের সাদা ঘোড়ায় চড়া অবস্থায় একটি ছবি প্রকাশ করেছিল উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ।
খবর অনুসারে, গত ১১ এপ্রিল ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর একটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করার পর হাসপাতালে ভর্তি হন কিম। এরপর গত সপ্তাহের পিয়ংইয়ংয়ের স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সময়ও তাকে দেখা যায়নি। এমনকি কিম ইল-সুংয়ের আড়ম্বরহীন জন্মবার্ষিকী উদযাপনেও তাকে দেখা যায়নি।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.