লকডাউনে অবরুদ্ধ পর্যটকদের সহায়তা করছেন কাশ্মীরিরা
হঠাৎ করে লকডাউন ঘোষণা করায় ভারতের কাশ্মীরে বেড়াতে যাওয়া অনেক পর্যটক বিপাকে পড়েছেন। বেড়াতে গিয়ে লকডাউনের ফাঁদে পড়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আটকেপড়া পর্যটকদের সঙ্গে আনা টাকা-পয়সা ফুরিয়ে যাওয়ায় অনেকে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খবর এনডিটিভির। সমস্যায় পড়ে যাওয়া এসব পর্যটকের পাশে দাঁড়িয়েছেন কাশ্মীরিরা।
পাশাপাশি পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোও বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত। পশ্চিমবঙ্গ থেকে জম্মু-কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিল ১৪ সদস্যের একটি পরিবার। এর পরই কোভিড-১৯ সংক্রমণের মোকাবেলায় শুরু হয়ে যায় ভারতব্যাপী লকডাউন। পরিস্থিতির শিকার হয়ে ওই পর্যটকদের আটকে থাকতে হয় হোটেলে। এভাবে কেটে গেছে এক মাসেরও বেশি সময়। ফুরিয়েছে টাকা-পয়সা। ১৪ সদস্যের ওই পরিবারে রয়েছেন ছয় নারী ও চার শিশু।
গত ১৫ মার্চ তারা জম্মুতে পৌঁছান। ৩০ মার্চ ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু চমৎকার ছুটি কাটানোর সব পরিকল্পনা মাঠে মারা যায় ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী লকডাউনে। বারাসতের নবপল্লীর বাসিন্দা ৪৮ বছরের অরিজিৎ দাস বলেন, আটকে থাকা ব্যক্তিদের ফেরার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। এই খবরে বিরাট স্বস্তি পেয়েছি। এখানে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকতে হয়েছে আমাদের। আর কোনো দেরি না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাই।
জম্মুর বাসিন্দাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কোনো ভাষা নেই অরিজিতের। অকুণ্ঠ চিত্তে জানালেন, তাদের জন্যই এখনও বেঁচে আছি আমরা।' তিনি বলেন, সব টাকা-পয়সা ফুরিয়ে গিয়েছিল। গত এক মাস অন্যদের সাহায্যে বেঁচে থাকতে হয়েছে। এ অবস্থায় তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানান তাদের এখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ১ এপ্রিলের মধ্যে তাদের সব টাকা-পয়সা ফুরিয়ে যায়।
কিন্তু হোটেলের মালিক ছিলেন এক সদাশয় মানুষ। তিনি হোটেলের রান্নাঘরটি তাদের ছেড়ে দেন। বলেন, নিজেদের মতো করে রান্না করে নিতে। এখানেই শেষ নয়, এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। চাল, বিস্কুট ও চা দিয়ে সাহায্য করেন তারা। এ ছাড়া সমাজকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং আরও অনেকে মিলে সাহায্য করেন তাদের। আপাতত বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় বারাসতের পরিবারটি। কবে সরকার সাহায্য করে, সেই প্রতীক্ষাতেই দিন কাটছে তাদের।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.