চীনে কমে গেলেও ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছেই। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছে চীন। গত সোমবার সকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি ঘোষণা দেয়, দেশটির ১৩টি প্রদেশে কভিড-১৯ কোনো রোগীর সন্ধান মেলেনি। নতুন করেও আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন চীনা গবেষকরা। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন এক তথ্য। সেখানে জানানো হয়, মারাত্মক ছোঁয়াচে এই রোগের সঙ্গে মানুষের রক্তের গ্রুপের একটি যোগসূত্র রয়েছে। চীনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ‘এ- পজেটিভ’ ও ‘এ- নেগেটিভ’ গ্রুপধারীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এবং সংক্রমিত হওয়ার ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে আছেন ‘ও-পজেটিভ’ ও ‘ও-নেগেটিভ’ রক্তের গ্রুপধারীরা।
চীনের গবেষকদের একটি গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। সম্প্রতি করোনার আঁতুড়ঘর উহান ও পরে শেনঝেনের ২ হাজার আক্রান্তের রক্ত পরীক্ষা করে উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের গবেষকরা। এতে দেখা যায়, বেশিরভাগ করোনারোগী ‘এ- পজেটিভ’ ও ‘এ- নেগেটিভ’ গ্রুপধারী। আর ‘ও-পজেটিভ’ ও ‘ও-নেগেটিভ’ রক্তের গ্রুপধারীদের সংখ্যা ওই ২ হাজার রোগীর মধ্যে সংখ্যায় কম। ওই গবেষণার শেষে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ২০৬ জনের রক্তের গ্রুপ যাচাই করেন বিজ্ঞানীরা। তারা দেখতে পান, ওই ২০৬ জনের মধ্যে ৮৫ জন ‘এ’ গ্রুপের রক্তধারী আর ৫২ জন ‘ও’ গ্রুপের। পরিসংখ্যান বলছে, ‘এ’ গ্রুপের রোগীরদের মৃতের হার ‘ও’ গ্রুপের রোগীদের চেয়ে ৬৩ শতাংশ বেশি। গবেষণালব্ধ ফলাফল জানিয়ে গবেষক দলের প্রধান ওয়াং জিংহুয়ান বলেন, আমরা এটাই দেখেছি, একেক গ্রুপের রক্তের গ্রুপের রোগীর ওপর করোনা একেকরকম প্রভাব ফেলে। সেখানে দেখা গেছে, ‘এ’ গ্রুপের রক্তধারীরা সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন আবার মারাও পড়ছেন। অন্যদিকে ‘ও’ গ্রুপের রক্তধারীদের জন্য করোনা ঝুঁকি অনেকটাই কম। তিনি বলেন, গবেষণাটি এখনও অসমাপ্তই। কারণ আমরা এখনো জানি না কী কারণে বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের করোনার প্রভাব বিভিন্ন আর তা জানতে পারলেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের লাগাম টানা যাবে। তবে এখন পর্যন্ত গবেষণার সুফল দিক হচ্ছে ‘এ’ গ্রুপধারীদের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে বাড়তি সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.